দেশের সময় কলকাতা : বনগাঁ থেকে দুবাই। অল্প কয়েক বছরেই শঙ্কর আঢ্য ওরফে ডাকুর বিশাল সাম্রাজ্য বিস্তার কীভাবে? কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। কীভাবে হল? রহস্য এখানেই!

তাঁর ব্যবসার লেনদেনের অঙ্ক দু’-এক কোটিতে থামেনি। প্রভাবশালীদের হাজার হাজার কোটি টাকা তাঁর সংস্থায় ঢুকেছে আর তার পর বিদেশি মুদ্রা হয়ে পাড়ি দিয়েছে বিদেশে।

বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর এমনই কালো টাকা বদলানোর ব্যবসা ফেঁদে বসেছিলেন বলে সন্দেহ ইডির।

যে পরিষেবার অন্যতম গ্রাহক ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সেই ‘ডাকু’ শঙ্করকেই সোমবার হাজির করানো হবে আদালতে।

গত ৫ জানুয়ারি শঙ্করের বনগাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বহু ফোরেক্স সংস্থার নথি পাওয়া গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে ইডি সূত্রে। এ-ও জানা গিয়েছে, নয় নয় করে সেই সব সংস্থায় ২০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৯-১০ হাজার কোটি টাকা একা রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় তথা বালুরই। ইডির ধারণা, বালু ছাড়াও আরও প্রভাবশালীর বেআইনি টাকা শঙ্করের সংস্থার মাধ্যমে বিদেশিমুদ্রায় বদলে পৌঁছে গিয়েছে বাংলাদেশ অথবা দুবাইয়ে।

গোটা বিষয়টি যেমন ইডি আধিকারিকদের স্ক্যানারে, তেমনই বনগাঁর মানুষের মধ্যেও এনিয়ে চর্চার শেষ নেই। ডাকুর বিরুদ্ধে পূর্ত দফতরের জলাজমি ভরাট করে বেআইনিভাবে হোটেল তৈরির অভিযোগ উঠেছে আগেই। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের জমিতে বেআইনিভাবে ভবন তৈরি করে তা লিজ দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া জোর করে জমিবাড়ি লিখিয়ে নেওয়া, বেনামে দিঘায় হোটেল চালানো, ভুয়ো মুদ্রা বিনিময় সংস্থা এসব অভিযোগও সামনে এসেছে ইতিমধ্যেই।

বনগাঁর প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য কতটা গভীরে ছড়িয়েছিলেন দুর্নীতির শিকড়? এখন সেটাই খুঁজে বের করতে মরিয়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। রেশন দুর্নীতির তদন্তে ইতিমধ্যেই ডাকুর গোটা পরিবার ইডির স্ক্যানারে। 

বনগাঁর এই প্রাক্তন তৃণমূল চেয়ারম্যানের মা, মেয়ে এবং তাঁর ভাইয়ের স্ত্রীকে ডেকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন ইডি কর্তারা। তাতে বেশকিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি ইডির।

কেন্দ্রীয় এজেন্সির অনুমান, শুধু শঙ্কর আঢ্য নন, তাঁর গোটা পরিবারই রেশন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। সেকারণেই পরিবারের সদস্যদের তলব করা হয়েছে। কিন্তু কীভাবে সেই দুর্নীতি হয়েছে, এখন সেই তথ্য প্রমাণ হাতে পেতেই মরিয়া তদন্তকারী সংস্থার কর্তারা। যদিও শঙ্কর আঢ্যর পরিবারের দাবি, গোটাটাই চক্রান্ত। কোনওরকম দুর্নীতির সঙ্গে তারা যুক্ত নন। তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। শঙ্কর আঢ্যকেও ফাঁসানো হচ্ছে। তদন্তে তারা পুরোপুরি সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

আদালতে শঙ্করের হাজিরা
আজ আদালতে শঙ্করের বিরুদ্ধে নতুন কী নথি পেশ করতে চলেছে ইডি? সে দিকে নজর থাকবে। একই সঙ্গে নজরে থাকবে শঙ্করের সংস্থার নথি ঘেঁটে ইডি অন্য কোনও প্রভাবশালীর নাম জানতে পারল কি না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here