রিয়া দাস , বনগাঁ: চারপাশে গাঢ় অন্ধকার, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক গোটা জঙ্গল জুড়ে। হাড় হিম করা পরিবেশে মশাল হাতে সঙ্গী-সহ জঙ্গল সফর। মাঝরাতে মশাল হাতে ভাঙাচোরা রাস্তা, প্রতি ইটে শ্যাওলা ধরা৷ এক বাড়িতে আস্তানা।ঘরের ভিতরেই চোখের সামনে থেকে উড়ে যাচ্ছে পায়রা। জোনাকির আনাগোনা ঘরময়। কাল্পনিক মনে হলেও ইচ্ছে হলে এরকম পরিবেশ হতেই পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য।

এই গা ছমছমে পরিবেশে রাত কাটাতে হলে পৌঁছে যেতে হবে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার মঙ্গলগঞ্জ নীলকুঠি এলাকার ঘন জঙ্গলে। সেখানে পর্যটকদের জন্য তৈরি বাঁশের কুটিরে ব্যাগ পত্তর রেখে রাত বাড়তেই মশাল হাতে শুরু করতে হবে জঙ্গল সফর। সেখানেই রয়েছে নীলকুঠি। ভৌতিক অনুভূতি জন্য এই এই নীলকুঠি এখন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে। দেখুন ভিডিও

বনগাঁর বিভুতিভূষন অভয়ারণ্যের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ইছামতী নদী৷ নদীর এপারে নাটাবেড়িয়া পঞ্চায়েতের মঙ্গলগঞ্জেই রয়েছে এই পরিত্যক্ত নীলকুঠি। গোবরডাঙ্গার জমিদার লক্ষণচন্দ্র আইচ ব্যবসা করবার জন্য কয়েকশো বছর আগে তৈরি করে ছিলেন নীলকুঠি। পরবর্তীকালে নীলকর সাহেবরা কুঠির দখল নিয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নীলকুঠিতেই নীল চাষীদের উপর নির্মম অত্যাচার করত নীলকর সাহেবরা।

তারপর দেশ স্বাধীন হয়েছে, ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটেছে। বর্তমানে জমিদারের বংশধর হেনা চৌধুরির তত্ত্বাবধানে রয়েছে ওই সম্পত্তি। স্থানীয় মহঃ আসিফ জানান, “প্রায় ৬৪ বিঘা জমি রয়েছে ওই নীলকুঠি এলাকায়। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কুঠি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দেখে পরবর্তীকালে এক পর্যটক ঘুরতে গিয়ে নীলকুঠিরটি মেরামত করার চেষ্টা করেছিলেন৷ তবে এখন বহু মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন” ৷

জঙ্গলের বাঁশের কুটির গুলিতেই রয়েছে রাতে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা৷ জানা গিয়েছে, পর্যটকদের জন্য বেসরকারি উদ্যোগে বাঁশের কুঠিরগুলি তৈরি করা হয়েছে। কুটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি বলেন, “এখনে এক বার এলে আবার আসতেই হবে।” তাই সপ্তাহান্তের ছুটিতে ভৌতিক পরিবেশের স্বাদ পেতে আপনাকে পৌঁছতেই হবে মঙ্গলগঞ্জে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here