দেশের সময় , কলকাতা: রাজ্যে আর্থিক সংকট তীব্র। তার মধ্যেই দুর্গাপুজো কমিটিগুলির জন্য অনুদান আরও ১০ হাজার টাকা করে বাড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷একই সঙ্গে পুজো কমিটিগুলিকে সরকারের বিভিন্ন দফতর বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং দেবে। পর্যটন থেকে শিল্প দফতর সরকারি কাজের হোর্ডং দেবে বারোয়ারি পুজোকে। সেই বাবদও টাকা পাবে পুজো কমিটিগুলি। এই বছর বিসর্জন করতে হবে ২৬ অক্টোবরের মধ্যে। লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন ২৭ অক্টোবর হবে পুজোর কার্নিভ্যাল।
পঞ্জিকা মেনে এ বার উমা আসবেন দেরিতে। ২ কার্তিক ষষ্ঠী। তবে মঙ্গলবার, ৫ ভাদ্র দুর্গাপুজোর তার আগেই আগমনী সুর বাজিয়ে দিলেন মমতা ৷
দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে গত বছর ৬০ হাজার টাকা করে চাঁদা দিয়েছিল রাজ্য সরকার। এ বার সেটাই ১০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৭০ হাজার টাকা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। হিসাব মতো গত বছর রাজ্যের ৪৩ হাজারের কিছু বেশি পুজো কমিটিকে অনুদান দিয়েছিল সরকার। এ জন্য খরচ হয়েছিল ২৪০ কোটি টাকা। এ বার সেই খরচ বেড়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিন অনুদান ঘোষণা করতে গিয়ে মমতা বলেন, “অনুদান ঘোষণা করলে তো আবার কোর্টে চলে যাবে কেউ কেউ। আমি জানি কিছু কিছু আরশোলা বসে আছে বাইরে। বলবে আমরা ক্লাবগুলোকে কিনতে চাইছি। কালকেই জনস্বার্থ মামলা ঠুকে দেবে”।
অনুদানের কারণ ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা টাকাটা এই কারণে দিই যে ক্লাবগুলো সরকারের প্রকল্পগুলির প্রচার করে। মানুষের সচেতনতা বাড়াতে প্রচার করে। প্রথমে আমরা শুরু করে ছিলাম ২৫ হাজার টাকা দিয়ে। কোভিডের কারণে ক্লাবগুলো সংকটে পড়েছিল। তাই ২০২১ সালে আমরা দিয়েছিলাম ৫০হাজার টাকা করে। তার পর গত বছর ৬০ হাজার টাকা করে দিয়েছিলাম। এখন কোভিড নেই। এবার তাহলে হাফ করে দিই?”
মুখ্যমন্ত্রী এ কথা বলতেই নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়াম জুড়ে ‘না দিদি না দিদি’ বলে ক্লাব কর্তারা হই হই শুরু করে দেন। মমতা তখন ফের হেসে বলেন, “হাফ করে দিই এবার? তাহলে ওই কথাই রইল। পুজো কমিটিগুলো এবার ৭০ হাজার টাকা করে অনুদান পাবে”। মমতা এই ঘোষণা করতেই হাততালিতে ফেটে পড়ে নেতাজি ইনডোর।
এখানেই শেষ নয়, মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিল বাবদ পুজো কমিটিগুলিকে মাত্র এক তৃতীয়াংশ মাশুল দিতে হবে। আর দমকলের জন্য কোনও টাকা দিতে হবে না। আর এই অনুদান ছাড়া পরিবহণ, পর্যটন ও ক্রেতা সুরক্ষা দফতর গুলি বিজ্ঞাপন পায় প্রতিবছর। এবারও তা পাবে।
সোমবার ইমাম-মোয়াজ্জেমদের সভায় গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেও তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে ইমাম ও পুরোহিতদের জন্য মাসিক ভাতা ৫০০ টাকা করে বাড়ানো হবে। তা নিয়ে ইতিমধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে। তার জবাব দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ইমামরা সরকারের অনেক কর্মসূচি রূপায়ণে সাহায্য করেন। পালস পোলিও, টীকাকরণে সরকারের পাশে থাকেন ওঁরা। মানুষকে সচেতন করতে ভূমিকা নেন। আর পুরোহিতরা অনেকেই গরিব। তাঁদের অবস্থা ভাল নয়। সেই কারণেই ভাতা বাড়ানো হয়েছে।