দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গা জ্বালানো গরম। বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হলেও বৃষ্টির দেখা নেই। এবার একই সময়ে জোড়া ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা।
এদিকে তাপমাত্রা আরও বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে আবহাওয়াবিদরা ইঙ্গিত দিলেন, জোড়া ঘূর্ণিঝড় তেড়ে আসতে পারে। ঘূর্ণাবর্তের পরিমণ্ডল তৈরি হচ্ছে বঙ্গোপসাগর ও আরবসাগরে। সম্ভাবনা আছে জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে দুটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার।
বিশ্বের বিভিন্ন আবহাওয়া মডেলের পূর্বাভাস, জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের উপর তৈরি হবে জোড়া ঘূর্ণিঝড়। ৮ থেকে ১০ জুনের মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে সেটি।
উত্তর আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন দক্ষিণ মায়ানমার উপকূলে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। এটিই শক্তি সঞ্চয় করে গভীর নিম্নচাপ হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। বঙ্গোপসাগরের উপর ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘বিপর্যয়’। নামকরণ করেছে বাংলাদেশ। যেটির অভিমুখ হতে পারে বাংলাদেশ ও মায়ানমার উপকূলে।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, উত্তর আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন দক্ষিণ মায়ানমার উপকূলে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। এই ঘূর্ণাবর্ত শক্তি সঞ্চয় করে নিম্নচাপ ও পরে গভীর নিম্নচাপে বদলে ঘূর্ণিঝড় তৈরি করতে পারে।
মৌসম ভবন আগেই জানিয়েছিল, এ বছর ১ জুনের বদলে কেরলে বর্ষা ঢুকতে পারে ৪ মে। তবে এর প্রভাব বাংলায় আরও বেশ কয়েকদিন পর পড়বে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা আসার নির্ধারিত সময় জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ। তবে গত কয়েক বছরে আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি অনেক বদলে গেছে। বর্ষা আসার সময়েও বদলেছে। রাজ্যে বর্ষা ঢুকেছে নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে। এবছরও কেরলেও বর্ষা ঢুকতে দেরি হবে বলেই পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তাই পশ্চিমবঙ্গে আরও দেরিতেই বর্ষা ঢুকবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে তার আগে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়লে এর প্রভাব পড়বে বর্ষায়।
মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগর তোলপাড় করেছিল ঘূর্ণিঝড় মোখা। সমুদ্রের মধ্যেই সুপার সাইক্লোন হয়ে শেষ পর্যন্ত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসাবে আছড়ে পড়ে মায়ানমারের উপর। এর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশেও। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, ফের উত্তর আন্দামান সাগরে ঘূর্ণাবর্ত অর্থাৎ সাইক্লোনিক সার্কুলেশন তৈরি হচ্ছে।
রবি-সোম নাগাদ এই ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। ৫ জুন থেকে ৭ জুনের মধ্যে এই নিম্নচাপ শক্তি বাড়াবে। এর অবস্থান হতে পারে পূর্ব, মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে। ৮ জুন থেকে ৯ জুনের মধ্যে এই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এই ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তার নাম হবে “বিপর্যয়”।
তবে ঘূর্ণিঝড় কোন অভিমুখে যাবে? তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন আবহাওয়াবিদরা। উত্তর বঙ্গোপসাগরে এর কতটা প্রভাব পড়বে সে বিষয়েও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। এই ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ প্রাথমিকভাবে মায়ানমার ও বাংলাদেশের দিকে হলেও, পরে গতিপথ বদলাতে পারে বলেও মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
অন্যদিকে আরব সাগরের উপর তৈরি ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘তেজ’। যার নামকরণ করেছে ভারত। কেরল উপকূলের কাছাকাছি দক্ষিণ আরব সাগরে এটি নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ক্রমশ উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোবে। উপকূল বরাবর এটি মহারাষ্ট্র ও গুজরাট উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছতে পারে। তারপর ভারতে অথবা পাকিস্তানের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।
অন্যদিকে, জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আরও একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে আরবসাগরে। দক্ষিণ আরবসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে শনি-রবিবার নাগাদ। এই ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হবে আগামী ৫ থেকে ৭ জুনের মধ্যে। কেরল উপকূলের কাছাকাছি দক্ষিণ আরব সাগরেই হবে এর অবস্থান। এটি নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ক্রমশ উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোবে। উপকূল বরাবর এটি মহারাষ্ট্র ও গুজরাত উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছতে পারে।
৮ জুন থেকে ১০ জুনের মধ্যে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উপকূল বরাবর সমুদ্রেই অবস্থান করবে। এর নাম হবে “তেজ”। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম ভারতের দেওয়া। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ ভারতের দিকেও হতে পারে, আবার দিক বদলে পাকিস্তানের উপকূলেও চলে যেতে পারে তেজ।
যদিও ভারতের মৌসম ভবন ঘূর্ণিঝড়ের কোনও পূর্বাভাস এখনও দেয়নি। আগামী রবিবার থেকে সোমবারের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের ধারণা স্পষ্ট হবে বলেই জানা গেছে।