দেশের সময় ওয়েব ডেস্ক: পুলওয়ামার ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মাথায় ফের বিস্ফোরণ জম্মু-কাশ্মীরে। এ বার সীমান্ত লাগোয়া রাজৌরির নৌসেরা সেক্টরে। তল্লাশির সময় আইইডি বিস্ফোরণে শহিদ হয়েছেন সেনাবাহিনীর এক মেজর। গুরুতর জখম অন্তত আরও এক জওয়ান।

শুক্রবার দুপুর তিনটে নাগাদ ঘটে এই বিস্ফোরণ। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পেট্রলে বেরিয়ে সীমান্তের কাছাকাছি একটি জায়গার নরম মাটি দেখে সন্দেহ হয় সেনাকর্মীদের। ওই জায়গায় তল্লাশির সময়েই আচমকা এই বিস্ফোরণ ঘটে।


সেনা সূত্রে খবর, এ দিন বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়েই ঘটেছে এই বিস্ফোরণ। সেনাবাহিনীর অনুমান, সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী জঙ্গিরাই এই বিস্ফোরক রেখে গিয়েছিল সীমান্তে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল একটি বড় বিস্ফোরণ ঘটানোর। সেনা সূত্রে খবর, সীমান্তের দেড় কিলোমিটারের মধ্যে রাখা হয়েছিল এই হেভি এক্সপ্লোসিভ বিস্ফোরক।

সুরটা বেঁধে দিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। পুলওয়ামা নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকের পর সমস্ত দলের প্রতিনিধিই সেই ঐক্যের বার্তাই দিলেন। সীমান্তের সন্ত্রাস নিয়েও সরব হল সব দল।

পুলওয়ামা কাণ্ড নিয়ে শুক্রবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেই বৈঠকে সর্বসম্মত ভাবে তিন দফা প্রস্তাব গৃহীত হয়। যার সার কথা, এই সময়ে কোনও রাজনৈতিক বিতর্ক নয়। ঐক্যবদ্ধভাবেই দেশকে রক্ষা করতে হবে৷

পুলওয়ামার ঘটনা ঘটেছিল বৃহস্পতিভার বেলা সাড়ে তিনটের সময়। চারটের সময় লখনউয়ে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়ার সাংবাদিক বৈঠক থাকলেও তা বাতিল ঘোষণা করা হয়। শুক্রবার সকালে কংগ্রেস সদর দফতরে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-কে পাশে বসিয়ে রাহুল স্পষ্ট বলে দেন, “এখন রাজনৈতিক বিতর্কের সময় নয়। এই পরিস্থিতিতে আমরা সরকারের পাশে আছি।”

গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠকের পর উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির সভা থেকে নাম না করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, “পড়শি দেশকে এর মূল্য চোকাতেই হবে।” সেই সঙ্গে এ-ও বলেছিলেন, কবে, কখন, কী ভাবে প্রত্যাঘাত, সেটা সেনাবাহিনী ঠিক করুক। পারমিশন দিয়ে দিয়েছি।” এ দিনও সর্বদল বৈঠকে বারবার উঠে এল সেই সীমান্ত সন্ত্রাসের কথাই। সন্ত্রাসবাদকে খতম করতে সব দলই সরকারের পাশে রয়েছে বলে জানিয়েছে। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, “দেশ এবং সেনার নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সরকারের পাশে আছি। কাশ্মীর হোক বা দেশের অন্য কোনও প্রান্ত, সন্ত্রাসবাদকে নিশ্চিহ্ন করতে কংগ্রেস তাদের পূর্ণ সমর্থন দেবে সরকারকে।”

এদিক সকালেই মহারাষ্ট্রের ইয়াবাতমালে গিয়ে ফের একবার হামলাকারীদের বার্তা দেন নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবারের মতই এদিনও বললেন, নিরাপত্তা বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। পুলওয়ামায় ভয়াবহ হামলার পর এই নিয়ে তৃতীয়বার প্রত্যাঘাতের সুর চড়ালেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এই রাজ্যের দুই সন্তান আছে শহিদের তালিকায়। পুলওয়ামার ঘটনার পর প্রত্যেকেই যন্ত্রণাটা অনুভব করতে পারছি। শহিদদের আত্মত্যাগ ব্যর্থ হবে না।’

শুক্রবারও একই কথা বলেন মোদী। একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারতীয় সেনাকে পুরো স্বাধীনতা দেওয়া হল৷ কী কায়দায় জবাব দেওয়া হবে তা ঠিক করবে নিরাপত্তা বাহিনী৷’’

কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া থেকে তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সিপিআই-এর ডি রাজা, সকলেই উপস্থিত ছিলেন এ দিনের সর্বদলীয় বৈঠকে। সেই বৈঠকে ঠিক হয়েছে, সীমান্তে সন্ত্রাস রুখতে এবং দেশের অখণ্ডতা ও ঐক্য রক্ষা করতে, নিরাপত্তাবাহিনীর পাশে দাঁড়ানোটাই এখন আশু কাজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here