দেশের সময় , কলকাতা: কালো স্যাটিনের শাড়ি, খোলা চুল, কপালে টিপ। সপ্তাহের শুরুতে এ ভাবে কলকাতার এক বিলাসবহুল হোটেল দেখা মিলল কাজলের। অনেক বছর পর কলকাতায় আগমন।

আরও একবার মায়ের ভূমিকায় পর্দায় দেখা যাবে অভিনেত্রী কাজলকে(Kajol) । সত্যি ঘটনার উপর তৈরি আবেগপূর্ণ ছবি ‘সালাম ভেঙ্কি’-তে (Salaam Venky) তিনি অভিনেতা বিশাল জেঠওয়ার মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করছেন। শারিরীকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী একটি ছেলের মায়ের চরিত্র এটি। মা-সন্তানের সম্পর্ক নিয়ে তৈরি এই ছবির পরিচালক অভিনেত্রী রেবতী(Revathy) । এটাই তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি। ৯ ডিসেম্বর ছবি মুক্তি পাবে। এই ছবিতে সুজাতা চরিত্রটি প্রথম করতে রাজি হননি কাজল। সেই বিষয়ে নিজেই একটি টিভি চ্যানেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন অভিনেত্রী। কারণ হিসেবে তিনি ছবি ‘কনসেপ্ট’ না পসন্দ হওয়ার কথা বলেন। তবে পরে ছবির স্ক্রিপ্ট পড়ার পর কাজলের মনে হয়, তিনি যদি এই চরিত্রে অভিনয় না করতেন, তবে আফসোসের শেষ থাকত না।

শুরুতে এই ছবিটি করতে রাজি হননি তিনি। কারণ নিজে মা হওয়ার পর এমন গল্পে অভিনয় করতে অস্বস্তি হয় তাঁর। যেই গল্পে সন্তানের আয়ু বেশি নয়।

ছেলে আক্রান্ত ডুশেন মাসকিউলার ডিসট্রফি (Duchenne muscular dystrophy)-তে। বেশি দিন বাঁচাতে পারবে না মা। কিন্তু যে কটা দিন বাকি আছে, আনন্দে হাসিমুখে ছেলের আবদার মেটাবে। ছবির গল্প নয়। সত্য ঘটনা। আর সেই গল্পেই অভিনয় করলেন কাজল।

‘সালাম ভেঙ্কি’। কাজলের সঙ্গে অভিনয় করলেন বিশাল জেথওয়া। পরিচালনায় বর্ষীয়ান অভিনেত্রী রেবতী। আর সেই ছবির প্রচারে কলকাতা এলেন বাবার শহরে।

সমু মুখোপাধ্যায় আর তনুজার মেয়ে কাজল নিজেই জানালেন প্রায় ৫ বছর পর শহরে এলেন। কলকাতার সঙ্গে কাজলের যোগসূত্র কেবল তাঁর বাবা নন, তনুজাও একাধিক বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাই কাজল তো এ শহরেরই মেয়ে।

শহরে এসেই তিনি জানালেন, ‘ফুড কোমা’ হয়ে গিয়েছিল কাজলের। এত বাঙালি খাবার খেয়েছেন যে ঘুম ঘুম পাচ্ছে তাঁর। আর তাই সংবাদিক সম্মেলন শুরু হওয়ার আগেই বলে দিলেন, ”ঘুমিয়ে পড়লে ক্ষমা করবেন আমায়।”

কাজলের কথায় জানা গেল, শুরুতে এই ছবিটি করতে রাজি হননি তিনি। কারণ নিজে মা হওয়ার পর এমন গল্পে অভিনয় করতে অস্বস্তি হয় তাঁর। যেই গল্পে সন্তানের আয়ু বেশি নয়।

কিন্তু চিত্রনাট্য শোনার পর কাজল রাজি না হয়ে থাকতে পারেননি। তেমনই কাজলের সঙ্গে কাজ করে উৎফুল্ল বিশাল। এর আগে তিনি ‘মারদানি’ ছবিতে রানি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করেছেন।

