Mamata Banerjee on Abhishek Banerjee : ‘অভিষেককে গ্রেফতার করব, একজন মেসেজ করেছেন’, মমতার মন্তব্যে জল্পনা তুঙ্গে

0
490

দেশের সময়, কলকাতা: লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডসে ইডির তল্লাশি এবং তাদের কম্পিউটারে ফাইল ডাউনলোড করার প্রসঙ্গে মেয়ো রোডের জনসভা থেকে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজেই জানালেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বার্তা এসেছে তাঁর ফোনে। সেই প্রসঙ্গে বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে একযোগে আক্রমণ করেছেন মমতা।

কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে এই অভিযোগ বারবার করেছে তৃণমূল। বিভিন্ন ইস্যুতে সরবও হয়েছেন তাঁরা। তবে সোমবার বিস্ফোরক দাবি করলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। বললেন যে কেউ তাঁকে মেসেজ পাঠিয়ে বলেছেন লোকসভা ভোটের আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হবে। কিন্তু কে তাঁকে এই মেসেজ করেছেন সে কথা প্রকাশ্যে আনেননি মুখ্যমন্ত্রী।

এ দিন তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “কালকে আমাকে একজন মেসেজ দিয়েছে। অভিষেককে ভোটের আগে গ্রেফতার করব। এই নিয়েই লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তল্লাশির কথাও তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, “আমি অনেক সরকার দেখেছি কিন্তু এরকম প্রতিশোধস্পৃহামূলক সরকার দেখিনি।” তারপর বলেন, “ওঁরা নিজেরা ইচ্ছে মতো অভিষেকের অফিসে ঢুকেছে। কাউকে কিছু বলার প্রয়োজন মনে করেননি। নিজের ইচ্ছামতো ঢুকে গিয়ে, যা খুশি করছে। অভিষেকের কম্পিউটার থেকে সব ফাইল বের করে নিয়েছে।

তারপর নিজেরা কতগুলি ফাইল তৈরি করে নিয়ে গিয়েছে। আর সেগুলো ওখানে ভরে দিয়েছে। তোমরা যদি কম্পিউটার ওস্তাদ হও। তাহলে আমরাও মাস্টার। আমরা সব বের করে নিয়েছি একেবারে টাইম ধরে, যে এগুলো তোমরা ঢুকিয়েছ। ওদের কম্পিউটারে এগুলো ছিল না।” এখানেই থেমে থাকেননি মমতা। ইডি-র তল্লাশির পর অফিসে কম্পিউটারে অজানা ১৬টি ফাইল দেখতে পাওয়া যায় বলে দাবি করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এরপরই লালবাজারের সাইবার পুলিশের দ্বারস্থ হন লিপস অ্যান্ড বাউন্সের কোম্পানির কর্মীরা। সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “যে রিপোর্ট লিখেছে, তাঁকেও বলছে গ্রেফতার করব। হ্যাঁ সবাইকে গ্রেফতার করে নাও তোমরা।”

এ দিন আজ অভিষেক বলেন, “আমাদের ধমকে-চমকে লাভ নেই। আপনারা তো দেখেছেন, আমি যেদিন এসেছি, পরের দিন ইডিকে পাঠিয়ে দিয়েছে রেড করতে। ইডি রেড করতে গিয়েছে, সেখানে আমার অফিসে গিয়ে রেড করেছে। তার সঙ্গে সঙ্গে ১৬টি ফাইল একটা কম্পিউটারে ডাউনলোড করে দিয়ে চলে এসেছে।”

এই বিষয়ে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য যদিও বলেছেন, “প্রতিহিংসার রাজনীতি বিজেপি করে না। তৃণমূল করে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন দীর্ঘদিনের রাজনীতিক। তদন্ত কোন পথে চলেছে, সেটা তিনি বুঝতে পেরেছেন। গলি থেকে রাজপথ, যেটা নিয়ে মানুষ আলোচনা করছে, মুখ্যমন্ত্রী আজ সেটাই বলেছেন।”

গত সোমবার নিয়োগ মামলায় ধৃত ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত তিনটি এলাকায় তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। আলিপুরে লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস নামের একটি সংস্থার দফতরেও যান ইডি আধিকারিকেরা। এই সংস্থায় সুজয়কৃষ্ণ একসময় উচ্চ পদে কাজ করতেন বলে দাবি ইডির। সংস্থায় প্রায় ১৮ ঘণ্টা তল্লাশি চালানো হয়। ইডি চলে যাওয়ার পর সংস্থার এক কর্মী চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ইডি তাঁদের কম্পিউটারে ১৬টি অচেনা মাইক্রোসফ্‌ট এক্সেল ফাইল ডাউনলোড করে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের অফিসে যান লালবাজারের তদন্তকারীরা। দু’টি কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করা হয়।

এর পরেই ইডি লালবাজারে লিখিত ভাবে জানিয়েছিল, তাদের এক আধিকারিক তল্লাশি চালাতে গিয়ে সংস্থার কম্পিউটার থেকে নিজের কন্যার কলেজের হস্টেলের খোঁজখবর নিচ্ছিলেন। তা করতে গিয়ে কোনও ভাবে ওই ফাইলগুলি ডাউনলোড হয়ে গিয়ে থাকবে। তবে সংস্থার কর্মীদের উপস্থিতিতেই যা করার করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে তাদের অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না বলে জানিয়েছে ইডি। তারা ওই সংস্থাতেও লিখিত ভাবে এ কথা জানিয়েছে।

সোমবার সুজয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আছে, এমন আরও দু’টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে একটি প্রকল্প এলাকা এবং লি রোডে সুজয়কৃষ্ণের মেয়ে এবং জামাইয়ের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা।

একযোগে তিন জায়গায় তল্লাশি শুরু হয়। বিষ্ণুপুর এবং লি রোডে তল্লাশির কাজ শেষ হলেও আলিপুরের অফিসে তল্লাশি গড়ায় ভোর পর্যন্ত। ইডি সূত্রে খবর, সুজয়ের সংস্থা এসডি এন্টারপ্রাইজ়ের সঙ্গে লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডসের লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। ইডির চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, ২০২০-২১ সালের মধ্যে সুজয়কৃষ্ণের এসডি এন্টারপ্রাইজ়ের সঙ্গে লিপ‌্স অ্যান্ড বাউন্ডসের ৯৫ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়েছে।

তল্লাশি অভিযানের পর লিখিত বিবৃতিতে ইডির দাবি, লিপ‌্স অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেড’-এর চিফ এগ্‌জ়িকিউটিভ অফিসার (সিইও) তৃণমূলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে লেখা হয়েছে, ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ওই সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন অভিষেক। তিনি যে এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত, মেয়ো রোডের সভা থেকে মমতা একপ্রকার তা নিশ্চিত করেই দিলেন। অভিষেক নিজেও সংস্থা সম্পর্কে একই কথা বলেছেন।

Previous articleDuttapukur Blast: সোমবার সকালেও বাঁশবাগানের পাশে উদ্ধার ছিন্ন মাথা,দত্তপুকুর বিস্ফোরণ কাণ্ডে সিবিআই ও এনআইএ তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে জোড়া জনস্বার্থ মামলা
Next articleWeather Update: ফের কবে দেখা মিলবে বৃষ্টির? কি জানাচ্ছে হাওয়া অফিস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here