সঙ্গীতা চৌধুরী, কলকাতা : অপেক্ষা দীর্ঘতর হয়েছে এ বছর। আকাশ জুড়ে শরতের মেঘ চোখে পড়ছে যদিও। তবে পুজো পুজো গন্ধ অনুপস্থিত বাতাসে। কারণ অন্য বছরের তুলনায় এবছর শারদোৎসব পিছিয়েছে। তবে খুব বেশি দেরিও নেই আর। পুজো শুরু হতে বাকি নেই দু’মাসও। তার মধ্যেই খুঁটি পুজো দিয়ে শুরু হয়ে গেল বেনিয়াপাড়া সার্বজনীন পুজো কমিটির এ বছরের দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি।
বেনিয়াপাড়া সার্বজনীন পুজো কমিটি তাদের উদ্ভাবনী ধারণা এবং উদযাপন শৈলীর জন্য শহরের অন্যতম নজরকাড়া পুজো হিসেবে পরিচিত। প্রতি বছর তাদের থিমে কিছু না কিছু নতুনত্ব থাকেই। এ বারেও তার অন্যথা হচ্ছেনা।
রবিবার সকালে মহাসমারোহে এবছর দুর্গাপুজোর খুঁটি পুজো আয়োজিত হয়।এই খুঁটি পুজোয় উপস্থিত ছিলেন গায়ক তথা রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ৷
পাশা পাশি ‘বেনিয়াপাড়া সার্বজনীন পুজো কমিটি’ র ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হল এদিন৷ বিগত ২৬ বছর ধরে অত্যন্ত দায়িত্বের সঙ্গে এই সমাজসেবামূলক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে এই পুজো কমিটি। ৯৭ তম বর্ষের এই পুজো কমিটি শুধুমাত্র ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্পই নয়, সারা বছর ধরে আরো নানান ধরনের সামাজিক কাজ করে চলেছে। যেমন- বিনে পয়সায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার ক্যাম্প, চোখ পরীক্ষার পর চশমা বিতরন করা। এছাড়া বস্ত্র ও শীতে কম্বল দেওয়া । এরকম আরো বহু কাজ দীর্ঘদিন ধরে ‘বেনিয়াপাড়া সার্বজনীন পুজো কমিটি’ করে চলেছে।
এদিন শুধু ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্পই নয়, সেই সঙ্গে এবছর দুর্গাপুজোর খুঁটি পুজোও আয়োজিত হয়। এ বছরের পুজো প্রসঙ্গে পুজো কমিটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রবীন্দ্রনাথ দাস জানালেন, ” আমাদের এ বছরের পুজোর থিম হল ‘আদি’। আসলে এর দ্বারা আমরা বোঝাতে চেয়েছি যে, প্রকৃতি হল ‘আদি’। উদ্ভিদজগত , মানবজগত সহ সমগ্র প্রাণীজগতের উৎপত্তি এই প্রকৃতির গর্ভ থেকেই। অথচ সেই প্রকৃতি আজ বিপন্ন। নিয়মিত বৃক্ষছেদন নষ্ট করছে প্রকৃতির জীবজগতের ভারসাম্য। বৃক্ষ ‘আদি’- প্রাণশক্তির উৎপত্তিস্থল। তাই আমরা চাই মায়ের আগমন চেতনার সৃষ্টি করুক সকলের মনে। স্বার্থপরতা ত্যাগ করে, ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা রক্ষা করবো প্রকৃতিকে, বৃক্ষকে, আমাদের ‘আদি’ কে।”
২০২২ সালে এই পুজো কমিটি ‘মেয়র চয়েস অ্যাওয়ার্ড কলকাতা শ্রী’ সন্মানে ভূষিত হয়। আশা করা যাচ্ছে এ বছরও ‘বেনিয়াপাড়া সার্বজনীন পুজো কমিটি’-র আবারও বিশেষ কোন সন্মানে সম্মানিত হবে।