দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যের বকেয়া পাওনার দাবি নিয়ে বুধবার সকালে সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করলেন, তাঁর পা এখন কেমন আছে। জবাবে মমতা বলেন, এখন তিনি ঠিক আছেন। পায়ের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভাল।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2023/12/IMG-20231216-WA0016-768x1024.jpg)
এদিনের বৈঠকে ছিলেন তৃণমূলের ৯ জন সাংসদের এক প্রতিনিধি দলও। বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী এদিন সাংবাদিকদের যা জানিয়েছেন, তা বাংলার জন্য ইতিবাচক বলেই মনে করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “সব শুনে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন বিভিন্ন খাতে বকেয়া পাওনার ব্যাপারে তাঁর অফিসারররা এবং রাজ্যের অফিসাররা যৌথ বৈঠক করবেন। যা ব্যাখ্যা চাওয়ার সেই বৈঠকে চাওয়া হবে। তার পর দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হবে।”
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “বৈঠকে জানিয়েছি যে কেন্দ্রের থেকে ৫৫টি দল গিয়েছিল বাংলায়। তাদের সবরকম ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। কোনও ভুল ত্রুটি হলে তাও শুধরে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু দিনের পর দিন টাকা আটকে রাখা হবে কেন?”
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2023/12/IMG-20230415-WA0032.jpg)
প্রধানমন্ত্রীর থেকে কোনওরকম আশ্বাস না পেলে ত়ৃণমূল বিকল্প আন্দোলন কর্মসূচির কথাও ভেবে রেখেছিল। কিন্তু এদিনের বৈঠকের পর মনে করা হচ্ছে, আপাতত কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের বৈঠকের জন্যই অপেক্ষা করবে নবান্ন। চেষ্টা করবে যাতে কমবেশি করে অন্তত কেন্দ্র থেকে বরাদ্দ পাওয়া শুরু হয়ে যায়।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2023/12/23-9-23-copy-scaled.jpg)
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হিসাবে বাংলার বকেয়া পাওনার অঙ্ক ১ লক্ষ ১৬ হাজার কোটি টাকা। এর আগে এই দাবি নিয়ে তিন বার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তা ছাড়া দিল্লিতে গিয়ে সত্যাগ্রহ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। পরে কলকাতায় রাজভবনের সামনেও ধর্না চলেছে। কিন্তু কখনও স্পষ্ট কোনও রফাসূত্র তাতে বেরোয়নি। সেদিক থেকে এই প্রথমবার সুনির্দিষ্টভাবে কোনও সমাধানের রাস্তার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2023/12/alankar-new-1-scaled.jpg)
সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে এদিনের বৈঠক চলে প্রায় ২০ মিনিট ধরে। সেই বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও ব্রায়েনও ছিলেন। বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন,“বকেয়া পাওনা নিয়ে বাংলার দাবি খুবই সুনির্দিষ্ট। একশ দিনের কাজ প্রকল্পে রাজ্যের গরিব মানুষ কাজ করেও মজুরি পায়নি। ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে এই প্রকল্প খাতে বাংলা ১ টাকাও পায়নি। আবাস যোজনার টাকাও আটকে রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য মিশন, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকাও আটকে রেখেছে কেন্দ্রের সরকার।”
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2023/12/DESHER-SAMAY_20230608211438708-1024x683-1.jpg)
মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, “প্রধানমন্ত্রীকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে বলেছিলেন, কেন্দ্র-রাজ্য বৈঠকের একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকা উচিত। সময়ের মধ্যে যেন আলোচনা শেষ হয়। নইলে বাংলার গরিব মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে বঞ্চিত হচ্ছেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, হ্যাঁ সময় বেঁধে সমাধানের পথ খোঁজা হবে।” এর পরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।”
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2023/12/IMG-20231202-WA0059-scaled.jpg)
বুধবার সকালে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল নতুন সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের লাগোয়া বৈঠক কক্ষে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই সেই ঘরে প্রবেশ করেন মোদী। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2023/12/IMG-20231124-WA0014.jpg)
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারের সময় হেলিকপ্টার বিভ্রাটে প্রথম পায়ে আঘাত পেয়েছিলেন মমতা। তার পরে গত সেপ্টেম্বরে স্পেন সফরের সময়ে সেই পায়ে আবার আঘাত লাগে। ২৪ সেপ্টেম্বর এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার হয়। সেই থেকে এক মাসের বেশি সময় ধরে গৃহবন্দিই ছিলেন মমতা। প্রশাসনিক সমস্ত কাজকর্ম তাঁকে বাড়ি থেকেই করতে হয়েছিল। পুজোর উদ্বোধনও করেছিলেন বাড়ি থেকে ভার্চুয়ালি। পুজোর পরে রেড রোডে কার্নিভালের দিন প্রথম বাড়ি থেকে বার হন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর থেকে অবশ্য তিনি নিয়মিত দফতরে যাচ্ছেন। সফরও শুরু করেছেন। তবে এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি। কথা হয়েছে বলেও খবর নেই। সেই কারণেই বুধবার মুখোমুখি দেখা হতে মমতার পায়ের আঘাতের বিষয়ে খোঁজ নেন মোদী। এর আগে শেষ বার গত বছর ২২ অগস্ট মোদীর সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়েছিল দিদির।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2023/12/10.jpg)