দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বুধবার দুপুরে নীতীশ অষ্টম বার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর ২০২৪-এ নরেন্দ্র মোদীর মোকাবিলায় বিরোধীদের জোটবদ্ধ হওয়ার ডাক দিলেন নীতীশ কুমার ৷ বললেন, যারা ২০১৪-তে ক্ষমতায় এসেছিল, তারা কি ২০২৪-এও বিজয়ী হবে? আমি চাই ২০২৪-এর জন্য সমস্ত বিরোধী দল জোট বাঁধুক।’ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী সেই সঙ্গে বলেছেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী পদের প্রতিযোগিতায় নেই।’

কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ হল, কংগ্রেসের সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী এবং অবিজেপি-অকংগ্রেস শিবিরের হাতেগোনা কয়েকজন নেতা বাদে নীতীশের কথায় প্রতিক্রিয়া দেওয়া দূরে থাক, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নতুন যাত্রা শুরু নিয়ে কেউ শুভেচ্ছাও জানাননি। তবে নীতীশকে শুভেচ্ছা এবং তাঁর জোট বার্তাকে স্বাগত জানিয়েছেন তামিললাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন।

কংগ্রেসের বাইরে বিজেপি বিরোধী শিবিরের মধ্যে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার বলেছেন, বিজেপি সব আঞ্চলিক দলকে গিলে খাচ্ছে। নীতীশ কুমার আগেভাগে সতর্ক হওয়ায় বেঁচে গেলেন। কিন্তু তিনিও নীতীশের বিরোধী জোটের ডাক নিয়ে রা কাড়েননি।

সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব গতকালই নীতীশকে সাধুবাদ দেন বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করায়। তবে তিনিও নীতীশের আজকের আহ্বান নিয়ে নীরব। মুখ খোলেনি তৃণমূল কংগ্রেস, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি, আপ, শিবসেনা, বিএসপির মতো পার্টি।

২০২৪-এর লোকসভা ভোটে মোদীর বিরুদ্ধে বিরোধী মুখ কে হবেন তা নিয়ে নানা মহলে আলোচনা চলছে। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে জানিয়ে দিয়েছেন, ভোটের আগে কোনও জোট হবে না। বস্তুত, কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে অতীতে কোনও জোটই ভোটের আগে হয়নি। ফলে বিরোধী মুখের বিষয়টি প্রাসঙ্গিক নয়, এমন বার্তাই দিতে চেয়েছেন।

যদিও তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির নেতা তথা তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালরা মোদীর বিরুদ্ধে নিজেদের তুলে ধরতে প্রস্তুত হচ্ছেন। সম্ভবত, সেই কথা মাথায় রেখেই নীতীশ আজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রিত্বের লড়াইয়ে তিনি নেই।

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী মুখে একথা বললেও, রাজনৈতিক মহল মনে করে নীতীশ পাখির চোখ করেছেন লালকেল্লা। ২০২৪-এর ১৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসাবে লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা তোলার বাসনা তাঁর। আর তাতে বিরোধী শিবিরের মুখ হিসাবে নীতীশ যে বাকিদের থেকে এগিয়ে থাকবেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তাঁর দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তেমন কোনও বড় অভিযোগ নেই। তাঁর বিরুদ্ধে তো নেই-ই।

ফলে ভাবমূর্তির প্রশ্নে তিনি বাকিদের থেকে অনেকটা এগিয়ে থাকবেন। একইভাবে এগিয়ে থাকবেন জোট সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা এবং বিহারে ১৭ বছর বিজেপির সঙ্গে ঘর করেও তাদের সরকার গড়ার ছক ভেস্তে দেওয়ার কৌশলে। হিন্দি বলয়ের নেতা হওয়াটাও তাঁর জন্য বাড়তি সুবিধা বলে মনে করছেন অনেকেই। নীতীশের এই সব বাড়তি সুবিধার কারণেই কি অবিজেপি-অকংগ্রেস শিবিরের নেতা-মুখ্যমন্ত্রীরা খানিক মুষড়ে পড়েছেন, এমন প্রশ্ন ঘোরাঘুরি করছে রাজনৈতিক মহলে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here