দেশের সময়, কলকাতা: কলকাতা বিমানবন্দরে ভয়ঙ্কর আগুন । দাউ দাউ করে জ্বলল আগুন। বিমানবন্দরের তিন নম্বর প্রস্থান গেটের কাছে বুধবার রাত ৯টার কিছু পরে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, যে জায়গা সিকিউরিটি চেকিং হয়, তার কাছেই আগুন লাগে। নিমেষে গোটা বিমানবন্দর চত্বর সাদা ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। 

আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের কর্মীরা ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় দমকলে। প্রথমে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে আরও একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছেছে বলে জানা যাচ্ছে। দমকলের চারটি ইঞ্জিন দিয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে আগুন নেভানোর কাজ। শেষ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে এখনও কিছু কিছু জায়গায় ‘পকেট ফায়ার’ জ্বলছে বলে জানা যাচ্ছে।

https://twitter.com/musafir_cr7/status/1669012544378523654?t=NGQ9bBFIbeCBi6ESP6URJA&s=19

কলকাতা বিমানবন্দর থেকে যাত্রীদের বেরেনোর একাধিক গেট। জানা গেছে, ৩ সি গেটের সামনে যে বেল্ট রয়েছে, রাতে সেই বেল্টেই আগুন লেগে যায়। আগুন বড় আকার নিয়েছে। ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে। বিমানবন্দরের ভেতর নতুন টার্মিনাল কালো ধাঁয়ায় ভরে গেছে। আতঙ্ক ছড়িয়েছে যাত্রীদের মধ্যে। জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে সব যাত্রীদের বের করে দেওয়া হয়েছে। গোটা চত্বর ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও সিআইএসএফ। বিমান ওঠানামায় কোনও প্রভাব পড়েছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি।

বিমানবন্দর সূত্রে খবর, ডোমেস্টিক ডিপারচারের সিকিউরিটি কাউন্টারের ১৫ নম্বর কাউন্টারে আগুন লেগে যায়।  কিছুক্ষণের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে আগুন। মুহূর্তের মধ্যে ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারিদিক। বিমানবন্দরের সিকিওরিটি চেকিংয়ের জায়গায় কড়া নিরাপত্তা থাকে। সেখানে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন যাত্রীরা। আগুন ছড়িয়ে পড়তে দেখে আতঙ্ক ছড়ায়। দৌড়োদৌড়ি শুরু করে দেন যাত্রীরা। তড়িঘড়ি বিমানবন্দরের তরফে দমকলে খবর দেওয়া হয়। আগুন লাগার পর, সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে যাত্রী এবং কর্মীদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ডোমেস্টিক এবং ইন্টারন্যাশনাল ডিপার্চার খালি করা হয়। নতুন করে যাতে আগুন না ছড়ায়, খেয়াল রাখা হয় সেদিকে। 

কলকাতা বিমানবন্দর হল দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিমানবন্দর। সর্বক্ষণ যাত্রীদের আসা-যাওয়া লেগে থাকে বিমানবন্দরে। আর সিকিউরিটি চেকিং-এর সামনেও সবসময়ই কম বেশি ভিড় থাকে যাত্রীদের। হঠাৎ করে সিকিউরিটি চেক পয়েন্টের সামনে এভাবে আগুন লেগে যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বিমানবন্দরে উপস্থিত যাত্রীরা। ভয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় বিমানযাত্রীদের মধ্যে। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, যাত্রীদের সকলে নিরাপদে সেখান থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কলকাতা বিমানবন্দরের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা বেশ উন্নত মানের। সেই দিয়েই প্রাথমিকভাবে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। পরে দমকল বাহিনী গিয়ে আগুন নেভানোর কাজে নামে।

দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু জানাচ্ছেন, ‘আমাদের কাছে একটি আগুন লাগার খবর আসে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই। দমকলের চারটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।’ কলকাতা বিমানবন্দরের মতো একটি এত গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে আগুন লাগায় কি যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে না? বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী বললেন, ‘এটি ভাল করে দেখা এয়ারপোর্ট অথরিটির। যেখানে এত লোক যাতায়াত করেন, সেখানে এই বিষয়গুলি ভাল করে দেখা উচিত তাঁদের।’ তবে আগুন লাগার প্রকৃত কারণ তদন্তের পরই জানা যাবে বলে মনে করছেন তিনি।

কীভাবে আগুন লাগল তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান।বিমানবন্দরের পাঁচটি এবং দমকলের চারটি ইঞ্জিন ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাত ৯টা ২০ নাগাদ বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর ৩-এ গেটের কাছে চেকিংয়ের জায়গায় ১৬ নম্বর ডিপার্চার কাউন্টারের পাশ থেকে হঠাৎ ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বিমানবন্দর চত্বরে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here