অন্যতম লোকউৎসব শিবের গাজন।               দেবন্বিতা চক্রবর্তী:  বনগাঁ:                                 চৈত্রমাস এলেই গাজন শিল্পীরা গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েন। গান গেয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা সংগ্রহ করেন। তবে আধুনিক শহুরে সংস্কৃতির ভিড়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে এই গ্রামীণ লোকসংস্কৃতি।গাজনে মূলত শিবের গান করা হয়। চাঁদা সংগ্রহের সময় গাজন শিল্পীরা তাই তো শিবের সাজে সাজেন। গানের তালে তালে  নৃত্য করেন। গানগুলো মূলত শিবের উদাসী জীবনযাত্রা, তার বিয়ে, গাঁজার নেশায় মগ্ন হয়ে থাকার কারণে গৌরীর অভিমানকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে।পুরো চৈত্রমাস গাজন শিল্পীরা একসঙ্গে একটি বাড়িতে থাকেন। নিরামিষ খান, পায়ে জুতা পরেন না, মাটিতে বিছানা করে ঘুমান। বলা যায় এক প্রকার সন্ন্যাস জীবনযাপন করেন। সারা মাস ধরে সংগ্রহ করা চাল ও টাকা দিয়ে চৈত্র সংক্রান্তির দিন গাজন উৎসব পালন করা হয়। এই পূজায় ধর্মীয় রীতিনীতি কঠোরভাবে মানা হয়। পূজার আগের রাতে শ্মশানে শিবের আরাধনা করতে হয়। যে ব্যক্তি এই পূজা করেন তাকে বলা হয় ওস্তাদ। চৈত্র সংক্রান্তির দিন শিবের পূজার পাশাপাশি শিব-গৌরীর বিয়ে, কালীর উন্মাদ নৃত্য প্রদর্শন করা হয়। চৈত্র সংক্রান্তির দিন গাজন উৎসব অনুষ্ঠিত হলেও গোটা বৈশাখ মাসজুড়ে বিভিন্ন গ্রামে বসে মেলা। এখনও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের গ্রামেগঞ্জে গাজন উৎসব পালন করা হয়। চৈত্রমাস এলেই গ্রামগঞ্জ থেকে গাজন শিল্পীর দল কলকাতা শহর সহ বিভিন্ন জেলা শহরে এসে শিব গৌরীর নাচ দেখিয়ে চাঁদা সংগ্রহ করেন। তবে দিন দিন এই সংখ্যা কমে আসছে।

বনগাঁ শহরের সীমান্তে পাওয়া গেলো একদল গাজন শিল্পী। তাদেরই এক সদস্য বিনয় বিশ্বাস। তিনি দেশের সময় কে জানান, আমরা চাষবাস করি, বছরের এই সময় তেমন কোনো কাজ থাকে না। ফলে গাজন করি, আবার বৈশাখ মাস এলে যখন বৃষ্টি শুরু হয় তখন চাষের কাজে মাঠে নেমে পড়ি। মানুষের কর্মব্যস্ত জীবনের জন্য দিন দিন গাজন শিল্পী কমে আসছে। আগামী দিনে হয়ত গাজন থাকবেই না, আফসোসের সুরে বলেন বিনয় বাবু। ”মর্তে পা., ছয়ঘরিয়া গ্রামে ছবিটি তুেলেছেন দেবন্বিতা চক্রর্তী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here