দেশের সময় : কলকাতা: শনিবার রাত থেকেই ঘন কালো মেঘের আনাগোনা শুরু হয়ে গিয়েছিল ৷রবির সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার।
ছুটির দিনে ভোরের ঘুমটা অতিরিক্ত সময় জড়িয়ে এল চোখে। এভাবেই শুরু বঙ্গবাসীর রবিবারের সকাল। তাহলে কি অবশেষে বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজতে চলেছে দক্ষিণবঙ্গ? আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে এবার খানিক বারিধারা পেতে চলেছে দক্ষিণবঙ্গ।
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস সত্যি করে শনিবার মাঝরাতেই মুষুলধারা চলেছে কলকাতা-সহ পার্শ্ববর্তী জেলা শহরেও৷ কলকাতার পাশাপাশি ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির (Rain) সাক্ষী থেকেছে বেশ কিছু জেলাও।
মৌসম ভবনের রিপোর্ট অনুযায়ী,পয়লা জুন থেকে শুরু করে চলতি সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি ৪২ শতাংশ। দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের পর থেকে বৃষ্টির আকাল চললেও বর্ষণে বানভাসি অবস্থা উত্তরের।
অন্যদিকে, ফের সাগরে ঘূর্ণাবর্ত ঘনীভূতের পূর্বাভাস উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। ১৬ জুলাই অর্থাৎ আজ এই ঘূর্ণাবর্ত আরও শক্তিশালী হতে চলেছে বলে ইঙ্গিত। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্তের পূর্বাভাস মিলতেই দক্ষিণবাসীর মনে প্রশ্ন তবে কী এবার মিলবে শান্তি?
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ঘূর্ণাবর্তের জেরে রবিবার দক্ষিণবঙ্গে বাড়বে বৃষ্টি। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও উপকূলের জেলা গুলিতে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অতিরিক্ত আর্দ্রতার জন্য অস্বস্তি থাকবে। জমিয়ে বৃষ্টি হবে যেসব জায়গায় সেখানে কাটবে অস্বস্তি। দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা গতদিনের থেকে সামান্য কমেছে। তবে আর্দ্রতার জন্য অস্বস্তি বজায় থাকতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় হালকা বৃষ্টিপাত হয়েছে। রবিবার অর্থাৎ সপ্তাহের শেষ দিনে কলকাতার আকাশ আংশিক মেঘলা। কিন্তু, ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম। তবে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, গতকালের থেকে এদিন বাড়বে বৃষ্টির তোড়। এদিন শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩২.৬ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে ২৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। এদিন বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ সর্বাধিক ৮৯ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৮৫ শতাংশ।
দক্ষিণবঙ্গ বৃষ্টির আকালে ভুগলেও উত্তরে কয়েক সপ্তাহ জুড়ে চলছে ভারী বৃষ্টিপাত। সেই বৃষ্টিতে কার্যত বানভাসি অবস্থা উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। রবিবার থেকে সেখানে বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে। উত্তরের বাকি পাঁচ জেলায় টানা না হলেও বিক্ষিপ্তভাবে ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগরে ঘনীভূত ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পর ওড়িশা অভিমুখে এগোবে। অন্যদিকে, রাজস্থান থেকে গয়া, শ্রীনিকেতন হয়ে উত্তর পূর্ব ভারতের মিজোরামের দিকে চলে গিয়েছে মৌসুমী অক্ষরেখা। তার জেরেই উপকূলবর্তী অঞ্চলে বাড়বে বৃষ্টি। বাংলার পাশাপাশি ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডেও এই ঘূর্ণাবর্তের জেরে চলবে বর্ষণ।
আজ ও কাল উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। ওড়িশা ও বিহারে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। উত্তর-পশ্চিম ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে ভারী বৃষ্টি চলবে। উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড়, রাজস্থান-সহ উত্তর-পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা।
অরুণাচল প্রদেশ, অসম, মেঘালয়-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি আগামী পাঁচ দিন। কঙ্কন ও গোয়াতে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা। কর্ণাটক কেরালা মাহেতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা৷