দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বগটুই ,হাঁসখালির ঘটনা নিয়ে আগেই রাজ্য পুলিশের উপর অনাস্থা জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পুলিশের মুখের উপরেই জানিয়ে দিলেন, তাদের জন্য মুখ পুড়েছে রাজ্যের।
পুলিশের গাফিলতিতে সরকার কেন ভুগবে? বুধবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে এই প্রশ্নই তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
সদ্য হওয়া হাঁসখালি এবং রামপুরহাটের বগটুইয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রসঙ্গে এই প্রশ্ন তোলেন তিনি। বৈঠকে বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রীরা ছাড়াও ছিলেন মুখ্যসচিব এবং অন্যান্য দপ্তরের সচিবরা। ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার। ভার্চুয়ালি ছিলেন রাজ্যের জেলাগুলির জেলাশাসক এবং পুলিশ কমিশনার ও সুপাররা।
এদিন রীতিমতো কড়া ভাষায় মুখ্যমন্ত্রী বগটুই এবং হাঁসখালির ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশের ‘ইন্টেলিজেন্স’-এর ব্যর্থতা এবং নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেন। হাঁসখালির ঘটনা প্রসঙ্গে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপারকে তিনি বলেন, আগে থেকে তাঁদের খবর রাখা উচিত ছিল। প্রশ্ন তোলেন থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের ইন্টেলিজেন্স ব্যর্থতা নিয়েও।
আধিকারিকরা যে তাঁদের কাজ ঠিকঠাক করছেন না সেই বিষয়টি নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে নির্যাতিতার বাড়ির লোক পুলিশ এবং সিবিআইয়ের কাছে কেন আলাদা আলাদা বয়ান দিচ্ছেন সেই বিষয়টি নিয়েও পুলিশ সুপারকে প্রশ্ন করেন তিনি।সরাসরি তাঁর প্রশ্ন পুলিশের গাফিলতিতে সরকার কেন ভুগবে?
একইসঙ্গে বীরভূমের বগটুইয়ের ঘটনা নিয়ে জেলার পুলিশ সুপারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘কোথাও কিছু হলে প্রত্যাঘাত হতে পারে। সতর্ক থাকা উচিত ছিল। রামপুরহাটের ঘটনা ঘটত না। যদি ডিএসপি ঘটনাস্থলে সঙ্গেসঙ্গে যেত। পুলিশ যদি ঠিকঠাক কাজ করত তাহলে এতটা মুখ পুড়ত না। এটা পুলিশের গাফিলতি।
রামপুরহাটে অনেক ভুল হয়েছে। তার খেসারত দিতে হয়েছে সরকারকে।’ বৈঠকে প্রতিটি জেলার পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের স্থানীয়স্তরে ইন্টেলিজেন্স বাড়ানোর দিকে বিশেষ নজর দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
একদিকে যেমন রামপুরহাট ও হাঁসখালি প্রসঙ্গে পুলিশের ব্যর্থতা নিয়ে পুলিশকে ভর্ৎসনা করেছেন তেমনই দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়া-সহ জঙ্গলমহলের প্রতিটি জেলায় প্রশাসন এবং পুলিশের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বিশেষ করে ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ সুপারদের তিনি সতর্ক করে বলেন, অসাধু উদ্দেশে বাইরে থেকে যেন কেউ এরাজ্যে ঢুকতে না পারে সেবিষয়ে কড়া নজর রাখতে।
সম্প্রতি জঙ্গলমহলে মাওবাদী পোস্টার পড়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছিল। সেই নিয়ে পুলিস সুপারের কাছে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, বিজেপিই এই পোস্টার লাগিয়েছে।
পাশাপাশি গোটা এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। যাতে দুষ্কৃতীরা এরাজ্যে আসতে না পারে সেই জন্য বেলপাহাড়ি সীমান্ত সিল করে দেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।