প্রদীপ দে, পেট্রাপোল: অবশেষে অনুমতি মিলেছে ৷ পুজোর সময় পদ্মার ইলিশ পড়বে বাঙালির পাতে ৷ বাঙালির এই প্রিয় খাবার নিয়ে রীতিমতো শঙ্কার মেঘ তৈরি হয়েছিল। তবে শেষমেশ দরাজ মনে ইলিশ পাঠাতে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ। কলকাতা ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের আবেদনকে ফেলতে পারেনি শেখ হাসিনার দেশ। পুজোর আগেই বাংলা তথা ভারতে ঢুকবে ৫ হাজার টন ইলিশ।
আজই অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশের মৎসদপ্তর বলে জানান, ভারত-বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী তথা সিদ্ধেশরী এন্টার প্রাইজ -এর কর্ণধার রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ৷ তিনি আরও বলেন, ওপার বাংলার ইলিশ আমদানির ক্ষেত্রে প্রায়োজনীয় বাংলাদেশের অনুমতি পত্র আজই আমরা হাতে পেয়েছি ৷ এখন প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে সব কিছু ঠিক থাকলে আজ বুধবার রাতের মধ্যেই ইলিশ ঢুকতে শুরু করবে পেট্রাপোল সীমান্তের স্থল বন্দর দিয়ে ৷ বৃহস্পতিবার অর্থাৎ আগামীকাল পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা সহ বিভিন্ন বাজারে সেই রুপোলি শস্য পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী সীমান্ত ব্যবসায়ীরাও৷
গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় সচিবালয়ে এই তথ্য জানান সংশ্লিষ্ট দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, “গত বছর আমরা পাঁচ হাজার টন ইলিশ ভারতে পাঠিয়েছিলাম। এই বছরও সেই পরিমাণ ইলিশই রফতানি করা হবে।” যদিও বাংলাদেশের বাজারে এর জন্য আলাদা করে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই জানান তিনি।
এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা ইলিশ নিয়মিত দিই না। কিন্তু, দুর্গাপুজোয় বহু বাঙালি ইলিশ খেতে থাকেন। তাঁদের জন্য আমরা এই উৎসবে ইলিশ পাঠিয়ে থাকি। ঠিক যেমন আমের মরশুমে আম। উৎসবের সময় ১৫ দিনের জন্য তাই ইলিশ রফতানিতে সম্মতি দেওয়া হচ্ছে।”
জানা গিয়েছে, ভারতে ইলিশ রফতানির জন্য অনুমোদন চেয়েছিল ১০০টি সংস্থা। তাদের মধ্যে ৯৬টি সংস্থাকে ইলিশ রফতানির জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে যাতে ইলিশের দাম নাগালের বাইরে না চলে যায় সেজন্য অন্যান্য দেশে রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে সরকারের। কিন্তু, এপার বাংলায় বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে সেই নিয়ম কিছুটা শিথিল করেছেন হাসিনা।
গত ১ সেপ্টেম্বর কলকাতা ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ইলিশ আমদানির জন্য বাংলাদেশের উপহাইকমিশনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। এরপর গত ৪ সেপ্টেম্বর তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পোঁঁছয়৷
২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে দুই হাজার ৯০০ টন ইলিশ ভারতে রফতানির জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। যদিও রফতানি করা হয়েছিল মাত্র এক হাজার ৩০০ টন।
প্রসঙ্গত, ইলিশের দাম বছরভরই আকাশছোঁয়া থাকে।
আর সেই কারণেই তা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে থাকে বেশিরভাগ সময়।পুজোর সময় প্রত্যেক বাঙালিই চান পাতে যেন সুস্বাদু এই মাছ পড়ে।
বাংলাদেশ থেকে ইলিশ ঢুকলে দেশের বাজারে ইলিশের চাহিদা অনেকটাই মিটবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর শুধু তাই নয়, দামও অনেকটাই কমবে বলে দাবি করছেন বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এবার বাংলার মৎস্য ব্যবসায়ীদের মুখে এই খবরে চওড়া হাসি ফুটেছে।