দেশের সময় একুশের ভোটে বাংলায় ২০০ পারের স্লোগান তুলছিল বিজেপি। যদিও ৭৭টি আসনে থামতে হয়েছিল গেরুয়া শিবিরকে। ২৪ এর লোকসভা ভোটেও সারাদেশে বিজেপির ফল বাংলার মতোই হবে দাবি করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার মুর্শিদাবাদের হরিহর পাড়ার নির্বাচনী সভা থাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “এবারের লোকসভা ভোটে বিজেপি দেশে ২০০টি আসন ও পাবে না।”
কেন এ কথা বলছেন তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। মমতার কথায়, “মানুষের চোখ বলছে এবারে আর বিজেপি ক্ষমতায় আসবে না। সরকার গড়বে ইন্ডিয়া জোট।”
বিভিন্ন সমীক্ষায় অবশ্যই এগিয়ে রাখা হয়েছে বিজেপিকে। ওই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “ওগুলো সব কাগুজে সমীক্ষা। লক্ষ লক্ষ টাকা ঢেলে বিজেপি এই সমীক্ষা করিয়েছে।”
এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস এবং সিপিএমকে তুলে ধরা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, “রাতের অন্ধকারে ওদের মধ্যে বোঝাপড়া আছে। বাংলায় বিজেপি সিপিএম কংগ্রেস সব একই। ওদের একটা ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে দুটো ভোট দেওয়া।’’
তৃণমূল নেত্রী আরও দাবি করেন, “ইন্ডিয়া জোট আমারই তৈরি করা, কেউ কেউ এখানে ইন্ডিয়া জোটের কথা বলে ভোট চাইছে। বাংলায় কোনও ইন্ডিয়া জোট নেই। ওটা দিল্লির, এবারে আমরাই সরকার গড়বো। বাংলা নেতৃত্ব দেবে।”
বিজেপি ক্ষমতায় এলে এনআরসি, সিএএ-র পাশাপাশি অভিন্ন সিভিল আইনের মাধ্যমে মানুষের ধর্মীয় রীতিনীতিও কেড়ে নেবে বলে অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার কৃষক বাজার ময়দানে জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মোদী কী গ্যারান্টি দিচ্ছে? অভিন্ন সিভিল কোর্ট করবে বিজেপি। ওটা চালু হলে আপনার আলাদা বলে কোনও ধর্মীয় রীতি থাকবে না। আর যেটাকে ওরা হিন্দু ধর্ম বলছে, সেটা স্বামী বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণের হিন্দু ধর্ম নয়, বহিরাগতদের চাপিয়ে দেওয়া দস্যু দাঙ্গা ধর্ম।”
মমতার কথায়, এই যে হিন্দুদের বিয়ে হয় সন্ধেতে, মুসলিমদের দিনের বেলায় কিংবা আদিবাসীরা কি রকম দোলায় চেপে বিয়ে করতে যায়- এই সব রীতি ওরা তুলে দিতে চাইছে।
এনআরসির প্রসঙ্গে টেনে মুখ্যমন্ত্রী এদিনও হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, “দরকার হলে না খেয়ে থাকব, তবে বাংলায় এনআরসি করতে দেব না। জীবন বাজি রেখে বলছি। আমার জীবন থাকতে এনআরসি করতে দেব না।’’
মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিকদের ইদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকেরা যাঁরা রমজানে বাড়ি এসেছেন, ভোট না দিয়ে নড়বেন না এক পা-ও। ভোট না দিলে আধার কার্ড থেকে আপনার নাম বাদ দিয়ে দেবে। সিএএ, এনআরসি-তে নাম ঢুকিয়ে দেবে। এভাবেই ওরা অসমে ১৯ লক্ষ লোকের নাম বাদ দিয়েছিল।”
এবারের ভোটকে স্বাধীনতা সংগ্রামের দ্বিতীয় লড়াই বলে দাবি করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “মোদী যদি আবার ক্ষমতায় আসে দেশে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা বলে কিছু থাকবে না। তাই দেশকে বাঁচাতে মোদীকে, বিজেপিকে হাটাতে হবে”।