দেশের সময় , কলকাতা: শুধু সন্দেশখালি নয়, বনগাঁতেও তৃণমূলের একাংশ অনুগামীর আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছিল ইডির আধিকারিকদের। তবে সন্দেশখালির মতো ভয়াবহ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেনি। জখম হতে হয়নি তদন্তকারী অফিসারদের। কিন্তু এ ব্যাপারে সাত সকালে পুলিশকে ইনফর্ম করা সত্ত্বেও ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স কেন পাঠানো হল না, সোমবার রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে এই প্রশ্ন তুলল ইডি।

প্রেস বিবৃতিতে ইডি-র দাবি, ঘটনার দিন অর্থাৎ শুক্রবার সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে তল্লাশি অভিযানের বিষয়ে ইমেল মারফৎ বনগাঁ থানার পুলিশকে জানানো হয়েছিল। এমনকী বিকেল ৪টে নাগাদ এ ব্যাপারে পুলিশ সুপারের সঙ্গে ফোনেও যোগাযোগ করেন তদন্তকারীরা। এসপির কাছে ইডি আধিকারিকদের জন্য পর্যাপ্ত  নিরাপত্তা চাওয়া হয়। কিন্তু পুলিশের দেখা মেলেনি।

উল্টে তল্লাশি অভিযানস্থলে অর্থাৎ বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যের বাড়ির সামনে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বড় জমায়েত হয়। এমনকী রাতে শঙ্করকে গ্রেফতার করে গাড়িতে তোলার সময় ইডি ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর হামলার ঘটনা ঘটে বলে প্রেস বিবৃতিতে দাবি তদন্তকারী সংস্থার।

হামলার ঘটনায় জওয়ান বা তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা জখম না হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল গাড়ি। হামলার বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখনও এফআইআরের প্রতিলিপি ইডি হাতে পায়নি বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে। সন্দেশখালির হামলার ঘটনাতেও ন্যাজাট থানার তরফে ইডিকে এফআইআরের প্রতিলিপি দেওয়া হয়নি বলেও দাবি ইডির।

শুক্রবার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে তল্লাশি অভিয়ানে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিল ইডির অফিসাররা। মাথা ফেটেছিল তিন অফিসারের। আক্রান্ত হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও। ঘটনার পর রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস থেকে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

সন্দেশখালিতে ইডির অফিসারদের উপর হামলার ঘটনার পরই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু পুলিশের ভূমিকায় সন্তুষ্ট নয় ইডি। ইডির তরফে একাধিক গুরুতর ধারায় অভিযোগ জানানো হয়েছিল পুলিশের কাছে। তালিকায় ছিল ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় খুনের চেষ্টা, ৩৩৩ ধারায় সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জখম করার মতো ভয়ঙ্কর অভিযোগও। কিন্তু পুলিশের দায়ের করা এফআইআর থেকে সেই সব ধারা বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি বেশিরভাগই জামিনযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এমনকী এফআইআর কপিও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দেওয়া হয়নি বলে জানানো হয়েছে ইডির প্রকাশ করে প্রেস বিবৃতিতে।

ইডির এদিনের বিবৃতিও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলল। যদিও এ ব্যাপারে বনগাঁ পুলিশ জেলার এসপি জয়িতা বসুর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এদিনই দুপুরে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার জানিয়েছেন, “আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। কাউকে রেয়াত করা হবে না।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here