দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃঅ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ বাড়তেই সতর্কতা বাড়ল রাজ্য জুড়ে। দফায় দফায় বৈঠক চলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের। মঙ্গলবার অ্যাডিনোভাইরাস মোকাবিলায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জারি করল নয়া নির্দেশিকা। কী কী রয়েছে সেই নির্দেশিকায়? দেখে নিন একনজরে।

শিশুদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা (অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন বা এআরআই) বাড়ছে। রাজ্যে বেশ কয়েক জন শিশুর মৃত্যুও হয়েছে।

মঙ্গলবার ১০টি নির্দেশিকা-সহ সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ, জেলা হাসপাতাল-সহ সমস্ত সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এআরআইয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখতে হবে। এ বিষয়ে হাসপাতাল থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কথাও বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার মূলত সরকারি হাসপাতালগুলিকে এআরআইতে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সংক্রান্ত নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টার জন্য এআরাইতে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা রাখতে হবে। ওপিডিতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুরা চিকিৎসা করাতে আসে। তাদের যাতে বেশি ক্ষণ অপেক্ষা করতে না হয়, তাই এআরআইতে আক্রান্তদের জন্য আলাদা ক্লিনিকের ব্যবস্থা করতে হবে। রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালেই ২৪ ঘণ্টার জন্য এই পরিষেবা চালু করতে হবে। সব হাসপাতালের এমার্জেন্সি বিভাগে এক জন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞকে উপস্থিত থাকতে হবে। ওপিডি শেষ হয়ে গেলেও থাকতে হবে তাঁকে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, হাসপাতালের সুপারের সুপারিশ ছাড়া কোনও অসুস্থ শিশুকে সেখান থেকে রেফার করা যাবে না। যেখানে পাঠানো হচ্ছে, সেখানে শয্যা রয়েছে কিনা, জেনে নিতে হবে। ভেন্টিলেটর-সহ শিশুদের যাবতীয় চিকিৎসা সামগ্রি মজুত রাখতে হবে। প্রতি দিন নজরদারি চালাতে হবে। সিনিয়র চিকিৎসকদের পাশাপাশি সিনিয়র রেসিডেন্ট-সহ জুনিয়র চিকিৎসকদেরও এই ক’দিন এআরআই আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় নিয়োগ করতে হবে।

ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নার্সিং সুপারের নিয়মিত নজরদারি রাখতে হবে।

স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, করোনার জন্যে কেনা ভেন্টিলেটরগুলিকে ব্যবহার করা হবে শিশুদের জন্য।

করোনার জন্য প্রস্তুত ওয়ার্ডগুলিকে জ্বর সর্দি কাশি নিয়ে আসা শিশু এবং মায়েদের জন্য ব্যাবহার করা হবে।

সংক্রমণের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য রাজ্য সরকার একটি এমার্জেন্সি নম্বর চালু করেছে।

হেল্পলাইন নম্বর : ১৮০০৩১৩৪৪৪ এই নম্বর ২৪ ঘণ্টা ব্যাপী চালু থাকবে।

সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য শিশুদের কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। মাস্ক পরতে হবে। এই বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য আশা কর্মীদের সাহায্য নিতে হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য। এআরআইয়ের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, বিধান চন্দ্র রায় মেডিক্যাল কলেজ, বাঁকুড়া সম্মিলনী, মালদহ মেডিক্যাল কলেজে হাব গঠন করতে হবে। সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষকেও সচেতন হতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন।

অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে বিশেষ বৈঠকে আজ ছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাস্থ্যসচিবকে নিয়ে তিনি আজ বৈঠক বসেন নবান্নে৷ অ্যাডিনো ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ আলোচনার জন্যই এই বৈঠকে আলোচনা চলে৷ কলকাতায় অ্যাডিনোভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ছিল বলে মনে করা হচ্ছে৷ এই বৈঠকের পরেই অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে বিস্তারিত নির্দেশিকা জারি করে স্বাস্থ্য দফতর।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here