দেশেরসময়,বনগাঁ: বনগাঁ মহকুমার একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিদের তপসিলি জাতি ও উপজাতির শংসাপত্র ভুয়ো। এমনই অভিযোগ তুলে বনগাঁ মহকুমা শাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিল অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের বনগাঁ শাখার সদস্যরা। শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ এক নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে মতুয়া এবং একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা মিছিল করে মহকুমা শাসকের দফতরে আসেন। মহকুমা শাসকের কাছে ডেপুটেশন জমা দেন।
তাঁদের দাবি, বনগাঁ পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেসের কাউন্সিলর ঋতুপর্ণা আঢ্য, প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য, বনগাঁ পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অমিতাভ দাস, বনগাঁ উত্তর বিধানসভার ২০২১ সালের প্রার্থী পীযূষ কান্তি সাহা, বাগদার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী পরিতোষ সাহার জাতি শংসাপত্র ভুয়ো। এ বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের আরও দাবি, বিভিন্নভাবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তপসিলি শংসাপত্র সংগ্রহ করেছেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। সে ক্ষত্রে প্রকৃত অর্থের তপশিলি জাতির মানুষদের শংসাপত্র পেতে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের জয়েন্ট সেক্রেটারি মনোজ টিকাদার বলেন, “আমরা বেশকিছু দিন ধরে দেখছি আমাদের অঞ্চলে তপসিলি জাতি এবং উপজাতির বহু বেআইনি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। ওই সমস্ত ব্যক্তিরা তাঁদের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ওই সমস্ত শংসাপত্র বের করে নিয়েছেন। আমাদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের সিপিএম, তৃণমূলের অনেক নেতারও এ ধরনের শংসাপত্র পাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এদের সকলের বিষয়ে আমরা সন্দেহ করছি। এর জন্য পুরোপুরি সরকার বাহাদুর দায়ি।”
ল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের পক্ষ থেকে আইনজীবী প্রসেনজিৎ বিশ্বাস বলেন, “তপসিলি সম্প্রদায়ের মানুষ নয়, অথচ তাঁরা এই সম্প্রদায়ের শংসাপত্র গোপনভাবে ব্যবহার করে কেউ কাউন্সিলর হচ্ছে, কেউ বিধায়ক ভোটে দাঁড়াচ্ছে। কেউ জিতেছে, কেউ হেরে আছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ।”
এ বিষয়ে বনগাঁ পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য জানান, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে তাঁরা শংসাপত্র পেয়েছেন। প্রয়োজনে তদন্ত হোক। পীযূষ কান্তি সাহা জানান, সাহাদের মধ্যে সুরি সাহারা এসসি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। আর সেই অনুযায়ী তিনি তপসিলি জাতির শংসাপত্র পেয়েছেন। কিন্তু, তারপরেও কেন এই অভিযোগ উঠছে তিনি জানেন না।
এই বিষয়ে বনগাঁ পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমিতাভ দাস বলেন, “আমরা যখন নমিনেশন সাবমিট করেছিলাম সেই সময় সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন হয়েছে। যদি নকল সার্টিফিকেট হত তাহলে তখন ধরা পড়ত।”
বিজেপি নেতা দেবদাস মন্ডল বলেন, “যাঁরা এই বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করছেন তাঁরাই ভাল বলতে পারবেন। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তদন্ত করে দেখা উচিত। যারা এইভাবে সার্টিফিকেট নিয়েছেন বা যাঁরা দিয়েছেন তাঁদের শাস্তি হওয়া উচিত।”