দ্বিতীয়বার মা হওয়ার খুব অল্প দিনের মধ্যেই কাজে ফিরলেন শুভশ্রী। বুদ্ধদেব গুহর জনপ্রিয় উপন্যাস ‘বাবলি’ – অবলম্বনে তৈরি নতুন এই ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন। মাতৃত্ব সামলে তিনি বেশ কিছুদিন হলো কাজে মন দিয়েছিলেন। গোটা জানুয়ারি জুড়েই চলছিল ছবিটির প্রস্তুতি পর্ব। আসলে ছবির পরিচালনা ও প্রযোজনা উভয় দিকই সামলাচ্ছেন রাজ চক্রবর্তী, তাই রাজ ঘরণী হিসেবে দায়িত্ব একটু বেশি নিতে হচ্ছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে সম্প্রতি একরত্তি ইয়ালিনি ও তিন বছরের ইউভানকে রেখে রাজ- শুভশ্রী দুজনে পাড়ি দিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গে। সেখানেই গোটা টিম নিয়ে ছবিটির একপ্রস্থ শুটিং সারলেন। এই ছবিতে প্রথমবার আবির চট্টোপাধ্যায় ও শুভশ্রীকে জুটি বাঁধতে দেখা যাবে। এর পূর্বে রাজের পরিচালনায় ‘ পরিণীতা ‘, ‘হাবজি গাবজি’ ‘ধর্মযুদ্ধ’ – এর মতো একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন শুভশ্রী। আগের ছবিগুলো যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছিল তাই তাদের নতুন ছবি নিয়েও দর্শকরা বেশ আগ্রহী।
এত ব্যস্ততার মধ্যেও শুভশ্রীর মুখোমুখি হওয়া গেল আর তখনই অভিনেত্রীর মুখ থেকেই জানা গেল অনেক অজানা কথা। প্রথমেই জানতে চাওয়া হয় একদিকে অভিনয় আর অন্যদিকে দুজন বাচ্চার দায়িত্ব, এই দুই দিক সামলাতে অসুবিধা হচ্ছে না? শুভশ্রীর স্পষ্ট জবাব, ” আমি সবসময়ই গোটা পরিবারের সাপোর্ট পেয়েছি, তাই আমার যে কোন প্রয়োজনে পরিবার আমার পাশে থাকে। তবে আমি অত প্ল্যান করে বাচ্চাদের জন্য কোন কাজ করি না। যেমন- সকালে হয়তো ইউভান স্কুলের জন্য রেডি হচ্ছে আর ইয়ালিনি বিছানায় শুয়ে হাত- পা ছুঁড়ে খেলছে, বাচ্চাদের এই সুন্দর মুহূর্তগুলো আমি খুব উপভোগ করি। তাই ওদের কাজটা প্রয়োজন অনুসারেই হয়ে যায়।”
সামনেই ভোট আসছে তখন রাজ চক্রবর্তী ব্যস্ত হয়ে পড়লে কাজের সমস্যা হবে না ? এবার অভিনেত্রী বলেন, ” আমাদের প্রফেশনের একটা সুবিধার আছে যে নিজেরা শিডিউল ঠিক করতে পারি তাই যদি সে রকম পরিস্থিতি হয় তবে আমি কিছুদিন কাজ বন্ধ রাখবো। আবার আমার কাজের চাপ বেশি হলে রাজও ছুটি নেবে।” আপনার অভিনীত ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল ‘ ওয়েব সিরিজ দর্শকদের কাছে দারুণ প্রশংসিত হয়েছে, এ ধরনের একটি চরিত্র করার আগে নিজেকে কি ভাবে তৈরি করেছিলেন? শুভশ্রীর উত্তর,” ইন্দুবালা নিজে থেকে আমার কাছে এসেছে, আমি কাউকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে চরিত্রটি তৈরি করি নি। শুধুমাত্র চিত্রনাট্য খুব ভালো করে অনুসরণ করে আমি ইন্দুবালাকে সৃষ্টি করেছি। যখন নতুন একটা চরিত্র করি তখন আমি পুরোপুরি তারমধ্যে নিজেকে সঁপে দিই। চলাফেরা করা, ঘরের কাজ, বাইরে বেরোনো দৈনন্দিন কাজের প্রতিটি মুহূর্তেই আমার ভাবনা সেই নতুন চরিত্রকে ঘিরেই থাকে। ইন্দুবালার ক্ষেত্রেও আমি তিলে তিলে ইন্দুবালাকে সৃষ্টি করেছিলাম।”
ইন্দুবালার মতো চরিত্রে ভবিষ্যতেও আপনাকে দেখা যাবে ? শিল্পী জানান, ” ইন্দুবালা হলো ওয়ান টাইম আর্কাইভ, ভবিষ্যতে এ ধরনের চরিত্র এলে অন্য একটা চরিত্র সৃষ্টি হবে। আমার অভিনীত প্রত্যেকটি চরিত্রই স্বতন্ত্র, একজনের সঙ্গে অন্যজনের কোন মিল নেই। যেমন- আমার প্রিয় চরিত্র ‘পরিণীতা’ ছবির মেহুল, এই চরিত্রটির কথা বলা, হাঁটাচলা প্রতিটি গতিবিধির সঙ্গে অন্য কোন চরিত্রেরই মিল খুঁজে পাওয়া যাবে না।” কোন ধরনের ছবিতে এখন আপনাকে বেশি দেখা যাবে ? এ ব্যাপারে অভিনেত্রী বললেন, ” যে কোন ছবিই ব্যবসা করতে চায়, শিল্পী হিসেবে চাইবো একটা ভাল চরিত্র করতে। তাই আমি সবসময় গুরুত্ব দিই ছবির চরিত্র এবং চিত্রনাট্যের ওপর। এই দুটো দিক পছন্দ হলে তবে যে কোন ছবিতেই আমি রাজি।” আপনার নতুন ছবি ‘বাবলি’ – র কথা কিছু বলুন। বুদ্ধদেব গুহর বাবলি একটু উত্তেজিত হয়ে বলেন, ” খুব চ্যালেঞ্জিং একটা চরিত্র। বাবলির জন্য অনেক দিন ধরে নিজেকে নানা ভাবে তৈরি করেছি। ভবিষ্যতে হয়তো এটাও একটা আমার অন্যতম প্রিয় চরিত্র হতে চলেছে। আমি এই মুহূর্তে শুধু বাবলির মধ্যেই ডুবে আছি, তবে বাকী সময়টা অবশ্যই আমার পরিবার, বিশেষত সন্তানদের জন্যই !”