দেশের সময়:  তাঁর সঙ্গীত শিক্ষা শুরু হয় ১০ বছর বয়স থেকে। প্রথম গুরু প্রয়াত শম্ভু মুখোপাধ্যায়। এরপর কিছুদিনের জন্য শঙ্কর মণ্ডলের কাছে সঙ্গীতের চর্চা করেন তিনি। এরপর সঞ্জয় চক্রবর্তী ও রেশমী চক্রবর্তীর কাছে গানের শিক্ষা।

উত্তর ২৪ পরগনায় যাঁর শিকড়, সেই বিশাখ জ্যোতি (Bishakh Jyoti) বর্তমানে জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীতশিল্পী। ২০০৭ সালে ‘সারেগামাপা’-র মঞ্চ থেকে সঙ্গীতের যাত্রা শুরু হয় তাঁর। দর্শকদের ভালোবাসা পেলেও এই শো-তে বিজেতা হতে পারেননি তিনি। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন বিশাখ জ্যোতি।

এরপর ২০১১ সালে হিন্দি সারেগামাপা-র মঞ্চে অংশ নেন তিনি। জাতীয় এই শো-তেও বিচারক এবং দর্শকদের নজরে আসেন বিশাখ জ্যোতি। কিন্তু এখানেও দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেই শেষ হয় এই শো-তে তাঁর যাত্রা।

সাজিদ-ওজিদের সঙ্গে ২ বছর কাজ করেছিলেন তিনি। 
এরপর গোটা দেশে প্রচুর শো-করেন তিনি। এমনকি ছবির প্লেব্যাকেও শোনা গিয়েছিল তাঁর গলা। ‘বাবলু হ্যাপি হ্যায়’ (Babloo Happy Hai) ছবিতে শঙ্কর মহাদেবনের (Shankar Mahadevan) সঙ্গে কাজ করেন তিনি। একই সঙ্গে বহু গানের সুরকারও ছিলেন বিশাখ জ্যোতি।  শঙ্কর মহাদেবনের সঙ্গে গাওয়া রাগাশ্রয়ী গান ‘উঁহু ভাটিয়া’ (Uhe Batiya) বছরের সেরা রাগাশ্রয়ী গান হিসেবে মনোনীত হয়।

 সম্প্রতি ৬৭ জাতীয় ফিল্ম পুরষ্কারের মঞ্চে বাংলার এই ছেলেকে ‘ক্রান্তি দার্শি গুরুজী – অ্যাহেড অফ টাইম’ (Kranti Darshi Guruji- Ahead of Time) গানটির জন্য সেরা পরিচালকের সম্মানে সম্মানিত করা হয়। এরপর সারেগামাপা-র মঞ্চে জুড়ি বিচারকের দায়িত্ব পেয়েছেন বিশাখ জ্যোতি।

বলিউডের সুরের জগতে একাধিক কাজ করেছেন তিনি। তবে বাংলার এই তরুণের স্বপ্ন, তিনি একদিন গান বাঁধবেন এ আর রহমান -এর জন্য। সেরা সুরকারের সম্মান পাওয়া সবচেয়ে অল্পবয়স্ক সঙ্গীতশিল্পী হলেন বাংলার এই বিশাখ জ্যোতিই। জাতীয় পুরষ্কার পাওয়ার জন্য বিশাখ জ্যোতি ওই ছবির পরিচালক সুদীপ্ত সেনকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘ সীমান্ত শহর বনগাঁ থেকে উঠে আসা এমন অনেক মানুষের কাছে আমি অনুপ্রেরণা হতে পেরেছি যাঁরা সঙ্গীত নিয়ে এগিয়ে যেতে চান।’

প্রসঙ্গত, গত বছরের মে মাসে ভারতের ৬৭ তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তদের নাম জানানোর কথা ছিলো। কিন্তু মহামারী করোনার কারণে তা প্রায় দশ মাস পিছিয়ে চলতি বছরের ২২ মার্চ প্রকাশ পেয়েছিল। অবশেষে সোমবার (২৫ অক্টোবর) দিল্লির বিজ্ঞানভবনে অনুষ্ঠিত হয় ভারতের ৬৭তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান।

এবারের আসরে ‘ভোঁসলে’ ও ‘অসুরণ’ সিনেমার জন‌্য যথাক্রমে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন মনোজ বাজপেয়ী ও ধানুশ। ‘মণিকর্ণিকা’ ও ‘পাঙ্গা’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেলেন কঙ্গনা রানাউত। ৫১তম দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন দক্ষিণী সিনেমার মেগাস্টার রজনীকান্ত।

এদিন ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু উপস্থিত হয়ে বিজয়ীদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন। এছাড়াও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রাপ্ত পুরস্কার বিজয়ীদের তালিকা এক নজরে দেখুন ;

সেরা বাংলা চলচ্চিত্র: গুমনামীসেরা হিন্দি চলচ্চিত্র: ছিছোরেসেরা সহ-অভিনেতা: বিজয় সেতুপতি (সুপার ডিলাক্স, তামিল)সেরা সহ-অভিনেত্রী: পল্লবী জোশি (দ্য তশখন্ত ফাইল, হিন্দি)সেরা সংগীত পরিচালক: প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায় (জ্যেষ্ঠপুত্র)সেরা পরিচালক: সঞ্জয় পুরাণ সিংহ চৌহান (বাহাত্তর হুরায়ে)সেরা পরিচালক (ডেবিউ): মাথুকুট্টি জেভিয়ার (হেলেন, মালায়লাম)সেরা পরিচালক: সুধাংশু সারিয়া (নক নক নক)সেরা চিত্রনাট্যকার (মৌলিক): কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (জ্যেষ্ঠপুত্র)সেরা চিত্রনাট্যকার (কাহিনি অবলম্বনে): সৃজিত মুখার্জি (গুমনামী)সেরা শিশুশিল্পী: নাগা বিশাল (কেডি, তামিল)

সেরা সংগীত পরিচালক: বিশাখ জ্যোতি (ক্রান্তিদর্শী গুরুজি, অ্যাহেড অব টাইমস)সেরা চিত্রগ্রাহক: জালিকাট্টু

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here