তৃণমূলের পর এবার বৈশাখী কাটা বিঁধতে শুরু করেছে বিজেপির অন্দরমোহলেও

0
861
দেশের সময়–তৃণমূলের পর এবার বৈশাখী কাটা বিঁধতে শুরু করেছে
বিজেপির অন্দরমোহলেও।এ বিষয়ে আগাম আভাস দেশের সময় আগেই দিয়ে
রেখেছিল।আমরাই প্রথমে বিশেষ প্রতিবেদনে বলে দিয়েছিলাম বৈশাখীকে হজম করা
বিজেপির পক্ষে সহজ হবে না।

তাঁকে নিয়ে রাজ্য বিজেপির যে সমস্যা তৈরি হতেযাচ্ছে তার ইঙ্গিতও আমরা দিয়েছিলাম আগের এক প্রতিবেদনেই।গত কয়েকদিনের
ঘটনা পরম্পরা প্রমাণ করছে আমাদের খবর ঠিক ছিল।আমরা এটাও বলেছিলাম দেবশ্রী
রায়কে নিয়ে বৈশাখীর আব্দারকে মানতে পারছেন না বিজেপি রাজ্য নেতাদের একটা
বড় অংশই।

সেই ইঙ্গিত সত্য প্রমাণ করে রাজ্য বিজেপির পক্ষে জয় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছ্ন,দেবশ্রী রায়কেই বিজেপির দরকার,বৈশাখীকে নয়।বৈশাখীর ব্যক্তিগত ইচ্ছা অনিচ্ছাকে দল ও শোভনের উপর
চাপিয়ে দেওয়ারও তীব্র বিরোধিতা করেন বিজেপির নেতা ও একসময়ের অভিনেতা জয়
বন্দ্যোপাধ্যায়।বস্তুত একসময় তৃণমূল যেমন বৈশাখীকে নিয়ে বিড়ম্বনার মধ্যে
পড়েছিল,বৈশাখী কাটা যেমন সে সময় তৃণমূলকে বিদ্ধ করেছিল এখন একই রকমভাবে সেই কাটাই বিদ্ধ করছে বিজেপিকেও।

বিজেপির অন্দরমোহলের একটা বড় অংশই মনে করছে বৈশাখী আসলে এক ভয়াবহ
উচ্ছাকাঙ্ক্ষি মহিলা,রাজনীতিতে যিনি শোভনকে ব্যবহার করে ক্রমে উপর দিকে
উঠার অংক কষে চলেছেন।সেই জন্যই তাঁর ব্যক্তিগত ইচ্ছে অনিচ্ছেকেও তিনি
দলের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন।

তা না হলে দেবশ্রী রায় বিজেপিতে যোগ দেবে কী দেবে না তা বলে দেওয়ার সাহস বৈশাখী কোনভাবেই দেখাতেন না।শোভনকেও এ বিষয়
তিনি স্রেফ তাঁর হাতের পুতুলের মত ব্যবহার করতেন না।তিনি রাজনৈতিক
নেত্রীর হওয়ার যে দাবি করছে তা মানতে রাজি নয় বিজেপির রাজ্য নেতাদের বেশী সংখ্যক নেতারাই{তারা মনে করছেন বৈশাখীকে নেত্রী হিসেবে বেশী গুরুত্ব দিলে অন্য নেত্রীরা বিরূপ হতে পারেন।

লকেট চট্টোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই বৈশাখীর
সম্পর্কে স্পস্ট জানিয়েছেন,দলের উপরে কেউ নন,দল করতে হলে দলের নীতি ও
আদর্শকেই মান্যতা দিতে হবে।ইঙ্গিত যে পরিষ্কার বৈশাখীর দিকেই ছিল তাতে
কোন সন্দেহ নেই।সব মিলিয়ে বৈশাখী এখন বিজেপির গলার কাটা হয়ে উঠেছে।বিজেপি
যে কোন উপায়ে সেই কাটা উপড়ে ফেলতে ব্যস্ত।

বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদেরও এই
বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে যে দেবশ্রী রায় বৈশাখীর চেয়ে এ রাজ্যে অনেক
প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।সিনেমার অভিনেত্রী হিসেবে তাঁকে এ রাজ্যের সব মানুষ চেনেন।এমনকী রাজনীতিক হিসেবেও দেবশ্রী রায় বৈশাখীর চেয়ে এগিয়ে,দুবারের বিধায়ক তিনি,তাই দেবশ্রী দলে এলে দল উপকৃত হবে বলেই রাজ্য
বিজেপির বেশীভাগ নেতাই মনে করেন।

দেবশ্রী রায়কে যেভাবে দিল্লির অফিস থেকে
ফরত পাঠানো হয়েছিল তা একেবারেই ভালভাবে নিচ্ছে না রাজ্য বিজেপি।বৈশাখীকে
প্রয়োজনের তুলনায় বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়ে গেছে বলে মনে করছে রাজ্য বিজেপির একটা বড় অংশই।

সব মিলিয়ে বৈশীখী কাটা নিয়ে ব্যতিব্যস্ত বিজেপি এখন এই কাটা সরিয়ে ফেলতে ব্যস্ত।
রাজ্য বিজেপির অন্দরের খবর,সম্প্রতি দিলীপ ঘোষকে গোটা বিষয়টার একটা হেস্ত নেস্ত করে ফেলার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতারা সেই সূত্রেই তিনি রাজ্য নেতাদের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন তাঁরা সকলেই প্রায় বৈশাখীর আব্দার না মানার পক্ষে মত দিয়েছেন।বৈশাখীকে বাগে আনার একটা
প্রয়াস প্রথমদিকে করেছিল বিজেপি,কিন্তু বৈশাখী যেভাবে একের পর এক বিজেপির
রাজ্য নেতাদের অস্বস্তি বাড়িয়েই গেছেন তাতে বিজেপি এখন আর বৈশাখী সম্পর্কে কোন নরম মানসিকতা দেখাতে রাজি নয় বলে জানা যাচ্ছে।

সর্বশেষ যা খবর তাতে বিজেপিতে বৈশাখী চ্যাপ্টার ক্লোজড হতে চলেছে,এ বিষয়ে চুড়ান্ত
সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় স্তরে নেওয়া হয়ে গেছে।কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের কথা জেনেই এ রাজ্যে বৈশাখী বিরোধী নেতারা আর উগ্র হয়ে বৈশাখীকে আক্রমণ করতে শুরু করছে বলে অনেকেই মনে করছে।জয় কিংবা লকেট আসলে একটা বিশেষ সিদ্ধান্তের প্রতিফলন ঘটাচ্ছেন তাদের প্রতিক্রিয়ায় এমনটাই মনে করা হচ্ছে।

মোটের উপর একটা বিষয় পরিষ্কার বিজেপিতে বৈশাখীকে থাকতে হলে বিজেপির শর্তেই থাকতে হবে নইলে বিজেপি ছাড়তে হবে।সূত্রের খবর বৈশাখী শোভনও বেরিয়ে আসার রাস্তা খুঁজছে।তবে সেই রাস্তাটা যে সহজ রাস্তা হবে না তা জানেন শোভন ও বৈশাখী দুজনেই।তবে ক্ষতি যা হবার তা হবে শোভনেরই,কারণ তাঁর
রাজনৈতিক কেরিয়ার প্রায় শেষ হতে বসেছে বৈশাখী ঝড়ে।এখনও তাঁর হুঁশ না ফিরলে তাতে যে রাজনৈতিক বাণপ্রস্তেই যেতে হবে তা কিন্তু নিশ্চিত করেই বলা যায়।

Previous article২ বছেরও পোশাকের জন্য সরকারি অনুদানের টাকা না পেয়ে স্কুলের গেটে বিক্ষোভ দেখালেন স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা
Next articleবনগাঁ পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বপাড়া হাজারিলাল প্রাথমিক স্কুলের রান্না ঘরে তালা, বন্ধ রইল মিডডে মিলের রান্না

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here