দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ তোশাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। 

পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, একদা পাক ক্রিকেট অধিনায়ক, তথা পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তোষাখানা মামলায় তিন বছরের হাজতবাসের সাজা দিয়েছে ইসলামাবাদের আদালত । সেই সঙ্গে আগামী পাঁচ বছর কোনও নির্বাচনে লড়তে পারবেন না ‘কাপ্তান’ ইমরান। একই সঙ্গে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। এই রায় ঘোষণার পরেই ইমরান খান গ্রেফতার হয়ে গেলেন নিজের বাড়ি থেকে।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা ইমরান খানের বিরুদ্ধে তোষাখানা তছরূপের মামলা চলছিল। সেই মামলার শুনানিতে ইসলামাবাদের নিম্ন আদালত এই সাজা শুনিয়েছে। তার পরেই গ্রেফতার হন তিনি। তবে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী এবার উচ্চ আদালতে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবীরা।

জানা গিয়েছে, রায় ঘোষণার পরেই ইমরান খানের জামান পার্কের বাড়ি পৌঁছে বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাঁচ বছরের জন্য ভোটেও দাঁড়াতে পারবেন না তিনি। 

অবিভক্ত ভারতে তোষাখানা শব্দের প্রচলন শুরু হয় সেই মোঘল জমানা থেকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি সরকারি ভাবে যে উপহার পান তা তোষাখানায় জমা পড়ে। সেটা মোটেও ব্যক্তিগত উপহার নয়। সেটা ওই পদের জন্য উপহার। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি সরকারি ভাবে যে উপহার পান তার কড়ায়গণ্ডায় হিসাব রাখা হয়।

পাকিস্তানেও একই নিয়ম। সেখানে মন্ত্রিসভার একটি দফতরই হল তোষাখানা। মূল্যবান উপহার সামগ্রী সেখানে রাখা হয়। পাকিস্তানের আইনে বলা হয়েছে পাক মুদ্রায় ৩০ হাজার টাকার কম মূল্যের উপহার প্রধানমন্ত্রী নিজের ব্যবহারের জন্য রাখতে পারেন। কিন্তু তার চেয়ে বেশি মূল্যের উপহার পেলে তা তোষাখানায় জমা করতে হবে।

ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁর মেয়াদে তোষাখানার হিসাবে গরমিল রয়েছে। বহুমূল্য উপহার ইমরান সরিয়ে নিয়েছেন।

পাকিস্তানে এও নিয়ম হল, তোষাখানার হিসাব সেদেশের নির্বাচন কমিশনের কাছে পেশ করতে হয়। গত মে মাসের ১০ তারিখ পাক নির্বাচন কমিশন ইমরানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দাবি করে যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তোষাখানার ভুয়ো হিসাব পেশ করেছেন।
শনিবার শুনানির সময়ে অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক হুমায়ুন দিলাবর রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বলেন, ইমরান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। ইমরান খান ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুয়ো হিসাব নির্বাচন কমিশনে পেশ করেছিলেন। আদালতে তাঁর দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে। তাই ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৭৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী তাঁকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে নিম্ন আদালতের এই নির্দেশের পর কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তেহরিক-ই-ইনসাফ। দলের টুইটার হ্যান্ডেলে তেহরিক-ই-ইনসাফের মুখপাত্র নিম্ন আদালতের এই নির্দেশকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত’ বলে নিন্দা করেছেন। নিম্ন আদালতের বিচারক হুমায়ূন দিলাওয়ারের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে তেহরিক-ই-ইনসাফ ইতিমধ্যেই হাইকোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তোশাখানা মামলায় নিম্ন আদালতের এই নির্দেশ পাকিস্তানের ‘বিচারব্যবস্থার উপর এক কালো ছাপ’ বলে মনে করছে ইমরানের দল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here