দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মঙ্গলবার মধ্যপ্রদেশের উজ্জ্বয়িনী শহরে পা রাখতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।মহাকালেশ্বর মন্দির করিডোরের (Mahakaleshwar Temple Corridor) প্রথম পর্যায়ের (first phase) উদ্বোধন (inauguration) করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী (PM) নরেন্দ্র মোদী (narendra modi)। ১১ অক্টোবরের ওই অনুষ্ঠান ঘিরে এই মুহূর্তে তুমুল ব্যস্ততা উজ্জয়িনীতে ৷

সেখানে মহাকালেশ্বর মন্দিরের করিডর প্রকাশ্যে আনবেন তিনি। প্রায় ৮৫৬ কোটি টাকা লেগেছে এই করিডর তৈরি করতে। ভারতের সবথেকে লম্বা এই করিডরের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০০ মিটার। দেশের ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একটি হল এই মহাকালেশ্বর। পুরো মন্দিরটিকে নতুন করে সাজানোর পাশাপাশি রুদ্রপ্রসাদ লেকটিকেও নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতে, নতুন করে এই মন্দির সাজানোর ফলে দেশের পর্যটন শিল্পের অনেকটাই উন্নতি হবে। নতুন এই মহাকাল লোকে নতুন দুটি দরজা থাকছে যার নাম নন্দী দ্বার এবং পিনাকি দ্বার। লম্বা এই করিডর দিয়ে হেঁটে গেলে সোজা প্রবেশ করা যাবে মন্দিরে। করিডরকে সাজিয়ে তুলতে ব্যবহার করা হয়েছে পাহাড়পুরের স্যান্ডস্টোন। পাশাপাশি গুজরাট, ওড়িশা থেকেও পাথর নিয়ে গিয়ে সাজানো হয়েছে এই করিডরকে। দু’দিকের দেওয়ালে উল্লেখ থাকবে শিব এবং পুরাণের বিভিন্ন ঘটনা।

গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা, পার্ক, ফোয়ারা এবং লাইট সাউন্ড শো করার চিন্তাভাবনা করছে রাজ্য সরকার। তবে সেই কাজ এখনও শেষ হয়নি। জানা গিয়েছে, ঐতিহাসিক রুদ্রসাগর লেকটিকে রেখেই এই শোয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, উজ্জয়িনী পুলিশ লাইনের একাধিক হেলিপ্যাডের মধ্যে একটিতে প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামতে পারে। সেই মতো প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যে হেলিপ্যাডে কপ্টার নামবে, তার পরিসর যতটা বাড়ানো সম্ভব ততটাই বাড়ানোর চেষ্টা করছে মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিংহ চৌহানের প্রশাসন।

এখনও পর্যন্ত যা নির্ঘণ্ট তাতে ১১ অক্টোবর সন্ধেয় ইন্দোরের হেলিপ্যাডে অবতরণ করবেন নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকে উজ্জয়িনীর দিকে হেলিকপ্টার করে রওনা দেওয়ার কথা তাঁর। তার পর ‘মোটরকেড’ করেই মন্দির চত্বরে যাবেন। সেই মতো যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ওই দিন, ঠিক সন্ধে ৬টার সময় ‘মহাকাল বাবার’ উদ্দেশে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ উৎসর্গ করবেন মোদী। সে দিন ঘণ্টাদুয়েক উজ্জয়িনীতে থাকার কথা তাঁর।

গত মাসে এই উদ্বোধনের ঘোষণা করেছিলেন শিবরাজ সিংহ চৌহান। তার পরেই প্রকল্পের খুঁটিনাটি নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়। মহাকাল করিডোরের কাজ দুটি ধাপে করা হচ্ছে। বর্তমানে এই মন্দির চত্বরের যা আয়তন, প্রকল্পটির রূপায়ণের পর তার আট গুণ বেড়ে দাঁড়াবে বলে দাবি প্রশাসনের।

এই মুহূর্তে ২.৮২ হেক্টর এলাকা জুড়ে রয়েছে মন্দির চত্বরটি। ২০২৩ সালের মধ্যে ওই এলাকা গিয়ে পৌঁছবে ২০.২৩ হেক্টরে। প্রথম ধাপে থাকছে ৯০০ মিটার লম্বা একটি করিডোর। অগুনতি স্থাপত্য থাকার কথা সেখানে। থাকবে থিম-পার্ক, ই-ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা, হেরিটেজ মল ইত্যাদি। দ্বিতীয় পর্যায়ে মহারাজওয়াড়া স্কুল ভবনকে ঐতিহ্যবাহী ধর্মশালায় রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এছাড়া আরও বেশ কিছু পরিকল্পনা রূপায়ণের নকশা তৈরি করছে তারা। যেমন শিপ্রা নদী ও রুদ্র সাগরের সংযোগস্থন নির্মাণ, হ্রদের সামনের অংশের সৌন্দর্যায়ন, বহুস্তরীয় পার্কিং ব্যবস্থা যেখানে অন্তত সাড়ে তিনশো গাড়ি রাখার জায়গা থাকবে।

এছাড়া একটা রেলওয়ে আন্ডারপাস ও রুদ্রসাগরের উপর ২১০ মিটার লম্বা ঝুলন্ত সেতুও বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। রামঘাটের কাছে চোখধাঁধানো ‘লাইট শো’-র ব্যবস্থাও করা হবে, খবর সরকারি সূত্রে। এই পর্যায়ের কাজ শেষ হতে ২০২৮ সাল পর্যন্ত সময় লাগার কথা। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here