করোনা পরিস্থিতিতে বিদেশযাত্রা প্রায় বন্ধই বলাচলে। দেশে বা বিদেশে কাউকে কোথাও যেতে হলেও মানতে হচ্ছে কোভিডের বহু বিধিনিষেধ। তবে এ সব নিয়ম তো শুধু মানুষের জন্য! দেবদেবীদের বিদেশযাত্রায় ছাড় আছে। তবে কিছু অতিরিক্ত ঝক্কিও বেড়েছে এক্ষেত্রেও। তাই করোনা পরিস্থিতিতে এবছর গত শুক্রবার রাত ১২টা নাগাদ বাক্সবন্দি হয়ে জলপথে ব্যাংককের বিষ্ণুমন্দিরে।পাড়ি দিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার হাবরার পৃথিবা গ্রামের প্রতিমা শিল্পী পরিমল পালের তৈরি দুর্গা।
শিল্পীর কথায়, ব্যাংককের বিষ্ণুমন্দিরে। এই মূর্তি পূজিত হবে। অন্যান্যবার তিনি সশরীরে সেদেশে গিয়ে মূর্তি গড়ে দিয়ে আসতেন, কিন্তু এ বছর হাবরায় তার বাড়িতে মূর্তি তৈরি করে তা জলপথে পাড়ি দিল থাইল্যান্ডের উদ্দেশে। এ বছর একই সঙ্গে বেশকিছু গণেশের মূর্তিও রওনা দিল থাইল্যান্ডে। এবার সেখান থেকে দূর্গা সহ অতিরিক্ত ২৪টি গণেশ মূর্তিরও বরাত পেয়েছেন তিনি।
সব মূর্তি জাহাজে চাপিয়ে যথা সময়ে সপরিবারে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পরিমলবাবুর স্টুডিও থেকে শুক্রবার রাত ১২টা নাগাদ চূড়ান্ত ব্যস্ততার সঙ্গে কলকাতা খিদিরপুর বন্দরে পৌঁছায়,সেখান থেকেই জাহাজে চেপে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের একটি বিষ্ণুমন্দিরে পৌঁছবে মা দূর্গা ।
শিল্পী পরিমলবাবুর বাড়ি হাবড়ার পৃথিবা গ্রাম পঞ্চায়েতের বানীপুর আমবাগান টালিভাটা এলাকায়। তিনি জানান, ২০১৩ সাল থেকে প্রায় ৮ বছর ধরে তিনি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের একটি বিষ্ণুমন্দিরের জন্য দুর্গাপ্রতিমা গড়ে আসছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুজো উদ্যোক্তারাই পাঠিয়ে দিতেন তাঁর বিমানযাত্রার টিকিট ও আনুসঙ্গিক খরচপাতি। সেখানে গিয়েই মণ্ডপে গড়তেন প্রায় ১২ ফুট উচ্চতার দুর্গাপ্রতিমা। মৃন্ময়ী মায়ের রূপ দেখে ধন্য ধন্য করতেন প্রবাসী বাঙালীরা। এমনটাই হয়ে আসছিল ২০১৩ থেকে।
গঙ্গার মাটি, জল, বিচুলি, বাঁশ ধাপে ধাপে রূপ পাচ্ছে প্রতিমা। থার্মোকল, চুমকিতে তৈরি গড়তেন মায়ের সাজ। পরিমলবাবু জানান, ব্যাংককেও দিনে দিনে গণেশ পুজোর প্রচলন বাড়ছে। এই প্রবণতা পশ্চিমবঙ্গেও দেখা যাচ্ছে।
তাই এবার তিনি সব মিলিয়ে ২৪ টি গণেশ মূর্তি ও একটি সপরিবারে দূর্গা মূর্তি পাঠালেন সেখানে। এক ফুট থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত নানা উচ্চতার ২৪ টি গণেশমূর্তি গড়েছেন তিনি। সেগুলি কাঠের বাক্স বানিয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত করে থাইল্যান্ডে যাওয়ার জন্য গত শুক্রবারই সব মূর্তিই বাক্সবন্দি করে থাইল্যান্ডগামী জাহাজে তুলে দেওয়া হয়েছে। ব্যাংককের পুজো কমিটির এক সদস্য মুন্না সিং জানান হাবরার পরিমল পালের হাতে তৈরি এইসব গনেশের মূর্তি সেখানকার বিষ্ণুমন্দিরের পাশাপাশি পুঁজিত হবে ব্যাংককের বিভিন্ন জায়গায়।