দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ আচমকা টর্নেডোতে বিপর্যস্ত আমেরিকা। ছয় রাজ্যে টর্নেডো হানা। একের পর এক ঝড়ের কবলে পড়ে শুধু মাত্র কেন্টাকিতেই ৭০ জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন বলে এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে। ২০০ মাইল (প্রায় ৩২২ কিলোমিটার) জুড়ে অসংখ্য বাড়ি, দোকান নষ্ট হয়েছে এই ঝড়ে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় শনিবার রাত থেকে পর পর টর্নেডো আছড়ে পড়েছে। ঝড়ের দাপটে কার্যত ধূলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি স্টেট। এখনও পর্যন্ত ৮০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে সরকারি হিসেবে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
কেনটাকির বিভিন্ন জায়গায় চারটি টর্নেডো আছড়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। একটি টর্নেডো প্রায় ৩৬৫ কিলোমিটার জুড়ে এগিয়েছে। সব শহর মিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কেনটাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার বলেন, “আমি এমন বিধ্বংসী ঝড় দেখিনি। কেনটাকিতে অন্তত ৫০ জন মারা গিয়েছেন। সংখ্যাটা ৭০-এর উপরেও হতে পারে। দিনের শেষে ১০০ ছাড়িয়ে গেলেও অবাক হওয়ার থাকবে না।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই পরিস্থিতিতে শোক প্রকাশ করেছেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেছেন, এটা একটা বড় ট্র্যাজেডি। ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ খতিয়ান এখনও আমরা জানি না। এখনও জানি না আরও কত জন মারা গেছেন।
শনিবার রাতে আচমকা টর্নেডোতে কার্যত দিশাহারা হয়ে পড়েছেন আমেরিকার শহরবাসী মানুষজন। উদ্ধারকার্য চলছে। ঝড়ের পূর্বাভাস ছিল না। তায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি।
আমেরিকার কেন্তুকি টর্নেডোর দাপটে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধুমাত্র সেখানেই মারা গেছেন ৭০ জন, জানা যাচ্ছে সূত্র মারফত। অনেকেই বলছেন এত বড় বিপর্যয় আগে দেখা যায়নি। ২৫ ডিসেম্বর আসছে। ক্রিসমাসের প্রস্তুতি গোটা আমেরিকা জুড়েই তুঙ্গে। তার আগে আচমকা এমন প্রাকৃতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হল মার্কিন মুলুক।
মেফিল্ড শহরে শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার। তিনি বলেন, প্রথমে শুনেছিলাম, এই প্রদেশে অন্তত ৫০ জন মারা গিয়েছেন। এখন শুনছি মৃতের সংখ্যা ৮০। মৃত্যু ১০০ ছাড়িয়ে গেলে আশ্চর্যের কিছু নেই। এর আগে বেশিয়ার জানান, ঝড়ের মধ্যে একটি মোমবাতি তৈরির কারখানার ছাদ ভেঙে পড়ে। সেখানে বহু লোক হতাহত হয়েছেন।
জানা গেছে, আরাকানসাস প্রদেশের শহর মনে-তে একটি নার্সিং হোম টর্নাডোয় বিধ্বস্ত হয়ে যায়। সেখানে একজন মারা গিয়েছেন। ওই প্রদেশে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। মিসৌরি ও টেনেসিতেও টর্নাডোয় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন টুইট করে বলেন, ‘ঝড়ে অবিশ্বাস্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে’। তিনি আশ্বাস দেন, প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সবরকম ত্রাণ পাঠাবে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য ১৮৯ জন জাতীয় নিরাপত্তাকর্মীকে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেশিয়ার। মেফিল্ড নামক ছোট শহরেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে টর্নেডোর প্রভাব পড়েছে ইলিনয়, মিসৌরি এবং আরকানসাসে।