দেশের সময় , কলতালা : গত তিন ধরে বিধানসভায় বি আর আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশে ধর্না দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়করা। রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনার প্রতিবাদে ওই ধর্নায় একদিন সামিল হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর ওই ধর্না থেকেই থালা বাজিয়ে স্লোগান উঠেছে, ‘মোদী-অমিত দুটোই চোর’।
শুক্রবার আবার বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরা আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশ গঙ্গাজল দিয়ে ধুতে নেমে পড়লেন। তাঁর কথায়, ‘চোরেরা বসে’ ওই স্থান অপবিত্র করেছে। তাই গঙ্গাজল দিয়ে ধুতে হবে। দেখা গেল, মাথায় কলসি নিয়ে শুভেন্দু গঙ্গা জল ঢালছেন। তারপর গামছা দিয়ে মুছছেন।
এই আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল বিধায়করা জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছিলেন। সেই সময়ে বিধানসভার সিঁড়িতে বসে ধর্না দিচ্ছিলেন বিজেপি বিধায়করা। জাতীয় সঙ্গীতের সময়ে উঠে না দাঁড়ানোয় বিজেপির ১২ জন বিধায়কের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় এফআইআর হয়েছে। কারণ, তাঁরা জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করেছেন বলে অভিযোগ।
এরই পাল্টা হিসাবে বিজেপি শুক্রবার তরজায় নতুন মাত্রা যোগ করতে চেয়েছে। জানা গিয়েছে, শুভেন্দুর কথা শুনে দলের কেউ পলিথিনের জারে করে গঙ্গার জল আনেন। তার পর পিতলের কলসিতে ভরা হয়। সেই জল দিয়ে আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশ ধোয়া হয়।
পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল-বিজেপির এই তরজা আগামী দিনে আরও বাড়তে পারে। কারণ, লোকসভা ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্থানীয় ভাবে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার সুযোগ নিতে চায় বিজেপি। তারা চায় শুধু কেন্দ্রের সরকারের বিষয়আশয় নয় রাজ্য সরকারের কয়েক জন মন্ত্রী বা নেতার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগও ভোটে ইস্যু হোক। শাসক দলকে চোর প্রতিপন্ন করতে চাইছেন বিরোধী দলনেতা।
সেই কৌশল বুঝে পাল্টা শুভেন্দুর বিরুদ্ধে নারদ কাণ্ডের অভিযোগ তুলে ধরছে তৃণমূল। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের বঞ্চনাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে এও বলছেন, শুভেন্দু আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক আশ্রমে বড় হয়েছেন। তাই তৃণমূলকে তাদের মতো করেই জবাব দিতে চাইছেন। দিলীপ ঘোষ বা সুকান্ত মজুমদারদের পক্ষে তা সম্ভব ছিল না।