দেশের সময়, বনগাঁ : গুরুত্বপূর্ণ ইছামতী নদীর পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছেন নদিয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনার নদীপাড়ের মানুষজন। সেই দাবি মেনে কয়েকবার নদীর সংস্কার করা হলেও পূর্ণাঙ্গ সংস্কার অবশ্য হয়নি। অথার্ৎ নদীর উৎসমুখ থেকে সংস্কারের যে দাবি তুলেছিলেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা তা বারবার উপেক্ষিত থেকে গিয়েছে। দেখুন ভিডিও

গত কয়েক দশকে রাজ্যের নানা প্রান্তে হারিয়ে গিয়েছে প্রায় ৬৮টি নদী। সুবর্ণমতী, সোনাই, চৈতি, চালুন্দিয়া, কোদালিয়া, নাওভাঙা, পাগলা চণ্ডী, অঞ্জনা, সুরধনি, ব্রাহ্মণী, ডুমনি, চালতা, পাগলা, সরস্বতী, গাঙুর, নুনিয়া, ঘরঘরিয়া, যমুনেশ্বরীর মতো নদীগুলি হয় সম্পূর্ণ বিলুপ্ত, না-হয় বিলুপ্তির পথে। ঠিক তেমনই মৃতপ্রায় ইছামতী৷

ইছামতী বাঁচাতে ১৯৯৭ সালে গড়ে ওঠে পশ্চিমবঙ্গ ইছামতী নদী সংস্কার সহায়তা কমিটি ও বিভিন্ন সংগঠন৷ তেমনই এক কমিটির সদস্য জানান, ইছামতী নদীর উৎসমুখে জল না-থাকায় মাজদিয়ার পাবাখালি থেকে ভাজনঘাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এলাকায় এখন জল নেই৷

তাঁদের দাবি, ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে এই অংশটি সংস্কার করা হোক। সঙ্গে নদীর সীমানা নির্ধারণ করা হোক। কারণ বহু স্থানে নদী জবরদখল হয়ে যাচ্ছে।’

কমিটির সদস্যরা আরও জানান, ‘ বর্তমান সরকারের আমলে একবার কালাঞ্চি থেকে বেড়িগোপালপুর পর্যন্ত, আর একবার গোপালপুর থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত পলি তোলা হয়েছিল। কিন্তু উৎসমুখ থেকে জল না-আসায় ইছামতী এখন মৃতপ্রায়। তাঁদের দাবি, উৎসমুখ সংস্কার করা হোক।’

সাতভাই কালীতলা বাসিন্দারা জানান, সেখানে রেলসেতুর নীচে থেকে বনগাঁ হয়ে দত্তফুলিয়া পর্যন্ত দীর্ঘ নদীপথ কচুরিপানায় ভর্তি হয়ে আছে ৷ এখন সেখানে বিষধর সাপ ও পোঁকাদের আস্তানা৷ পুজোর প্রয়োজনীয় এক ঘটি নদীরজলও সংগ্রহ করার উপায় নেই৷ নৌকা চলাচল তাঁদের কাছে এখন স্বগ্ন বলে মনে হয়৷ মৎসজীবীদের রুটিরুজি বন্ধ হয়েগেছে অনেক কাল আগেই৷ তাঁদের দাবি উপেক্ষিত ইছামতী নদীর সংস্কার হোক ৷ নইলে অচিরেই মৃত্যু হবে এই নদীর৷

বনগাঁর বিজেপি নেতা দেবদাস মন্ডল বলেন , “আলিবাবা চল্লিশ চোরের দল তৃণমূল!” সংস্কারের নামে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা ইছামতী নদীর বালি তুলে নিয়েছে বনগাঁয় ৷বিজেপি নেতা আরও বলেন, সরীসৃপ প্রাণীদের মত ঘুমিয়ে আছে তৃণমূল সরকার কোন হেলদোল নেই এই নদী সংস্কার নিয়ে৷ প্রথমে নদী সংস্কারের নামে নদীর পলিমাটি তোলার জন্য কেন্দ্রের দেওয়া টাকা স্থানীয় নেতাদের পকেটে চুকেছে। এখন তো শুনছি সারাবছর কচুরিপানা দিয়ে হস্ত শিল্প হবে তা আবার বিক্রিও হবে৷ তাহলে কি নদীর বুকে কচুরি পানার চাষ হবে এটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে বনগাঁর বাসিন্দাদের কাছে ৷

বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ বলেন,নদী সংস্কারের ভাবে সম্পূর্ণ কেন্দ্রের বিষয়৷ কেন্দ্রের গাফিলতির জন্য আজ ইছামতী শুধু নয় এই রকম আরও বহু নদী নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে৷ তবে পুরসভার পক্ষ থেকে খুব দ্রুত কচুরি পানা পরিষ্কার করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here