দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পূর্ব ঘোষণা মতোই চলতি মাস থেকে চালু হয়ে যাচ্ছে দুয়ারে রেশন । মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে রাজ্যে চালু হবে দুয়ারে রেশন। ইতিমধ্যেই খাদ্য ও বন্টন বিভাগে এই বিষয়ে বিস্তারিত কাজ শুরু করে দিয়েছে। যদিও দুয়ারে রেশন নিয়ে আপত্তি ছিল ডিলারদের একাংশের ৷ বারবার তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আদালত তাদের আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। শেষমেষ রাজ্যে চালু হবে এই প্রকল্প ।

‘দুয়ারে নয়, দোকানে রেশন’, পাল্টা প্রচার শুরু করেছিল রেশন ডিলারদের জয়েন্ট ফোরাম৷ সংগঠনের বক্তব্য, সেপ্টেম্বর মাসে ১৫ শতাংশ পাইলট প্রজেক্টের মাধ্যমে তারা অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেই কাজ করতে গিয়ে নানা ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদের। বাড়িতে রেশন নেওয়ার ব্যাপারে গ্রাহকরা অনেকেই অনীহা প্রকাশ করেছেন ৷

পাইলট প্রজেক্ট দীর্ঘদিন ধরে চলতে পারে না। এই প্রকল্প কার্যকর করা সম্ভব নয়। কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জয়েন্ট ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের অভিজ্ঞতা হল অতিরিক্ত ব্যয়ভার এবং অন্যান্য হয়েছে, সেগুলি যথাযথ হিসেব নিকেশ করে আমাদের ন্যায্য প্রাপ্যটুকু অবিলম্বে দিয়ে দেওয়া হোক।’’ তবে কিভাবে কাজ হবে তা নিয়ে আগামিকাল, বুধবার রেশন ডিলারদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ।

বিশ্বম্ভরবাবু অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘যারা শারীরিক ভাবে সক্ষম নয়। তাদের রেশন দিতেই আমরা বাড়িতে যাব। নচেৎ নয়।’’ রাজ্য অবশ্য সকলের দুয়ারেই রেশন দিতে আগ্রহী। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই চালু হওয়ার কথা দুয়ারে রেশন প্রকল্প। পাইলট প্রজেক্ট হিসাবেই কাজ শুরু করছে রাজ্যের দুয়ারে রেশন প্রকল্প। তবে বেশ কিছু বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি বলেই জানাচ্ছেন রেশন ডিলারদের সংগঠন। এরই মধ্যে প্রতি কুইন্টালে ৫০ টাকা কমিশন বাড়াল রেশন ডিলারদের সংগঠন। বায়োমেট্রিক করতে হলে মিলবে আরও ২৫ টাকা কুইন্টাল প্রতি। এখন কমিশন মেলে প্রতি কুইন্টালে ৭৫ টাকা করে৷ ডিলারদের দাবি ছিল সব মিলিয়ে ২০০ টাকা। সেটি হয়েছে আপাতত ১২৫ টাকা।

রাজ্য সরকার নোটিফিকেশন জারি করে এই বিষয়ে জানিয়ে দিয়েছে। তবে কমিশন বাড়লেও এখনও তা মনঃপূত নয় রেশন ডিলারদের সংগঠনের।দুয়ারে রেশন, অর্থাৎ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে রেশন। কিন্তু এই কাজ করতে গিয়েই দরকার রেশন ঘরে ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্যে গাড়ি। আর এই গাড়ি কেনার জন্যে অর্থ কে দেবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে মতান্তর।

রেশন ডিলার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানিয়েছেন, ‘‘ব্যাঙ্ক থেকে ধার করা টাকায় গাড়ি কিনব না। প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা খরচ করে আমাদের পক্ষে গাড়ি কেনা সম্ভব নয়।’’ ডিলারদের এই বক্তব্য মানতে নারাজ খাদ্য মন্ত্রী রথীন ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘রাজ্য সরকার গতিধারা প্রকল্পের আওতায় এক লক্ষ টাকা দিচ্ছে। সেই টাকায় গাড়ি কেনানোর ব্যবস্থাও রাজ্য সরকার করে দেবে। আর বাকি টাকা দিয়ে যিনি গাড়ি নেবেন তিনি তো তার মালিক হয়ে যাবেন। রেশন সরবরাহের পাশাপাশি সেই গাড়িকে অন্য সময়ে তিনি কাজে লাগাতে পারবেন। আমরা তো সেই কাজে বাধা দিতে যাব না।’’

দুয়ারে রেশন চালু হলেও ভৌগোলিক কারণে তা চালু করা হবে না পাহাড়ের দুই জেলায়। এমনকী, সুন্দরবনের ব-দ্বীপের একাংশেও তৈরি হয়েছে অসুবিধা ৷  তবে যেখানেই পণ্য সরবরাহ করা হোক না কেন, পণ্য মেপে, ই-পস মেশিনে নথিভুক্ত করে তবেই তা দেওয়া হবে গ্রাহকদের। ডিলারদের একাধিক বক্তব্য থাকলেও রাজ্যের খাদ্য দফতরের কথায়, আগে শুরু হোক প্রকল্প। তার পরেই বোঝা যাবে সমস্যা কোথায় হচ্ছে। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘মাঠে নেমে আগে কাজ শুরু হোক। তারপরেই তো কোথায় কোথায় সমস্যা হচ্ছে তা বোঝা যাবে। শুধু সমস্যাই দেখতে গেলে কোনও কাজ হবে না।’’ তাই চলতি মাসেই রাজ্যের প্রায় ৩১০০ ডিলারদের নিয়ে চালু হবে দুয়ারে রেশন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here