দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ঘূর্ণিঝড় মোকার কোনও প্রভাব বাংলায় না পড়লেও সোমবার কালবৈশাখীতে লন্ডভন্ড অবস্থা হয়েছে বাংলার একাধিক জেলায়। ঝড়ের এই তাণ্ডবে প্রাণ হারিয়েছেন ৯ জন রাজ্যবাসী। মৃতদের পরিবারের দাঁড়াল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সাংবাদিক বৈঠকে জানান, মৃতদের পরিবার পিছু আড়াই লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করা হবে।
সোমবার আচমকাই আকাশ কালো করে ঝড় শুরু হয়। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনায় ঝড়ের তাণ্ডব দেখা দেয়। ঝড়ের সঙ্গে তেড়ে বৃষ্টিও নামে। বাংলায় এই হঠাৎ দুর্যোগে যে ৯ জন মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে একজন ১২ বছরের নাবালিকাও রয়েছে।
ঝড়ের তাণ্ডবে হাওড়ায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে একজন, পূর্ব মেদিনীপুরে ১ জন, উত্তর ২৪ পরগনায় ২ জন ও ঝাড়গ্রামে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তারপরই মৃত পরিবার পিছু ২ লাখ টাকা আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি রবিবার একবালপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা-মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় ওই পরিবারকে আড়াই লাখ টাকা সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “কালকে যে ঝড় হয়েছে, তা তুফানের মতো হয়েছে। এই ঝড়ে যে মৃত্যু হয়েছে তাতে আমরা খুবই দুঃখিত। আমরা কারওর জীবন ফিরিয়ে দিতে পারব না। মৃত্যুর বিকল্পে কিছু হয়, জীবনটাই দামি।”
মমতা সাংবাদিক বৈঠক থেকে এ দিন বলেন, ‘এগরায় যে ঘটনা ঘটেছে, খুবই দুঃখজনক ঘটনা, খারাপ লাগছে৷ যে জায়গাটা হচ্ছে ঠিক ওড়িশার সীমান্তে৷ এবং যে এই বেআইনি কারখানা চালাচ্ছিলেন, তাঁকে আমাদের পুলিশ আগেও গ্রেফতার করেছিল, ১৯ অক্টোবর, ২০২২ সালে৷ তাঁর কেসটা নিয়ে আদালতে যাওয়াও হয়েছিল৷ কিন্তু আদালত থেকে জামিন পেয়ে গিয়েছিলেন৷ জায়গাটা এমন বিচ্ছিন্ন স্থান, মাঝখানে ঘর তৈরি করে এগুলো ওড়িশায় পাঠানো হত৷ ওর বিরুদ্ধে চার্জশিটও করা হয়েছিল৷ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কয়েকদিন আগে ফের এই কারখানা শুরু করে বেআইনি ভাবে৷ এরকম কিছু বাজি কারখানা, বেআইনি, এসব দিকে আছে৷ এবং সবচেয়ে দুর্ভাগ্য লোকাল ছেলেমেয়েরা কাজ করে৷ তাঁরা বাড়ির সামনে কাজটা করে বলে, কোনও সমস্যা হলে তাঁদের ঘাড়েই পড়ে৷ এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে যা খবর, তাতে আমরা পুলিশ ও দমকল পাঠিয়েছিল৷’
পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় বেআইনি বাজি কারখানার বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৫৷ নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে এই গোটা ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ পাশাপাশি তিনি বললেন, হতাহতের বিশেষ ভাবে সাহায্য করবে রাজ্য সরকার৷ মানস ভুইঁয়া-সহ বিশেষ দল যাবে আর্তদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে৷ তাঁদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলবে দল, এমনটাও বলেন তিনি৷
এর পর রাজনৈতিক প্রসঙ্গও টানেন তিনি৷ বলেন, ‘এই গ্রাম পঞ্চায়েতটি নির্দলকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি তৈরি করে৷ তাঁদের তথ্য রাখা উচিত ছিল কেন তাঁদের এলাকায় এই ঘটনা ঘটছে৷ আমাদের কাছে যা তথ্য তাতে পাঁচজন মৃত, সাতজন আহত৷ মালিক নাকি ওড়িশার দিকে পালিয়েছে৷’
মমতা তার পর সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়েও বলেন, ‘সীমান্তে বিভিন্ন আইসোলেটেড জায়গা থাকে৷ আমি বারবার বলি, বর্ডারগুলোতে নাকা চেকিং করতে, বর্ডার চেকিং করতে৷ আমরা কেসটা সিআইডিকে দিয়েছি, তারা রিপোর্ট দেবে৷ দমকলও রিপোর্ট দেবে৷ তদন্তের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে, এসপি স্পটে গিয়েছিলেন৷ বিজেপির পঞ্চায়েত বলে, আমাদের বিধায়ককে স্পটে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে৷ মানস ভুঁইয়াকে বলেছি৷ একটা মজার জিনিস দেখছি, তোমার যেখানে জোর, সেখানে আমাদের ঢুকতে দেবে না, এটা কেমন? এটা তো ল’অ্যান্ড অর্ডারের সঙ্গেও যুক্ত নয়৷ আমরা তা সত্ত্বেও মনে করি, আর কোথায় কোথায় বেআইনি বাজি কারখানা আছে দেখতে হবে৷ নাকা চেকিং বাড়াতে হবে৷ এখানে তৈরি করবে, ওড়িশায় গিয়ে বিক্রি করবে, তথ্য না থাকার ফলে, তা হবে না৷’
মমতা তার পর সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়েও বলেন, ‘সীমান্তে বিভিন্ন আইসোলেটেড জায়গা থাকে৷ আমি বারবার বলি, বর্ডারগুলোতে নাকা চেকিং করতে, বর্ডার চেকিং করতে৷ আমরা কেসটা সিআইডিকে দিয়েছি, তারা রিপোর্ট দেবে৷ দমকলও রিপোর্ট দেবে৷ তদন্তের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে, এসপি স্পটে গিয়েছিলেন৷ বিজেপির পঞ্চায়েত বলে, আমাদের বিধায়ককে স্পটে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে৷ মানস ভুঁইয়াকে বলেছি৷ একটা মজার জিনিস দেখছি, তোমার যেখানে জোর, সেখানে আমাদের ঢুকতে দেবে না, এটা কেমন? এটা তো ল’অ্যান্ড অর্ডারের সঙ্গেও যুক্ত নয়৷ আমরা তা সত্ত্বেও মনে করি, আর কোথায় কোথায় বেআইনি বাজি কারখানা আছে দেখতে হবে৷ নাকা চেকিং বাড়াতে হবে৷ এখানে তৈরি করবে, ওড়িশায় গিয়ে বিক্রি করবে, তথ্য না থাকার ফলে, তা হবে না৷’
এর পর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত নিয়ে মমতা বলেন, ‘যাঁরা, আমার বন্ধুরা এনআইএ করে চেঁচাচ্ছে, তাঁদের বলছি, আমাদের কোনও আপত্তি নেই৷ আমরা আমাদের তদন্ত শুরু করেছি৷ যদি তাঁরা মনে করে, এনআইএ করে হবে, তা হলে করুক৷ তবে আমরা চাইব আসল অপরাধীরা যেন শাস্তি পায়৷’