দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: পুলওয়ামায় জঙ্গিদের হামলায় সেনা জওয়ানদের মৃত্যুর পর থেকে উত্তপ্ত জম্মু–কাশ্মীর৷ চলছে বিক্ষিপ্ত হিংসা৷ এই অবস্থায় কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের আর কোনওভাবেই নিরাপত্তা দেওয়ার কথা ভাবল না সরকার৷ ফলে হুরিয়ত কনফারেন্সের শীর্ষ নেতাদের নিরাপত্তা বলয় তুলে নেওয়া হচ্ছে৷জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই জম্মু–কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের নেতা মীরওয়াইজ উমর ফারুকের নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে৷ তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের যৌথ সংগঠন অল পার্টি হুরিয়ত কনফারেন্সের অন্যতম নেতা তথা সংগঠনের নরমপন্থী গোষ্ঠীর প্রধান৷ সংবাদসংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী মীরওয়াইজ বরাবরই কাশ্মীরের স্বাধীনতা নিয়ে মন্তব্য করেছেন৷ হুরিয়ত কনফারেন্সের অন্যান্য নেতৃত্বদেরও নিরাপত্তা দ্রুত তুলে নেওয়া হচ্ছে৷ তারা যেসব সরকারি সুযোগ পান সেটাও তুলে নেওয়া হবে৷মোট পাঁচজন

বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের ওপর থেকে এই নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে। মীরওয়াইজ উমর ফারুকের পাশাপাশি বাকি চারজন হল, আবদুল গানি ভাট, বিলাল লোন, হাসিম কুরেশি এবং সাবির শাহ। এমনকী কোনও অবস্থাতেই এই নিরাপত্তা দেওয়া হবে না বলে নির্দেশিকা জারি হয়েছে। ‌‌বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের পুলওয়ামাতে জঙ্গি হামলায় ৪৯ জন সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হন। এই হামলার কারণ হিসেবে কাশ্মীর সমস্যাকে তুলে আনেন হুরিয়ত নেতারা। তাঁরা বলেন, “কাশ্মীরের মানুষ ও নেতারা এই রাজ্যে প্রত্যেকটা হত্যার ঘটনায় অনুশোচনা করছেন। তাঁরাই কাশ্মীর সমস্যা মেটাতে দেরি করছেন। তারই খেসারত দিতে হচ্ছে।” তাঁরা আরও বলেন, “যদি আমরা পুরোপুরি কাশ্মীরে শান্তি ফিরিয়ে আনতে চাই, তাহলে প্রথমেই যেটা করতে হবে, তা হলো সব পক্ষের কথা শোনা। সব পক্ষের কথা শুনে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাশ্মীর সমস্যা মেটানো। তারপরেই এই রাজ্যে শান্তি ফিরে আসবে।”জঙ্গি হামলার পর থেকেই কাশ্মীরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত। জারি করা হয়েছে কারফিউ। বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে দোকানে, গাড়িতে। এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যাবে, তারই ব্লু’প্রিন্ট তৈরিতে ব্যস্ত তাঁরা।শনিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং দিল্লিতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব গৌবা এবং আইবি’র ডিরেক্টর রাজীব জৈনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জম্মু-কাশ্মীরের মাটিতে কোনও পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন যাতে শান্তি বিঘ্নিত করতে না পারে, তার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।শুক্রবার কাশ্মীরের মাটিতে দাঁড়িয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, “জম্মু-কাশ্মীরের কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের সঙ্গে আইএসআই-এর যোগ আছে। এই দলগুলির মাধ্যমেই তারা কাশ্মীরের মাটিতে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা করছে। প্রশাসনের তরফে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের নেতাদের যে সুরক্ষা দেওয়া হয়, তা নিয়ে আরেকবার চিন্তা করা উচিত।”জম্মু-কাশ্মীরের স্বরাষ্ট্র সচিব এই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুঁটিয়ে দেখেন। তাতে দেখা যায়, বেশিরভাগ নেতাদেরই সুরক্ষা দেয় রাজ্য প্রশাসন। মিরওয়াইজ উমর ফারুখ, আবদুল ঘানি ভাট, মৌলানা আব্বাস আনসারির মতো হুরিয়ত নেতারা পুলিশি সুরক্ষাও পেয়ে থাকেন।

ছবি- সংগৃহীত,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here