আর সেই সূত্রের তিনি মজা করে বললেন, ”মুখোপাধ্যায় পরিবারের সঙ্গে কাজ করা মানে তো দারুণ ব্যাপার। আমার কী হয়েছিল, তা তো আপনারা দেখেই ছিলেন।”

রেবতী জানান, কলকাতা তাঁর হৃদয়ের কাছের শহর। সোমবার দিন শহরেই থাকছেন অভিনেত্রী। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে ফিরবেন।

আগামী শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর ‘সালাম ভেঙ্কি’ মুক্তি পাচ্ছে প্রেক্ষাগৃহে। কলকাতার পাঁচতারা হোটেলে সেই উপলক্ষেই তারকাদের সমাবেশ হয়েছিল সোমবার। যেখানে মধ্যমণি ছিলেন কাজল।

কী বলেছেন দুই সন্তানের জননী কাজল এই বিষয়ে, “সুজাতার সবচেয়ে ভাল দিক হল তার সরলতা। এবং আমি এই বিষয়টি ধরে রাখার জন্য সত্যিই কঠোরভাবে চেষ্টা করেছি। রেবতী ম্যাম বলেন, অনেক সময় দেখা যায় যাঁরা দেখতে খুব সাধারণ মানুষ বলে মনে হয়, আসলে তাঁরাই সবচেয়ে সাহসী। সিনেমার চরিত্রগুলো বাস্তব জীবনের মানুষদের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয় এবং তাই আমরা যখন তাঁদের পর্দায় ফুটিয়ে তোলার সুযোগ পাই, তখন তাঁদের প্রতি ন্যায়বিচার করা আমাদের দায়িত্ব”।
টেলিভিশনে শিশুশিল্পী হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেন বিশাল।

প্রথম বলিউড ছবি ‘মর্দানি ২’। রানি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রথম ছবি, দ্বিতীয় তাঁরই তুতো বোন কাজলের সঙ্গে করার সুযোগ পেয়েছেন অভিনেতা। তিনি ছবিতে এক শারিরীকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী চরিত্রে অভিনয় করছেন। তাঁর মতে, “এই ছবিটি সত্যিই আমার হৃদয়ের খুব কাছাকাছি। একজন মা এবং তার ছেলের সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে এবং বাস্তবেও আমি আমার মায়ের খুব কাছের। একজন অভিনেতা হিসাবে দর্শক আমাকে খুব আলাদাভাবে দেখতে পাবেন। মারদানি ২ ছবির পরে, দর্শক আমাকে একজন ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখেছিলেন। আমি এমনই একটি চরিত্রের অপেক্ষায় ছিলাম যেখানে নিজেকে ভেঙে অন্যরূপে দর্শকদের আসতে পারি”।

কাজল তাঁর এই ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতাকে ‘অন্তরের শুদ্ধিকরণ’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। বাস্তব জীবনে দুই সন্তানের মা হওয়ার কারণে অভিনেত্রী মনে করেন যে একজন অভিভাবক হিসাবে, যখন নিজের সন্তানদের নিরাপত্তা এবং সুখের কথা আসে তখন প্রত্যেকের মনের ভিতর একটি দীর্ঘস্থায়ী ভয় থাকে। অভিনেত্রী যোগ করেছেন যে এই ছবির একটি অংশ হওয়ার কারণে তাঁকে সেই ভয়টি দূর করতে সাহায্য করেছে।

‘সালাম ভেঙ্কি’ ছবিতে পুনরায় আমির খানের সঙ্গে অভিনয় করছেন কাজল। ‘ফানা’ ছবির পর আবার আমিরের সঙ্গে কাজ করর অভিজ্ঞতা নিয়ে অভিনেত্রী মত, তিনি দুর্দান্ত। তাঁর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল খুবই মজার সিনেমাতে। কারণ তিনি একজন ভাল অভিনেতা। তিনি কয়েকজন অভিনেতার মধ্যে একজন যাঁদের স্টাইল নেই। তাঁর কাছ থেকে আপনি একটাই আশা করতে পারেন যে আমির খানের একটি ছবি হবে খুব ভালভাবে তৈরি করা।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here