দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: টি২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়ে সফর শুরু হচ্ছে কোহলিদের । সেই মহারণের জন্য কার্যত ফুটছেন আপামর ক্রিকেটপ্রেমীরা। ভারত-পাক ম্যাচের দিকে নজর সক্কলের। তবে শুধু তো পাকিস্তান ম্যাচ নয়, বিশ্বকাপের খেতাব পেতে হলে কোহলিদের খেলতে এবং জিততে হবে বাকি ম্যাচগুলিও।

পাঁচ বছর পর আবার টি-২০ ম্যাচে মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান। ২০১৬ সালে শেষ সাক্ষাৎ ইডেনে। তারপর আজ দুবাইয়ে। বিশ্বমঞ্চে এখনও ভারতকে হারাতে পারেনি পাকিস্তান। কিন্তু পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে কোহলির টিম ইন্ডিয়াকে ফেভারিট ধরলেও, পাকিস্তানকে একেবারে হেলাফেলা করা যায় না। যেকোনও প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ। শুরুটা ভাল হলেই আত্মবিশ্বাস এসে যায়। তাই এই ম্যাচটার গুরুত্ব অপরিসীম। ২০০৭ সালে টি-২০ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন। ২০১১ সালে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ জয়। সবই ধোনির জমানায়। এখানেই শেষ। কোহলির ভাঁড়ার শূন্য। বিরাট নিজে বড় ক্রিকেটার, কিন্তু নেতা হিসেবে এখনও দেশকে কিছুই দিতে পারেননি। ক্যাপ্টেন কোহলির কাছে এটাই সুযোগ বিশ্বকাপ জিতে ইতিহাসের পাতায় ঢুকে পড়ার।

রোহিত, রাহুল, বিরাট, সূর্যোকুমার, পন্থ..এবারের টি-২০ বিশ্বকাপের সেরা ব্যাটিং লাইন আপ। এদের মধ্যে যে কেউ যেকোনও সময় ম্যাচের গতিমুখ পাল্টে দিতে পারে। হার্দিক, জাদেজাও ম্যাচ উইনার। আর সবকিছুর অন্তরালে ধোনি। হেভিওয়েট টিম ইন্ডিয়ার এবার বিশ্বকাপ জেতার সেরা সুযোগ। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ভারতের বোলিংও ভয়ঙ্কর। শামি, বুমরার আগুনে পেস, নিখুঁত ইয়র্কার। সঙ্গে বরুণ, আশ্বিনের ঘূর্ণি। এবারের বিশ্বকাপে যতগুলো দল রয়েছে তারমধ্যে সবচেয়ে ব্যালেন্সড ভারত। তবে ভারতের সমস্যা মাঝের ওভারগুলো। পাওয়ার প্লের পর থেকে ১৩-১৪ ওভার পর্যন্ত বিরাটরা বেশি রান তুলতে পারে না। পাশাপাশি উইকেটও হারায় ভারত। আজ পাক বধ করতে হলে এটা মেরামত করতে হবে।

অন্য বিশ্বকাপের পাকিস্তান দলের থেকে এবারের দলটা একটু আলাদা। বাবরের পাকিস্তান তারুণ্যের চমক দেখাতে পারে। অধিনায়ক নিজেই দারুণ ছন্দে। শুরুতেই  দ্রুত রান তোলার ক্ষমতা রয়েছে ফাকার জামানের। ধারাবাহিকতার কারণে মহম্মদ রিজওয়ানকে ম্যাচ চেঞ্জারের তালিকায় রাখা যেতেই পারে। বুড়ো হারে ভেল্কি দেখাতে পারে মহম্মদ হাফিজ, শোয়েব মালিকরা। তবে পাকিস্তানের প্রধান সমস্যা বোলিং। যে দেশ একসময় ওয়াসিম আক্রাম, ওয়াকার ইউনিস, শোয়েব আখতারের মতো বোলার উপহার দিয়েছে, এখন তাঁদেরই বোলারের আকাল। 

একমাত্র শাহীন আফ্রিদি ছাড়া কেউ ছন্দে নেই। স্পিন বিভাগে ইমাদ ওয়াসিম ছাড়া কেউ নেই। ভারতের তারকা সমৃদ্ধ ব্যাটিং লাইনআপে পতন আনার মতো কোনও বোলার নেই পাকিস্তানে। তাই টসে জিতলে হয়ত প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেবেন বাবর। বড় রান খাড়া করে ভারতের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করাই থাকবে স্ট্র্যাটেজি। অন্যদিকে রান তাড়া করে সফল কোহলিরা। তাই টিম ইন্ডিয়ার নেতা পরে ব্যাট করতেই চাইবেন। তবে হিসেব নিকেশ দিয়ে কি এই মেগা ম্যাচ হয়? এইধরনের ম্যাচ বরাবরই স্নায়ুর খেলা। চাপ সামলে নিজেদের একশো শতাংশ উজাড় করে দেওয়ার ম্যাচ। যা প্রত্যেক বিশ্বকাপে করে এসেছে ভারতীয় দল। দুবাইয়ে সেই ট্রেন্ডই বহাল থাকবে? না নতুন ইতিহাসের রচনা করবে পাকিস্তান?

সুপার টুয়েলভ-এর গ্রুপ
গ্রুপ-১: ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ।

গ্রুপ-১: ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ।
গ্রুপ-২: ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, নামিবিয়া, স্কটল্যান্ড।

ভারতের সূচি
২৪ অক্টোবর (রবিবার): পাকিস্তান (দুবাই, সন্ধ্যা ৭-৩০)।
৩১ অক্টোবর (রবিবার): নিউজিল্যান্ড (দুবাই, ৭-৩০)।
৩ নভেম্বর (বুধবার): আফগানিস্তান (আবু ধাবি, ৭-৩০)।
৫ নভেম্বর (শুক্রবার): স্কটল্যান্ড (দুবাই, ৭-৩০)।
৮ নভেম্বর (সোমবার): নামিবিয়া (দুবাই, ৭-৩০)।

ভারতের যা গ্রুপ, তাতে তাদের শেষ চারে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা। কারণ শক্তিশালী দল বলতে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড, বাকি দুটি দলের বাধা পেরতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। শেষ চারে গিয়েই আসল ম্যাচ খেলতে হবে টিম কোহলিকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here