দেবাশিস রায় :বাঙালি বরাবরই ভ্রমণ প্রিয়। বাঙালিকে নিয়ে তো প্রবাদ ই আছে, বাঙালির পায়ের তলায় নাকি সর্ষে।
পয়লা বৈশাখ থেকে দুর্গাপুজো যে কোন উৎসবেই মেতে ওঠেন বাঙালি। আর তাই বাংলা নববর্ষের এই মরশুমে গৃহবন্দি না থেকে অনেকেই বেরিয়ে পড়ছেন বাড়ি থেকে। কাছেপিঠে নানা জায়গায় নেমেছে পর্জ্ঞযটকের ঢল।
আর বাঙালির কাছে সমুদ্র চিরকালই খুব প্রিয় ঘোরার জায়গা। তবে মধ্যবিত্ত বাঙালির কাছে কম খরচে কাছে পিঠে সমুদ্র বলতে দীঘা কিংবা পুরী। আর হাল আমলের মন্দারমনি বা বকখালি। তবে এই সব জায়গা বাঙালির কাছে জল ভাতের মতো হয়ে গেছে। তাই একঘেয়েমি কাটাতে খুঁজছেন নতুন কোন সমুদ্র সৈকত। তাহলে নতুনত্বের স্বাদ পেতে কলকাতার একদম কাছে নতুন জায়গা ঘুরে আসতে পারেন বাংলা উড়িষ্যার বর্ডারে নতুন এক সমুদ্র সৈকত দুবলাগাড়ী (Dublagadi Sea Beach) থেকে।
যারা খুব একটা ভিড়-ভাট্টা পছন্দ করেন না, গেঞ্জাম এড়াতে চলতে চান এবং শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশে সমুদ্রকে উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য এই সমুদ্র সৈকতটি একদম উপযুক্ত জায়গা। উড়িষ্যার দুবলাগাড়ী সমুদ্র সৈকতটি (Dublagadi Sea Beach) এখনও তেমন পরিচিতি না পাওয়ায় এখানে খুব একটা ভিড় দেখতে পাওয়া যায় না। অথচ এই সমুদ সৈকতটি কলকাতা থেকে খুব বেশি দূরেও নয়।
পর্যটকদের ভিড় তেমন নেই বলে হোটেলগুলো তেমনভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। বহু পর্যটক এই সমুদ্র সৈকতের নাম পর্যন্ত শোনেননি। উড়িষ্যার দুবলাগাড়ীর ঝাউবন বেশ জনপ্রিয়। শোনা যায় এক সময় নাকি দীঘা থেকে এই ঝাউবন দেখতে পাওয়া যেত, তবে বর্তমানে বড় বড় হোটেলের ভিড়ে তা আর পর্যটকদের চোখে পড়ে না। কলকাতা শহর থেকে মাত্র ৪ থেকে ৫ ঘন্টার মধ্যে আপনি এই জায়গায় নিরিবিলি পরিবার কিংবা বন্ধুদের সাথে ছুটি কাটিয়ে আসতে পারেন।
কিভাবে যাবেন দুবলাগাড়ী (Dublagadi Sea Beach)?
যদি মনে করেন এখানে গাড়ি করে পৌঁছাবেন তাহলে আপনাকে কোলাঘাট হয়ে যেতে হবে। খড়গপুর কোলাঘাট হয়ে আপনাকে হলদিপদা পার করে এগিয়ে যেতে হবে দুবলাগাড়ীর দিকে। যেতে যেতে রাস্তাতে সেরে নিতে পারেন দুপুরের লাঞ্চ।
যারা ভাবছেন ট্রেনে করে আসবেন তারা বালাসোর হয়েও এখানে আসতে পারেন। বালাসোর স্টেশনে নেমে এই সমুদ্র সৈকতে আসা যায়। তবে তার জন্য আপনাকে গাড়ি ভাড়া করতে হবে। কলকাতা থেকে এখানকার দূরত্ব মাত্র ২২৭ কিমি।
কোথায় থাকবেন ?
মনে রাখতে হবে দুবলাগাড়ীতে বিশেষ কোনো জনপ্রিয় হোটেল নেই। এখানে নেচার-ক্যাম্পে থাকতে হয়, থাকা খাওয়া মিলিয়ে খরচ হতে পারে কমবেশি মাথাপিছু ১৬০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা। তবে অবশ্যই আসার আগে বুকিংটি সেরে ফেলতে হবে।
কি আছে এই সমুদ্র সৈকতে?
যদি ভোরের সূর্য ওঠা দেখতে চান তাহলে এই সমুদ্র সৈকত থেকে আর কোনো ভালো জায়গা হবে না। আর এখানকার ঝাউবন সত্যি দেখার মত, সেখানে রয়েছে নানা প্রকার অচেনা পাখি।
একদিকে সমুদ্রের গর্জন অন্যদিকে অনাবিল নিস্তব্ধতা, সব মিলিয়ে এই জায়গাটির জুড়ি মেলা ভার। নির্জনতা যাদের বরাবর টানে, তাদের পক্ষে এই সমুদ্রসৈকত হলো আদর্শ জায়গা। তাই কম খরচে কম সময়ে ঘুরে আসা যেতে পারে দুবলাগাড়ী সমুদ্র সৈকতে (Dublagadi Sea Beach)।
এই সৈকত এখনও অনেক পর্যটকের কাছেই অজানা। তাই এখানে এখনও খুব বেশি হোটেল গড়ে ওঠেনি। তবে স্থানীয় কয়েকটি বাম্বুকটেজ এবং টেন্ট ক্যাম্পের ব্যবস্থা রয়েছে দুবলাগাড়ীতে । তাই এখানে ক্যাম্পে আসতেই পারেন নির্জনতায় রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার জন্য। কারণ, এখানে উপরি পাওনা হিসেবে পর্যটকরা পেয়ে যাবেন ক্যাম্প ফায়ারের সঙ্গে বারবিকিউ চিকেন। এটা কলকাতার কাছেই একেবারে অফবিট সমুদ্র সৈকত।
ক্যাম্প বুকিং কিভাবে করবেন?
দুবলাগাড়ীতে ক্যাম্প বুক করতে এই দুটি ক্যাম্পের ওয়েবসাইট থেকে যাবতীয় তথ্য জেনে নিন –
Ocean Breeze Retreat (Resort)
M- +91 80930 92360
campwithcare.com
galaxynaturecamp.com