দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ ফুটবল জ্বরে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। দীর্ঘ একমাসের ফুটবল সংগ্রাম শেষে বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা। কাতারের লুসেল স্টেডিয়ামে মেসি-এমবাপে দ্বৈরথ। সোনার ট্রফির লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসবেন কে, তার জবাব মিলবে আজই। কাতারের উত্তাপ পৌঁছেছে ভারতের কোণা কোণায়ও। আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের সমর্থনে সেজে উঠেছে পাড়ার অলিগলিও। এই আবহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখেও ফুটবল বিশ্বকাপ প্রসঙ্গ। রবিবার তিনি মেঘালয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেই জনসভাতেই বক্তৃতা দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ভারত একদিন ফিফা বিশ্বকাপের মতো অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।

মোদী এদিন জনসভায় বলেছেন,’আজ দুই দেশ কাতারে বিশ্বকাপ (ফাইনাল)খেলছে। কিন্তু নিশ্চয়তার সঙ্গে বলছি যে, ফিফা বিশ্বকাপের মতো প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে ভারত। তেরঙ্গার জন্য উল্লাস করব তখন।’ এ দিন বিজেপির তরফেও এই বক্তব্য নিয়ে টুইট করা হয়েছে। রবিতে মোদীর এই প্রতিশ্রুতিতে উচ্ছ্বাস ভারতবাসীর মধ্যেই। বিশ্বকাপের ফাইনাল ঘিরে তীব্র উন্মাদনা সারা বিশ্ব জুড়ে। সেই জোয়ারে ভাসছে ভারতও। তারই মধ্যে মোদীর এই ঘোষণা নিশ্চিত ভাবেই দেশবাসীকে আপ্লুত করছে।

পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন ‘লালকার্ড’-এর প্রসঙ্গ পাড়লেন। আজ শিলংয়ে উত্তর-পূর্ব আঞ্চলিক পর্ষদের সভায় প্রধানমন্ত্রী রাজনীতির ময়দানে লালকার্ড ব্যবহারের কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, গত আট বছরে তাঁর সরকার দুর্নীতি, স্বজনপোষন, বিভাজন এবং হিংসার রাজনীতিকে লালকার্ড দেখিয়েছে।


এ বছর স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে দেওয়া ভাষণেও প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন দুর্নীতির শেষ দেখে ছাড়বেন। আজ শিলংয়ের সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেন তিনি।


নর্থ ইস্টার্ন কাউন্সিল হল উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের নোডাল সংস্থা যা আটটি রাজ্য অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম এবং ত্রিপুরা নিয়ে গঠিত। ১৯৭১ সালে সংসদের একটি আইন বলে গঠিত হয় উত্তর পূর্ব পর্ষদ। প্রধানমন্ত্রী হলেন পর্ষদের চেয়ারম্যান। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’ও উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, অতীতে বারে বারে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে বিভাজন তৈরির চেষ্টা হয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় এসে এই অঞ্চলকে বিভাজনের রাজনীতি থেকে বের করে এনেছে। প্রসঙ্গত, অসম, ত্রিপুরা, মণিপুর, অরুণাচল সহ উত্তর-পূর্বের বেশিরভাগ রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায়। প্রধানমন্ত্রী এই এলাকায় উন্নয়নের গতি ফেরার কথা বলেন। আজ শিলং থেকে তিনি উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির জন্য গুচ্ছ সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করেন।

এই অঞ্চলের আটটি রাজ্যকে অষ্ট লক্ষ্মী (ধনের দেবীর আট রূপ) হিসাবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তর-পূর্বের উন্নয়নের জন্য সরকারকে আটটি স্তম্ভকে ভিত করে কাজ করছে। সেগুলি হল, শান্তি, শক্তি, পর্যটন, ৫জি সংযোগ, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক কৃষি, খেলাধুলা এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা।

তিনি বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব আমাদের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার এবং সমগ্র অঞ্চলের উন্নয়নের কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। এই অঞ্চলের সমস্ত সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করতে, ভারত-মায়ানমার-থাইল্যান্ড মিলে মহাসড়ক তৈরির পথে এগচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সময় অনেক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, আন্তঃরাষ্ট্রীয় সীমানা চুক্তি করা হয়েছে এবং চরমপন্থী কার্যকলাপ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আজ তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেন, কীভাবে ২০১৪-র পর উত্তর-পূর্ব বদলে গিয়েছে। তিনি বলেন, গত আট বছরে, এই অঞ্চলে বিমানবন্দরের সংখ্যা নয় থেকে বেড়ে ষোলো হয়েছে। ২০১৪-র আগে ফ্লাইটের সংখ্যা ছিল নয়শো। এখন তা বেড়ে হয়েছে উনিশশো। এই অঞ্চলের অনেক রাজ্যে রেলপথের বিস্তার ঘটেছে। ২০১৪-র পর জাতীয় সড়কের দৈর্ঘ্য ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here