দেশের সময়: বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নতুন করে অনাস্থা প্রস্তাব আনার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, নতুন করে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে হবে ১২ দিনের মধ্যে। এই প্রক্রিয়াটি নিজের দফতরে দেখভাল করবেন জেলাশাসক।

ভোটের দিন কাউন্সিলরদের নিরাপত্তা দেওয়ার যাবতীয় দায়িত্ব থাকবে জেলার পুলিশ সুপারের উপরে। যতদিন এই প্রক্রিয়া চলবে, ততদিন পুরসভার প্রশাসনিক কাজকর্ম দেখভাল করবেন সংশ্লিষ্ট মহকুমাশাসক বা পুরসভার একজিকিউটিভ অফিসার।

১২ দিনের মধ্যে আস্থা ভোট না হলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা রুজু হবে। এই নির্দেশের পাশাপাশি বিচারপতি এ দিন পুরসভার আগের দু’টি রেজোলিউশন ও আস্থা ভোট ঘিরে ১৬ জুলাইয়ের যাবতীয় ফলাফলকে খারিজ করে দিয়েছেন।

গত ২২ জুলাই রায় ঘোষণা হওয়ার কথা ছিল বনগাঁ মামলার। কিন্তু রায় না দিয়ে বিচারপতি ওই দিন নির্দেশ দেন, ১৬ জুলাই কী ঘটেছিল তা হলফনামা আকারে দিতে হবে। তার ভিত্তিতে এ দিন শুনানি হয় হাইকোর্টে।

১১ জন কাউন্সিলরকে বিচারপতির স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন, সে দিন ঠিক কী হয়েছিল, তা হলফনামায় জানান। কে, কীভাবে বাধা দিয়েছিল ঘটনার দিন, তাও উল্লেখ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। বিজেপি-র আইনজীবীকে বিচারপতি বলেন, “প্রমাণ করুন, সেদিন ১১ জনকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।”

শাসকদলের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, “এটা কী আইন? আমাকে তো নতুন করে অঙ্ক শিখতে হবে, যেখানে ‘১০’ ‘১১’-র থেকে বেশি হয়।” চেয়ারম্যানের উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য ছিল, “এখনও চেয়ার আঁকড়ে বসে আছেন? আপনি এত নির্লজ্জ কেন?”

বনগাঁর মোট আসন ২২। জুলাই মাসে বিজেপি-র পক্ষে ছিলেন ১১ জন। কিন্তু ক্যালেন্ডার জুলাই থেকে অগস্টে ঢুকতেই সমীকরণ পাল্টে গিয়েছে। বিজেপি-তে যাওয়া চার কাউন্সিলর তৃণমূলের ঘরে ফিরেছেন। ফলে তৃণমূল এখন ১৪। পর্যবেক্ষকদের মতে, বারো দিনে বড় কোনও বদল না হলে, আস্থা ভোটে বনগাঁ থাকবে তৃণমূলেরই।

বনগাঁ পৌরসভা সংক্রান্ত সোমবারের হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে বিদ্রোহী কাউন্সিলর সোমাঞ্জনা মুখার্জী বলেন,

হাইকোর্টের রায়েই় প্রমাণিত গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। সেদিন যে পেশী শক্তির জোরে পুরসভার় আস্থা ভোট করা হয়েছিল বিচারক তার রায়ে পরিষ্কার করে দিয়েছেন।

১২ দিনের মধ্যে নতুন করে অনাস্থা আনার যে কথা হাইকোর্ট বলেছে তার প্রেক্ষিতে সোমাঞ্জনা বলেন, বনগাঁর বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের জানা। নতুন করে অনাস্থা আনা হবে কিনা সেটা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর জানানো হবে।

অন্যদিকে এ ব্যাপারে পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ‍্য বলেন, হাইকোর্টের রায় এখনো হাতে পাইনি। রায় হাতে পাওয়ার পর এ ব্যাপারে মতামত জানাবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here