কলকাতা : সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরই বুধবার সকালে আরজি কর হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে সিআইএসএফ। হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছেন সিআইএসএফের নর্থ ইস্ট জোন টু (হেডকোয়ার্টার কলকাতা) এর ডিআইজি কুমার প্রতাপ সিং। ডেপুটি সুপারের সঙ্গে হাসপাতালে ফোর্স ডেপ্লয়মেন্ট নিয়ে বৈঠকে বসেছেন ডিআইজি। কোথায় কোথায় কীভাবে মোতায়েন হবে ফোর্স সেই সংক্রান্ত বিষয়ে। যদিও, ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চাননি ডিআইজি কুমার প্রতাপ সিং। তিনি বলেন, “আমাদের কাজ করতে দিন। আগে আমরা কাজ শেষ করি তারপর সবটা বলব। এখনই কিছু বলা যাবে না।” দেখুন ভিডিও
এদিন সকাল ৯টা নাগাদ ওই বাহিনীর ডিআইজি কে প্রতাপ সিংহ ও এসপি পদমর্যাদার এক আধিকারিক হাসপাতাল পরিদর্শনের জন্য যান। আরজি কর হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করেন তাঁরা।
সূত্রের খবর, নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতেই বুধবার সকালে আরজি করে গিয়েছেন সিআইএসএফ আধিকারিকেরা।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ হাসপাতালের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। কী ভাবে হাসপাতালে ভাঙচুর হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পুলিশের ভূমিকাতেও উষ্মা প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত।
নির্দেশনামায় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ উল্লেখ করেছে, ওই ভাঙচুরের ঘটনার পর অনেক রেসিডেন্ট চিকিৎসক তাঁদের কর্মস্থল ছেড়েছেন। হাসপাতালের হস্টেলগুলিতে মাত্র ৩০-৪০ জন মহিলা চিকিৎসক এবং ৬০-৭০ জন পুরুষ চিকিৎসক রয়েছেন। ইন্টার্ন, রেসিডেন্ট ডাক্তার ও সিনিয়র চিকিৎসকেরা যাতে কর্মস্থলে ফিরতে পারেন, তার জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছিল শীর্ষ আদালত।
সেই সময় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টকে আশ্বস্ত করেছিলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে সিআইএসএফ কিংবা সিআরপিএফ জওয়ানকে আরজি কর হাসপাতালে মোতায়েন করা যাবে। রেসিডেন্ট ডাক্তারদের নিরাপত্তার জন্য হস্টেলেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছিলেন সলিসিটর জেনারেল। রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বলও জানিয়েছিলেন, এই সিদ্ধান্তে তাদের কোনও আপত্তি নেই। সুপ্রিম কোর্টের সেই নির্দেশ দ্রুত কার্যকরে উদ্যোগী সিআইএসএফ।
অন্যদিকে ,আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ থেকে তারকারাও। চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতি দিনই কোথাও না কোথাও বিক্ষোভ, প্রতিবাদ মিছিল চলছে। সকলের দাবি, ‘বিচার চাই’।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ। সেই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার আরজি করের আন্দোলনরত চিকিৎসকরা মিছিল করেন। জুনিয়র চিকিৎসকদের মিছিল হলেও, সিনিয়র চিকিৎসকেরাও এদিনের মিছিলে যোগদেন।
সাড়ে ১২টা নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে থেকে মিছিল শুরু করলেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের গন্তব্য স্থান স্বাস্থ্য ভবন। চিকিৎসকেরা একে অপরের হাত ধরে মিছিল এগিয়ে চলে স্বাস্থ্য ভবনের দিকে।
বিকাশ ভবন পেরিয়ে ১২টা ৫০ মিনিট নাগাদ চিকিৎসকদের মিছিল ময়ূখ ভবনে পৌঁছয়। তার পর সেখান থেকে সেই মিছিল ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে স্বাস্থ্য ভবনের দিকে।
দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিট নাগাদ চিকিৎসকদের মিছিল সেন্ট্রাল পার্কে সামনে পৌঁছয়। তারপর চিকিৎসকদের মিছিল এদিন করুণাময়ী মোড় হয়ে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে পৌঁছায় ।
স্বাস্থ্য ভবনের বাইরে পুলিশি নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। বলে জানা গেছে পুলিশ সূত্রে I
স্বাস্থ্য ভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করার দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। তাঁদের প্রতিনিধি দল স্বাস্থ্য ভবনে ভিতরে গিয়ে ডেপুটেশন জমা দিতে চায়। মিছিল থেকে এ বিষয়ে ঘোষণা করা হয় ।
এরপর চিকিৎসকদের একটি ৩৫ জনের প্রতিনিধি দল স্বাস্থ্য ভবনের ভিতরে ঢুকে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েকের সঙ্গে দেখা করেন বলে জানা গেছে ।
প্রতিনিধি দল যখন ভিতরে যায়, তখন বাকি চিকিৎসকেরা স্বাস্থ্য ভবনের বাইরে অবস্থানে বসলেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার কাছেই চিকিৎসকেরা ডেপুটেশন জমা দেবেন বলেই খবর।