Maha Kumbh Mela 2025: ১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভে পুণ্যস্নান ২ কোটি ভক্তের , প্রয়াগরাজের পাশাপাশি পূণ্যার্থীদের ভিড় গঙ্গাসাগর,বাবুঘাট,কেন্দুলিতেও দেখুন ভিডিও

0
10


অমৃতকুম্ভের সন্ধানে

দেশের সময় : আজ, মঙ্গলবার পৌষ মাসের শেষ দিন ‘মকর সংক্রান্তি’ হিসেবে পালিত হচ্ছে দেশ জুড়ে। প্রয়াগ থেকে গঙ্গাসাগর, সর্বত্র পূণ্যার্থীর ভিড়। গঙ্গাস্নান শুরু হয়েছে ভোর থেকেই।

ছবিগুলি তুলেছেন দেবাশিস রায় ।

গঙ্গাস্নানে ভিড় বেড়েছে গঙ্গাসাগরে। ভোর থেকে বহু মানুষ অপেক্ষা করছিলেন। নির্দিষ্ট করে রাখা জায়গায় এদিন ডুব দিয়ে স্নান করেন তাঁরা। দেখুন ভিডিও

মোক্ষলাভের আশায় প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে প্রথমদিনই ডুব দিয়েছেন প্রায় ২ কোটি পুণ্যার্থী। সোমবার বিকেল ৪টে পর্যন্ত স্নানের হিসাব দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ১ কোটি ৬০ লক্ষ ভক্ত পুণ্যস্নান সেরেছেন। তবে এদিন রাত পর্যন্ত রয়েছে শাহিস্নানের সময়।

মূল স্নান আজ মঙ্গলবারের ভোরে মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে। রবিবার থেকেই মেলা চত্বরে ভক্তদের ভিড়ে তিলধারণের জায়গা নেই। এখনও কাতারে কাতারে লোক এসেই চলেছেন। বিভিন্ন আখড়া, গুরুদের শিবিরে চলছে সান্ধ্যাকালীন ভজন-কীর্তন। কোথাও বসেছে ভান্ডারা। সব মিলিয়ে সরগরম প্রয়াগরাজ।

এরমধ্যেই মাইকে অনবরত বেজে চলেছে পুলিশের দিক নির্দেশিকা। তার সঙ্গে ভিড়ে ঠাসাঠাসি ভুলা-ভাটকা ও খোয়া-পায়া শিবিরগুলিতে। মেলার লাখো লাখো মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া স্বজনকে ফিরে পেতে উদ্বিগ্ন আত্মীয়দের লাইন। পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর কর্মীরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে খুঁজে এনে দিচ্ছেন তাঁদের। কখনও কখনও খুঁজে পেতে ঘণ্টা পেরিয়ে যাচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমদিনই মেলায় হারিয়ে যাওয়া প্রায় ২৫০ জনকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া গিয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রয়াগরাজে সোমবার ভোররাত থেকে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভের শাহিস্নান। পৌষ পূর্ণিমা উপলক্ষে লাখে লাখে ভক্তপ্রাণ মানুষ জীবনের পাপ ধুয়ে ফেললেন গঙ্গা-যমুনা ও অন্তঃসলিলা সরস্বতীর ত্রবেণী সঙ্গমে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ আধ্যাত্মিক মেলা হল প্রয়াগরাজের পূর্ণকুম্ভ মেলা। এ বছর আনুমানিক মোট ৪৫ কোটি মানুষের সমাগম হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। যার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে চক্রব্যুহ নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়েছে।

