দেশের সময়ওয়েব ডেস্কঃ শুক্রবার বাগদাদে মার্কিন হানায় নিহত হয়েছেন ইরানের সেনাপ্রধান কাসেম সুলেমানি। এর পরে ইরাকের তদারকি সরকারের প্রধান আদেল আবদেল মাহদি বলেন, আমেরিকা আমাদের দেশে হানা দিয়েছে। এর ফলে বিধ্বংসী যুদ্ধ শুরু হতে পারে। তাঁর কথায়, “ইরাকের অভ্যন্তরে যেভাবে এক সেনাপ্রধানকে হত্যা করা হয়েছে তা এদেশের সরকার ও জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসাবেই গণ্য করা হবে। এর ফলে বড় ধরনের যুদ্ধ বেধে যেতে পারে।”
মার্কিন হানায় ইরানের কম্যান্ডার মেজর জেনারেল কাসেম সোলেমানি বাদে ইরাকের হাশাদ অল শাবি বাহিনীর উপপ্রধান আবু মাহদি অল মুহানদিস নিহত হয়েছেন। ইরাকের তদারকি সরকার বিবৃতি দিয়ে বলেছে, “একটি শর্তে আমেরিকার সেনাবাহিনীকে ইরাকে থাকতে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সেই শর্ত আমেরিকা ভঙ্গ করেছে।”
শুক্রবার ভোররাতে আচমকাই বাগদাদ বিমানবন্দর লক্ষ্য করে অন্তত চারটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। মার্কিন বাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে বাগদাদ বিমানবন্দরে মোতায়েন হাশদ আশ-শাবির দু’টি গাড়ি লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালানো হয়।
এই ঘটনার পরেই নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে আমেরিকার পতাকা পোস্ট করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পেন্টাগনের তরফে সরকারি বিবৃতি দিয়ে এই হামলার কথা স্বীকারও করা হয়। বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই এই হামলা চালিয়েছে তারা।
ইরাকের আধাসামরিক বাহিনীর এক আধিকারিক জানান, ইরান থেকে কয়েকজন শীর্ষকর্তার ইরাকে আসার কথা ছিল এ দিন। সেই কারণেই বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মোতায়েন ছিল সেনা। পৌঁছেছিলেন বিমানবন্দরের প্রোটোকল অফিসার মহম্মদ রেদাও। তিনি যখন ইরান এলিট গার্ড ফোর্সের প্রধান সোলেমানি ও মুহানদিসকে নিয়ে বিমানবন্দরে থেকে বেরোচ্ছিলেন, তখনই তিনটি রকেট পড়ে। ঘটনাস্থলে থাকা সকলের মৃত্যু হয়। দেহগুলি এমন ভাবে পুড়ে যায় যে চেনা যাচ্ছে না।
ঘটনার প্রেক্ষাপট অবশ্য তৈরি হয়েছিল গত রবিবারই। হাশদ আশ-শাবির কয়েকটি ঘাঁটিতে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়ে অন্তত ৩০ জনকে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে আমেরিকার বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয় স্থানীয়দের। দূতাবাসের একটি অংশে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। দাবি ওঠে ইরাক থেকে মার্কিন সেনাদের সরানো হোক।