দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কের উৎসবে মেতেছে ত্রিপুরা। জনজাতি অংশের উৎসব হলেও সামগ্রিক ভাবে গোটা রাজ্যেই উদযাপিত হয় কের পুজো।কের কথার অর্থ সীমানা বা গণ্ডি। ত্রিপুরার আদি জনজাতির মানুষ দীর্ঘকাল ধরেই এই পুজো করে আসছে। এক সপ্তাহ ধরে এই পুজোর আচার অনুষ্ঠান পালিত হয়। ত্রিপুরাবাসীর মন পেতে এবার এই পুজোকেই অস্ত্র করছে ঘাসফুল শিবিরের নেতামন্ত্রীরা। শুভেচ্ছাবার্তায় উপচে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়া। বলাই বাহুল্য এক বছর আগে ছবিটা এমন ছিল না। ২০২১ বাংলা বিধানসভা নির্বাচনই প্রকৃতার্থে চোখ খুলে দিয়েছে তৃণমূলের। পড়শি রাজ্যে সম্প্রসারণের কথা বুকফুলিয়েই ঘোষণা করেছে দল।

ত্রিপুরায় যখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি সরগরম, তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা যখন আগরতলায় কার্যত তাবু টাঙিয়ে ফেলেছেন, দেখা গেল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরাবাসীর উদ্দেশে কের পুজোর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। যা নিয়ে মমতাকে পাল্টা টিপ্পনি করেছে ত্রিপুরা বিজেপি-ও।

এমনিতে উৎসব, পার্বণ, মনীষীদের জন্ম-মৃত্যু দিন, দুর্ঘটনা—ইত্যাদি প্রভৃতিতে টুইট করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিত্য অভ্যেস। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও একই রকম। কিন্তু বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার এই উৎসব নিয়ে এদিন দুপুর পর্যন্ত মোদীর টুইটার হ্যান্ডেল থেকে কোনও টুইট আসেনি। তার আগেই কের পুজোর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মমতা।

ত্রিপুরা বিজেপির মুখপাত্র নব্যেন্দু ভট্টাচার্য তৃণমূলনেত্রীর উদ্দেশে কটাক্ষ করে বলেছেন, “একেই বলে হঠাৎ দরদ!” তাঁর কথায়, “কয়েক দিন আগেই জনজাতি অংশের সবচেয়ে বড় উৎসব খার্চি পুজো গিয়েছে। কই তখন তো দিদিমণি টুইট করেননি। আসলে উৎসবের শুভেচ্ছাতেও রয়েছে ভোটের অঙ্ক। ত্রিপুরার মানুষ সব বোঝেন।”
সপ্তাহ দুয়েক আগেই ছিল খার্চি পুজো। সেই উৎসবে ত্রিপুরার সমস্ত সরকারি সফতর ছুটি থাকে। কিন্তু এবার কোভিডের কারণে সেই ইয়ৎসব সে ভাবে জাঁকজমক করে পালিত হয়নি। কের পুজোও উদযাপিত হচ্ছে বিধিনিষেধের মধ্যেই।

আইপ্যাক কর্মীদের আটক করা নিয়ে গত কয়েকদিন হইহই চলেছে ত্রিপুরায়। বাংলা থেকে প্রথমে আগরতলায় পৌঁছন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং মলয় ঘটক। সঙ্গে যান আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। একদিন পর আগরতলায় পৌঁছন দুই সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং কাকলি ঘোষ দস্তিদার।

এদিন আবার ত্রিপুরায় পৌঁছচ্ছেন তৃণমূলের তিন তরুণ ছাত্র-যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা এবং জয়া দত্ত। সোমবার দুপুরে আগরতলায় পৌঁছবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

আইপ্যাককর্মীদের আগাম জামিন এবং হোটেলের বন্দিদশা থেকে মুক্তি হলেও তৃণমূল ব্যাপারটাকে থিতু হতে দিতে চাইছেন না। একের পর এক নেতানেত্রীদের আগরতলায় পাঠিয়ে বিপ্লব দেব সরকারকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে তৃণমূল। পাল্টা বিজেপি দেখাতে চাইছে, তৃণমূল ত্রিপুরার ঘরের লোক সাজতে চাইচলেও আসলে ওরা বহিরাগতই। এসবের মধ্যেই জোরকদমে চলছে জমি জরিপ। ত্রিপুরার মাটিতে চষছেন আইপ্যাকের প্রতিনিধিরা। মনে করা হচ্ছে, অভিষেক গিয়েই আগামী কয়েক মাসের সাংগঠনিক নীল নকশাটি তৈরি করে দেবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here