দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের একাদশ তম সর্বভারতীয় সম্মেলন শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকে ৷

যে সংগঠন থেকে ডিওয়াইএফআই সর্বভারতীয় রূপ পেয়েছিল তা ছিল গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন। সংক্ষেপে ডিওয়াইএফ। ১৯৬৮ সালে তৈরি হওয়া প্রাদেশিক যুব ফেডারেশনের প্রথম সম্পাদক ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য । যুব সংগঠনের সর্বভারতীয় সম্মেলনের প্রথম দিনেই তাঁর শুভেচ্ছা বার্তা গেল সল্টলেকের ইজেডসিসিতে।

ডিওয়াইএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভয় মুখোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠ করেন সম্মেলনে। সেটি এখনও প্রকাশ্যে না এলেও সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভেচ্ছাবার্তায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেছেন, “গোটা দেশে ভয়ঙ্কর পরিস্থতি। সেই পরিস্থিতির মধ্যেই বামপন্থীরা লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। এই লড়াই আন্দোলনকে আরও তীব্র করতে হবে।” সামগ্রিক আন্দোলনে যুব সমাজের যে আলাদা ভূমিকা নিতে হবে তাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বুদ্ধদেববাবু।

সিপিএম সূত্রে খবর, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের একটি অডিও বার্তা ডিওয়াইএফয়ের সর্বভারতীয় সম্মেলনে পৌঁছেছে। কিন্তু তাতে কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি রয়েছে। যে কারণে তা সম্মেলন মঞ্চে শোনানো যায়নি। শুধুমাত্র হাতে একটি কাগজ নিয়ে শুক্রবারের প্রারম্ভিক অধিবেশনে বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা বুদ্ধদেববাবুর সেই বার্তা পাঠ করে দেন অভয় মুখোপাধ্যায়।

বাংলায় ষাটের দশকে বাম ছাত্র আন্দোলন ঐতিহাসিক পর্যায়ে পৌঁছেছিল। প্রয়াত সুভাষ চক্রবর্তী ও শ্যামল চক্রবর্তীদের নেতৃত্বে সেই ছাত্র আন্দোলন সামগ্রিকভাবে বাম গণআন্দোলনকে অন্য গতি পাইয়ে দিয়েছিল। এই বাম আন্দোলনে সুভাষ চক্রবর্তী, শ্যামল চক্রবর্তী, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু ও অনিল বিশ্বাসকে পঞ্চ পাণ্ডব বলা হয়। কারণ এঁরা সবাই ওই উত্তাল রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণের সময়ে বাংলায় ছাত্র-যুব আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

যদিও প্রয়াত শ্যামল চক্রবর্তী তাঁর লেখা বই ‘৬০-৭০ দশকের ছাত্র আন্দোলন’-এ লিখেছিলেন, প্রথম যখন যুব সংগঠন তৈরি হয় তখন সম্পাদক হিসবে তিনি এবং সুভাষ চক্রবর্তী পার্টিতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে বাদ দিয়ে অন্য একজনের নাম প্রস্তাব করছিলেন। কিন্তু বিমান বসু, প্রমোদ দাশগুপ্তকে বলেন যুব সংগঠনের সম্পাদক করা হোক বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। শেষমেশ ডিওয়াইএফের প্রথম সম্পাদক ছিলেন বুদ্ধবাবুই। সভাপতি ছিলেন দীনেশ মজুমদার।

পরে সেই সংগঠন ১৯৮০ সালে সর্ব ভারতীয় রূপ পায়। তৈরি হয় ডিওয়াইএফআই। ঘটনা হল, প্রথম ডিওয়াইএফআইয়ের সম্পাদক ছিলেন হান্নান মোল্লা। যিনি এখন কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক।

এদিন অধিবেশনে তিনিও উপস্থিত ছিলেন। যুব নেতা সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞতা ও এই সময়ে কৃষক নেতা হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা তিনি সারা দেশে বাম আন্দোলনের যুব নেতা নেত্রীদের সামনে তুলে ধরেন। কিন্তু এখনও পশ্চিমবঙ্গের বাম আন্দোলনে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের গুরুত্ব একটা অন্য জায়গায় রয়েছে বলেই মত অনেকের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here