পিয়ালী মুখার্জী , কলকাতা : পঞ্চদশ শতকের শেষভাগ। একদিকে বাংলায় মুসলিম শাসন, ধর্মীয় ও সামাজিক আনুষ্ঠানিকতা, অন্যদিকে রক্ষণশীল স্মার্ত হিন্দু সংস্কারের পীড়নে বাঙালি ধ্বস্ত, নিপীড়িত। সেই বিশেষ ক্রান্তিকালে বাংলার মাটিতে আবির্ভাব দুই মহাপুরুষের—- নিমাই ও নিতাই।
নিমাইয়ের অভ্যুদয়ে শুধু বঙ্গ নয়, গোটা ভারতের জনমানসে সূচনা হল এক নবজাগরণের। সমাজে প্রবর্তিত হল প্রেমধর্ম। এর নায়ক অবশ্যই শ্রীচৈতন্য। কিন্তু প্রধান সেনাপতি শ্রীনিত্যানন্দ।
প্রবল ব্রাহ্মণ্যবাদ ও ধর্মীয় সংকীর্ণতা—- এই দুইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন নিত্যানন্দ। চৈতন্য পরিকররা যখন নবদ্বীপের বুকে ভগবানকে নামিয়ে আনছেন, ঠিক তখনই লড়াকু, শ্রেণি বৈষম্য না-মানা নিতাই তাঁর নিজের লক্ষ্যে অবিচল। তারই মধ্যে বাংলায় চৈতন্যধর্মের বিরোধ, হাজারো স্রোত-উপস্রোত। সমস্ত প্রতিকূলতাকে হেলায় উড়িয়ে তখন অকাতরে ‘নাম’ বিলোচ্ছেন নিত্যানন্দ। তাঁর হাত ধরেই বৈষ্ণবধর্মের উত্তরণ ঘটেছিল সর্বজনীন মানবধর্মে।
নাম-সংকীর্তনকেই অন্যতম হাতিয়ার করে অবতার থেকে নিতাই আক্ষরিক অর্থে হয়ে উঠেছিলেন গণনায়ক। সাড়ে পাঁচশো বছর আগে বাংলার সহজিয়া বৈষ্ণব আন্দোলনের সেই বিদ্রোহী পুরুষের পথচলা আদৌও কতটা মসৃণ ছিল? চৈতন্য সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে তার উপরেই আলোকপাত করার চেষ্টা করেছেন লেখক, সাংবাদিক ব্রতীন দাস। খুঁজে ফিরেছেন বলরামের অবতার শ্রীনিত্যানন্দের জীবনদর্শন।
লেখক: ব্রতীন দাস
প্রচ্ছদ: মৃণালকান্তি দাস
প্রকাশক: শালিধান
প্রকাশকাল: রথযাত্রা, ১৪২৯