দেশের সময়,বনগাঁ: বনগাঁয় বিজেপিতে যোগদান অব্যাহত। একদা তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ মহকুমা। একাধিক ইতিহাসের সাক্ষী। যদিও সময়ের সঙ্গে তালমিলিয়ে বনগাঁয় ধীরে ধীরে সাংগঠনিক শক্তি অনেকটাই মজবুত করে শাসকদল তৃণমূল। এবার সেই তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতেই থাবা বসাল বিজেপি। বুধবার সন্ধ্যায় ২১এর ডাক দিয়ে ২১টি ঢাক বাজিয়ে বিজয় দশমী পালন করেন বিজেপি নেতা দেবদাস মণ্ডল। এদিন আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দিলেন ৬০০ জন তৃণমূল কর্মী সমর্থক, বলে জানান দেবদাস মণ্ডল।
শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, নেতা-কর্মীদের। আর সেই অভিযোগের জেরেই নাকি এদিন বনগাঁ শহরের ৬৫০ জন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন বলে জানিয়েছেন দেবদাস বাবু।
বনগাঁ মতিগঞ্জ এলাকায় বিজেপির বিজয়া সন্মেলনী অনুষ্ঠান ছিল, সেই অনুষ্ঠানে ২১এর ভোটে জয়ের ডাক দিয়ে ২১টি ঢাক বাজিয়ে বিজয় সন্মেলনী অনুষ্ঠান করা হয় বলে দাবি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের। এরপর তৃণমূল ছেড়ে চলে আসা কর্মীদের হাতে বিজেপির দলীয় পতাকা তুলে দেন বারাসত সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শংকর চট্টোপাধ্যায়, উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ দক্ষিনের বিধায় বিশ্বজিৎ দাস এবং দেবদাস মণ্ডল।
উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় বিজেপি নেতা শোভন বৈদ্য, মধুসূদন মণ্ডল সহ আরও অনেকে। বিজেপিতে যোগ দিয়েই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তাঁদের কথায়, আমরা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তৃণমূল দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম কিন্তু ওই দলে থেকে কোন সম্মান জোটেনি , আরও অভিযোগের সুর চড়িয়ে তাঁরা জানান , দিনের পর দিন স্থানীয় নেতাদের তোলাবাজি দুর্নীতি ও খারাপ ব্যবহারে ক্ষুব্ধ। এই বিষয়ে উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ দল ছেড়ে আসা কর্মীদের। আর সেই কারণে বাধ্য হয়েই বিজেপিতে যোগদান করলেন বলে জানিয়েছেন দল ছেড়ে আসা ওই সমস্ত কর্মীরা৷ অন্যদিকে, বিজেপি নেতা দেবদাস মণ্ডল বলেন, বনগাঁর তৃণমূল নেতাদের অত্যাচার, তোলাবাজি, জুলুমবাজিতে এলাকার মানুষ তৃণমূলকে আর চাইছে না। যেভাবে নরেন্দ্র মোদী দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সেই দেখে তৃণমূল ছেড়ে এখন দলে দলে মানুষ বিজেপিতে যোগদান করছেন।
এবিষয়ে বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ বলেন, মুকুল রায়,সৌমিত্র খাঁ থেকে শুরু করে বাংলার ঘরে ঘরে এরা আসলে বিজেপির ঘর জামাই, বনগাঁতেও তেমন দু’একজন ঘর জামাই নেতা সেজে আছে, হাতে গোনা ৬ জন বিজেপি নেতা কর্মী নেই বনগাঁয়, কোভিড পরিস্থিতিতে রাস্তায় কোন সুস্থ্ মানুষ রাস্তায় বেড়চ্ছেননা,সেখানে ৬০০ জন তৃণমূল সমর্থকের যোগদানটা আসলে জেগে স্বপ্ন দেখার মতন। এর কোন বাস্তব চিএ নেই।
দরজায় কড়া নাড়ছে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন।একাধিকবার প্রচারে রাজ্যে আসার কথা জে পি নাড্ডার। ২০২১-এর বিধানসভা জিততে মরিয়া গেরুয়া শিবির।এদিকে রাজ্যের শাসক দলও সূচ পরিমাণ জমি ছাড়তে নারাজ, বলাই যায় দেশের সীমান্ত শহর বনগাঁ থেকে গোটা বাংলায় ২০২১ -এর বাক যুদ্ধের শুরু হয়ে গেছে বিজয় দশমী যেতেই।