এদিন ভোর ৫টা ৩ মিনিট থেকে শুরু হয়েছে পৌষ পূর্ণিমার শাহিস্নান। বৈদিক পঞ্জিকা অনুযায়ী পৌষ মাসের পূর্ণিমা থেকে এই শাহিস্নান শুরু হয়। যা চলবে ১৪ জানুয়ারি বিকেল ৩টে ৫৬ মিনিট পর্যন্ত। ব্রাহ্ম মুহূর্ত পড়েছিল সকাল ৫টা ২৭ মিনিট থেকে ৬টা ২১ মিনিট পর্যন্ত। বিজয় মুহরত দুপুর সওয়া ২টো থেকে ২টো ৫৭ মিনিট পর্যন্ত। চান্দ্র মুহূর্ত ৫টা ৪২ মিনিট থেকে ৬টা ৯ মিনিট পর্যন্ত এবং নিশীথ মুহরত হবে রাত ১২টা ৩ মিনিট থেকে ১২টা ৫৭ মিনিট পর্যন্ত। শাহিস্নানের অন্য দিনগুলি হল- আগামিকাল মকর সংক্রান্তি, ১৪ জানুয়ারি। তৃতীয় শাহিস্নান হবে মৌনী অমাবস্যায়, ২৯ জানুয়ারি। চতুর্থটি বসন্ত পঞ্চমী, ৩ ফেব্রুয়ারি। পঞ্চম শাহিস্নানের দিন মাঘী পূর্ণিমায় ১২ ফেব্রুয়ারি। শেষটি হবে মহাশিবরাত্রিতে ২৬ ফেব্রুয়ারি।

মহাকুম্ভ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। মহাকুম্ভ দেখতে আসা ব্রাজিলের এক বাসিন্দা এদিন ভোরে স্নান সেরে বললেন, আমি যোগ করি এবং মোক্ষলাভের উদ্দেশ্যে এখানে এসেছি। এ আমার দেখা সারা জীবনের এক বিস্ময়। জল বরফের মতো ঠান্ডা কিন্তু হৃদয় ভক্তিতে উষ্ণ হয়ে গেল। তারপর নিজেই চিৎকার করে বললেন, জয় শ্রীরাম!

উত্তরপ্রদেশের পুলিশ প্রধান প্রশান্ত কুমার জানান, মহাকুম্ভের জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজের দফতর থেকে কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ রাখছেন ক্রমাগত। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ১০২টি চেক পয়েন্ট তৈরি করা হয়েছে শহর ও মেলা চত্বর জুড়ে। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, প্রায় ৪০,০০০ পুলিশ কর্মী সদা সতর্ক রয়েছেন। এছাড়া, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও দমকল এবং আধা সামরিক বাহিনী সজাগ দৃষ্টি রাখছে। তীক্ষ্ণ নজরদারিতে পাঁচটি বজ্র, ১০টি ড্রোন এবং চারটি অ্যান্টি সাবোতাজ দল টহলদারি চালিয়ে যাচ্ছে।

নজরদারি ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে জলের নীচে ড্রোন নামানো হয়েছে। এছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত সিসিটিভি ক্যামেরায় ছবি অ্যানালাইজ করা হচ্ছে প্রতি মুহূর্তের। ২,৭০০টি এআই ক্যামেরা কুম্ভমেলা জুড়ে লাগানো হয়েছে। জলের নীচে তদারকিতে কাজ করছে ১১৩টি ড্রোন।

এদিকে গঙ্গাসাগরেও পূণ্যার্থীর ভিড়। গঙ্গাস্নান শুরু হয়েছে ভোর থেকেই।ভোর থেকে বহু মানুষ অপেক্ষা করছিলেন। নির্দিষ্ট করে রাখা জায়গায় এদিন ডুব দিয়ে স্নান করেন তাঁরা।

মকর সংক্রান্তির ভোর থেকে জয়দেব কেন্দুলিতে অজয় নদের জলে ডুব দিলেন লাখো পূণ্যার্থী। এর সঙ্গে প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন কেন্দুলির জয়দেবের মেলায় ভিড়।

অনেকেই খোলা আকাশের নীচে রাত থেকে অপেক্ষায় ছিলেন। মধ্যরাত থেকে রঙিন আলোয় সেজে ওঠা সাগরমেলা ১ থেকে ৬ নম্বর স্নানঘাটজুড়ে ভিড় চোখে পড়ার মতো। গত দু’‌দিনের তুলনায় ঠাণ্ডার দাপট কমেছে, তবে উত্তুরে হাওয়ায় পূণ্যার্থীদের জবুথুবু অবস্থা।

বাবুঘাটে এদিন ভিড় চোখে পড়ার মতো। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। ভোরের আলো ফোটার অনেক আগে থেকে সিঁড়িতে অপেক্ষা করছিলেন বহু মানুষ।

Previous articleBeauti contest ক্লাউড নাইনের সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা : দেখুন ভিডিও
Next articleInternational kite festival 2025 আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসব ২০২৫ দেখুন ভিডিও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here