সম্পাদকীয়ঃ বিদ্রোহ আজ বিদ্রোহ চারদিকে

0
895

এই মূহুর্তে গোটা দেশ জুড়ে যেন বিদ্রোহের আগুন।আবাল বৃদ্ধ বনিতা বিদ্রোহের আগুনে যেন গা সেঁকে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।সেই বিহ্রোহের আঁচ লেগেছে এই বাংলাতেও,প্রধানমন্ত্রীর কলকাতা সফরকে কেন্দ্র করে যে অভূতপূর্ব প্রতিবাদ ধ্বণিত হল গোটা শহর জুড়ে তাতে বলতেই হয় বিদ্রোহী চেতনা যেন বাংলার ঘরে ঘরে আবার ছড়িয়ে পডেছে।নাগরিক সংশোধনী আইন ও সিএএ নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও প্রতিবাদ এক নতুন মাত্রা পেল প্রধানমন্ত্রীর শহরে পা রাখাকে কেন্দ্র করে।শহর জুড়ে প্রতিবাদের পাশাপাশি জেলায় জেলায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল।দাবি একটাই কেন্দ্রীয় সরকার নতুন নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার করে নিক।ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকতা প্রদানের প্রয়াস এদেশের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার রীতির সঙ্গে মানানসই নয়।প্রধানমন্ত্রী অবশ্য তাঁর ভাষণে তাদের যুক্তি হাজির করেছেন যে নতুন নাগরিক আইন কারোর নাগরিকতাকে কেড়ে নেওয়ার জন্য নয় বরং নাগরিকতা দেওয়ার আইন।বলাইবাহুল্য এই যুক্তি প্রতিবাদীরা শুনতে চান নি।প্রতিবাদী ও বিক্ষোভকারীদের যুক্তি কেন ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকতা নির্ধারিত হবে,কেন মানুষের নিপীড়নকে ধর্ম দিয়ে চিনতে হবে?কেন এদেশের আম জনতাকে তাদের নাগরিকতা প্রমাণ করতে হবে এতদিন পর?যাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী বা সাংসদ হলেন বিজেপির নেতারা কোন যুক্তিেতে সেই নির্বাচক জনতাকে তারা নাগরিকতার প্রমাণ দিতে বলেন?বলাই বাহুল্য এ সব প্রশ্নের উত্তর এখনও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় নি।বা বলা যায় দিতে পারেন নি বিজেপির নেতারা।তাই বিদ্রোহের আগুন প্রতিদিনই একটু একটু করে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে দেশের কোণে কোণে।

বিজেপি এই বিদ্রোহকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ভুল বোঝানোর ফল বলে অবিহিত করতে চাইলেও তারা ভেতরে ভেতরে ঠিকই বুঝতে পারছে যে প্রতিবাদে লাগাম তারা পড়াতে পারছে না।বিজেপির রাজনৈতিক শক্তি যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তা বুঝতে পারলেও এখনও মেনে নিতে পারছেন বিজেপির নেতা নেত্রীরা।আমরা বলবো বিজেপির নেতাদের উচিত সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ ও ক্ষোভকে মান্যতা দেওয়া।বিষয়টাকে রাজনৈতিক জয় পরাজয়ের নিরিখে না দেখে মানুষের সঙ্গে কথা বলে বোঝা উচিত তাদের প্রতিবাদের সারবত্তা অনুধাবনের চেষ্টাও করা উচিত।শুুধু বিরোধী দল আন্দোলন করছে না আন্দোলন করছে সাধারণ মানুষ।মানুষ প্রতিবাদ করছে দেশের জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতকে হাতিয়ার করে,এর একটা অন্য মানে আছে অর্থ আছে।সেটা বোঝা বা জানার চেষ্টা না করলে গণতন্ত্রের অসম্মান করা হয়।যে প্রধানমত্রী প্রথমবারের জন্য সংসদে ঢোকার আগে সংসদ ভবনকে হাঁটু মড়ে প্রণাম করেন তিনি গণতন্ত্রের বৃহত্তম অর্থ বুঝবেন সেটাই কাম্য।দেশ জোড়া এই প্রতিবাদের একটা গণতান্ত্রিক মুখ আছে তা মেনে নিয়ে কেন্দ্রের সরকার নতুন করে ভাবুক,মানুষের সঙ্গে কথা বলে আগে এই বিদ্রোহের আগুন নেভানোর চেষ্টা করুন,দেশের পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করুন তারপর না হয় নতুন আইন নিয়ে ভাবা যাবে।নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহরা মনে রাখলে ভাল করবেন যে যদি তাঁরা দেশের মানুষের চাহিদাকে মর্যাদা দিয়ে নতুন আইন প্রত্যাহার করে নেন তাহলেও তাদের কোন পরাজয় হবে না বরং মানুষের চাহিদাকে মর্যাাদা দিয়ে তাঁরা গণতান্ত্রিক উদারতার জয় তিলক কপালে এঁকে নিতে পারবেন।
Previous articleশুরু হলো বনগাঁ লিটল ম্যাগাজিন মেলা
Next articlee paper deshersamay.com

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here