সুদীপ্ত দাস,বনগাঁ : “কাজ করুন না হলে পদ থেকে সরিয়ে দেব।” বনগাঁ জেলা তৃনমূলের সাংগঠনিক সভা থেকে বললেন জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস । বনগাঁ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন সভাপতি ও চেয়ারম্যানের ডাকে বনগাঁ নীলদর্পণ অডিটোরিয়ামে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সম্মেলন হয়। প্রধান বক্তা হিসাবে ছিলেন বনগাঁ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস।

সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। দলীয় কর্মীদের পাঠ পড়াচ্ছেন তৃণমূলের প্রথম স্তরে নেতৃত্ব। অর্ন্তদ্বন্দ্ব ভুলে সাংগঠনিক ভিতকে মজবুত করার বার্তা দিচ্ছেন নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে ব্লক ও অঞ্চল নেতৃত্বদের উদ্দেশে বিশ্বজিৎ বললেন, ” অনেক অঞ্চল সভাপতি আছেন পদ নিয়ে বসে আছেন কোন কাজ করেন না। তাঁদের বলছি কাজ করুন না হলে পথ ছেড়ে দিন। তা না হলে পদ থেকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হব।”

তাঁর আরও হুঁশিয়ারি, “কোন নেতাকে ধরে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হওয়া যাবে না। এদিন এই সভাতে এসে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী একই দাবি করেন । তিনি বলেন, “কোন নেতা ধরে টিকিট পাওয়া যাবে না । দল মূল্যায়ন করছে। মূল্যায়নের ভিত্তিতেই পঞ্চায়েতে টিকিট দেওয়া হবে।”


এদিন সভায় বনগাঁ বাগদা ,গাইঘাটা, স্বরূপনগরের বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন অশোকনগর এর বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। বনগাঁর বর্তমান চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান শংকর আঢ্যকে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে৷
এই সভা কে নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি৷

বিজেপি নেতা দেবদাস মন্ডল বলেন, বিশ্বজিৎ বাবু যাই বলুক এখানে তৃণমূলের মধ্যে চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে ৷ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, দলটা চোরের দল ৷ এখানে সব চোরে চোরে মাসতুতো ভাই ৷ বিশ্বজিৎবাবু কর্মীদেরকে অক্সিজেন দিতে এসব বলছেন ।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বনগাঁর নতুন জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “বনগাঁতে নতুন জেলা সভাপতি হওয়ার পরেই আমি বলেছিলাম তৃণমূল কংগ্রেসের কোন গোষ্ঠী কোন্দল নেই । আজ সবস্তরের নেতৃত্বের উপস্থিতিতে তা আবার প্রমাণিত হল।”

প্রসঙ্গত বিশ্বজিতের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েই চরম জলঘোলা। কখনও তিনি নিজেকে বিজেপি বিধায়ক বলেন। আবার কখনও তিনি নিজেকে তৃণমূল কংগ্রেসের লোক বলে দাবি করেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হন বিশ্বজিৎ দাস। ২০১৯ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন।

একুশের নির্বাচনের পর ফের তাঁর প্রত্যাবর্তন হয়। তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে তাঁর আনাগোনা শুরু হয়। মধ্যমগ্রামের তৃণমূল দলীয় কার্যালয় থেকে বেরনোর সময়েও বিশ্বজিৎ দাবি করেছিলেন, তিনি বিজেপিতেই রয়েছেন। পরে অবশ্য তৃণমূল তাঁকে পদও দেয়। তিনি কোন দলে আছেন? ‌

তাঁর সাফ জবাব ছিল, ‘‌জনপ্রতিনিধিদের কোনও দল হয় না।’ এখন অবশ্য তাঁকে তৃণমূলের ব্লক-অঞ্চল নেতৃত্বকেই হুঁশিয়ারি দিতে দেখা যাচ্ছে। পঞ্চায়েতের আগে তবে কি তিনি তৃণমূলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন? জল্পনা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here