দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বৃহস্পতিবার হাথরাসে মৃত তরুণীর বাড়িতে যাচ্ছিলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বোন তথা কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। হাথরাসের ১৪২ কিলোমিটার আগেই আটকে দেওয়া হয় তাঁদের গাড়ি। রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা তখন গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে থাকেন। পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। রাহুল অভিযোগ করেন, তাঁকে পুলিশ ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়েছে। লাঠিচার্জও করেছে।
রাহুল বলেন, “পুলিশ একটু আগেই আমাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। আমাদের ওপরে লাঠিচার্জ করেছে। আমি প্রশ্ন করতে চাই, এদেশে কি কেবল মোদীজি রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পারেন? সাধারণ মানুষের কি হাঁটার অধিকার নেই? আমাদের গাড়ি থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই আমরা হাঁটছিলাম।” পুলিশের কাছে রাহুল জানতে চান, কী অপরাধে তাঁদের গ্রেফতার করা হল?
রাহুল, প্রিয়ঙ্কার সফরের আগে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ রাজ্যে বড় জমায়েতের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। উত্তরপ্রদেশের সীমান্তও ব্যারিকেড করে আটকে দেওয়া হয়। তাদের দাবি, করোনা অতিমহামারী ঠেকানোর জন্যই এই সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
এদিন সকাল থেকেই কংগ্রেস সমর্থকরা উত্তরপ্রদেশের নানা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। বেলায় রাহুলের গাড়ি দিল্লি পেরিয়ে যেই উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডায় ঢুকেছে, সঙ্গে সঙ্গে তা থামিয়ে দেওয়া হয়। রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গাড়ি থেকে নেমে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। সেখানে বহু সংখ্যক কংগ্রেস কর্মী জড়ো হয়েছিলেন। রাহুলরা সামনের দিকে এগোতে চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের ঠেলে সরিয়ে দেয়।
এদিন সমাজবাদী পার্টিও মৃত তরুণীর গ্রামে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু গ্রামের সীমান্তে ওই দলের সমর্থকদের আটকে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মিডিয়াকেও সেই গ্রামে যেতে দেওয়া হয়নি।
অভিযোগ, গত ১৪ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে এক দলিত তরুণীকে চার উচ্চবর্ণের ব্যক্তি ধর্ষণ করে। গত মঙ্গলবার দিল্লির হাসপাতালে ২০ বছরের ওই তরুণী মারা যান। পুলিশ রাতের বেলায় তাঁর দেহ পুড়িয়ে দেয়।
ধর্ষিতার পরিবারের দাবি, তাঁরা দলিত হওয়ার জন্যই পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরি করেছিল। গণধর্ষণের পরে তরুণীর ওপরে বীভৎস অত্যাচার করে অপরাধীরা। তাঁর শরীরে নানা জায়গায় হাড় ভেঙে যায়। সারা শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়। ঘাড়ে গভীর ক্ষত থাকার জন্য তাঁর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। পুলিশ জানায়, তরুণীর জিভেও ক্ষত ছিল। চার অপরাধী যখন তাঁকে গলা টিপে মারার চেষ্টা করছিল, তখন তিনি নিজের জিভ কামড়ে ফেলেন।
অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জোর করে তাঁর দেহ আত্মীয়দের থেকে কেড়ে নিয়ে যায়। পরিবারকে বাড়িতে আটকে রাখা হয়। কয়েকজন পুলিশকর্মী মিলে রাত আড়াইটেয় তরুণীর দেহ পুড়িয়ে দেন। ছবি টুইটার .