দেশের সময় , বনগাঁ: আগুন লেগেছে বাজারের ভিতরে দোকানের পিছনের ঝুপড়িতে ঘটনাস্থলে দ্রুত হাজির হয়েছে দমকল। কিন্তু আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে পারছেন না তাঁরা। কারণ, ঘিঞ্জি পরিবেশ আর সংকীর্ণ গলি দিয়ে ভিতরে যাওয়ার রাস্তা নেই দমকলের গাড়ির। বড় পাইপ লাগিয়ে যতক্ষণে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করলেন কর্মীরা, ততক্ষণে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাই মেনে পড়েছেন ময়দানে। আর আগুনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।

সোমবার বিকালে ওই পরিস্থিতি দেখা গেল বনগাঁ শহরের ট বাজারে। বাজারের সঠিক পরিকাঠামোর অভাবে কাজ করতে গিয়ে পদে পদে ধাক্কা খাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। আয়ত্তের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসায় এদিন বড়সড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেলেন ব্যবসায়ীরা।

কিন্তুএদিনের ঘটনার পরেও শিক্ষা কী নেবে ট বাজার।?

একদিকে বনগাঁ-চাকদহ সড়ক। অন্যদিকে ইছামতী নদী। এর মাঝে অবস্থিত ট বাজারের প্রায় ৩০০টি দোকান রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় হাজার পাঁচেক মানুষ ওই বাজারে যান। বাজারে ঢোকার তিনটি গলি। ওই গলির মধ্যেই পসরা সাজিয়ে বসেছেন মাছ এবং আনাজ ব্যবসায়ীরা। আপৎকালীন পরিস্থিতি সেখান দিয়ে কী করে ঢুকবে দমকলের গাড়ি, কীভাবেই বা বেরিয়ে আসা যাবে, তা জানেন না ক্রেতা-বিক্রেতা বা স্থানীয় বাসিন্দারা কেউই।

বহুদিনের পুরনো ওই বাজারে এখনও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। পরিষ্কার হয়নি বাজারের ভিতরের ঘিঞ্জি পরিবেশ। এদিন বাজারের গিয়ে দেখা গেল, গোটা পরিবেশ এখনও রয়েছে ঘিঞ্জি। পাশপাশি সব দোকানপাট। বাজারের ভিতরে রয়েছে সব্জি , মাছ এবং চালের দোকান। কোন দ্রব্য কিনে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভ্যানরিকশা ঢুকলে যাতায়াতের জায়গা থাকে না।

অনেক দোকানের উপরেই প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া। সূর্যের আলো ঠিকমতো প্রবেশ করতে না পারায় দিনের বেলাতেই আলো জ্বালিয়ে ব্যবসা করছেন ব্যবসায়ীরা। বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে বিদ্যুতের তার। আর সেখানেই গ্যাস ওভেন এবং স্টোভ জ্বালিয়ে চা তৈরি হচ্ছে। কেউ কেউ দাহ্য পদার্থের পাশেই বিড়ি-সিগারেটে সুখটান দিচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা রতন সিনহা বলেন, এক কথায় বনগাঁর ‘ট’ বাজার জতুগৃহ ৷

বাজার সংলগ্ন এলাকায় কয়েকটি পরিবার বসবাস করেন। স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম দত্ত বলেন, ‘‘সব সময় আতঙ্কে থাকি। দমকলের গাড়ি বাজারের মধ্যে ঢোকেনা৷ একমাত্র ভরসা দমকলের পাইপ লাইনের জল’ তাঁর পরামর্শ, ‘‘নদীর পাশে চাতাল তৈরি করে স্থায়ী পাম্পসেট বসানো গেলে সমস্যা অনেকটাই মিটে যেত।’’

ট বাজারের এক ব্যবসায়ী কালু ঘোষ বলেন, ‘‘পুরসভার তরফে বাজারের বাইরের রাস্তা থেকে দোকানপাট তুলে দেওয়া হয়েছে । ফলে অনেক সহজেই মানুষ বাজারে যেতে পারছেন। তবে বাজারে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এখনও নেই এ বিষয়ে ফের পুরসভায় বাজার সমিতির তরফে লিখিত আবেদন করা হবে। ’’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here