দেশের সময়: যেমনটা মনে করা হচ্ছিল, হাসপাতালে ভর্তির দরকার হলে, স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় তা জানিয়ে দিতে পারেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তাঁরা তেমন কিছু জানালেন না। ফলে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পরীক্ষার পর অনুব্রত মণ্ডলকে ফের জেলে নিয়ে যাওয়া হল। সূত্রের খবর, জেলের ভিতর হাসপাতালে রাখা হবে তাঁকে।
হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় কিংবা স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর হাসপাতাল থেকে বের করার সময় মৌনব্রত পালন করেন অনুব্রত। সংবাদ মাধ্যমের কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি। এদিন সকাল এগারোটা নাগাদ জেল থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে আনা হল অনুব্রত মণ্ডলকে।
গতকাল অনুব্রতের ১৪ দিন জেল হেফাজত হয়েছে। করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও তাঁকে প্রথমে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়। পরে তাঁকে রাখা হয় জেল হাসপাতালে। অনুব্রত সারাদিনে বেশকিছু ওষুধ খান। তাঁর অক্সিজেনেরও প্রয়োজন হয়। সেগুলি জেলে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন সিবিআই আদালতের বিচারক। কিন্তু যেহেতু ওইসমস্ত ওষুধ ও অক্সিজেন নিয়ে অন্য বন্দিদের সঙ্গে অনুব্রতকে রাখার ক্ষেত্রে অসুবিধা আছে, তাই তাঁকে জেল হাসপাতালে রাখা হয়। যদিও জেলে ঢোকার পর থেকে অনুব্রতর শারীরিক অবস্থার তেমন কোনও অবনতি হয়নি বলে জেল সূত্রে খবর।
এদিকে, গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত শুরু করতে চাইছে ইডি। দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে সায়গল ও অনুব্রতকে জেরা করতে চান ইডির আধিকারিকরা।
এদিন সকাল থেকেই আসানসোল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকদের একটি টিম প্রস্তুত ছিল। ছিলেন নাক, কান, গলা, হাড় ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। এমনকী ছিলেন একজন শল্য চিকিৎসক। হাজির ছিলেন হাসপাতাল সুপার। ৪৮ ঘণ্টা অন্তর অনুব্রতর শারীরিক পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সেই মতোই এদিন জেল থেকে তাঁকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
আসানসোল জেল থেকে বের করে এস বি গড়াই রোড হয়ে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় অনুব্রতকে। তাঁকে দেখতে রাস্তার ধারে এমনকী হাসপাতাল চত্বরে বহু মানুষ ভিড় করেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেল চত্বর, রাস্তায় এবং হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। তবে তারই মধ্যে থেকে অনেকে বলে ওঠেন আমরা ‘গরু চোর’কে দেখতে এসেছি। এনিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। অন্যদিকে, পুলিশের কড়াকড়ির জেরে আসানসোল হাসপাতালে অন্য রোগীরা ভোগান্তির মুখে পড়েন।
হাসপাতালে জরুরি বিভাগের সামনে পুলিশের পক্ষ থেকে রীতিমতো ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়। ফলে রোগী ও তাঁদের পরিজনদের আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধায় পড়তে হয়। জরুরি বিভাগের পরিষেবাও ব্যাহত হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের সঙ্গে রোগীর পরিজনদের তর্কাতর্কিও শুরু হয়ে যায়। তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অন্তঃসত্ত্বাকে প্রায় ঘণ্টা খানেক লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। আউটডোরের টিকিটের কাউন্টারও বন্ধ করে রাখা হয়।