দেশেরসময় ওয়েব ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রীর ডাকে রাত ৯টায় ৯ মিনিট আলোর উৎসব পালন করল দেশ। পালন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। পোস্ট করলেন সেই ছবি। সঙ্গে লিখলেন–

शुभं करोति कल्याणमारोग्यं धनसंपदा।
शत्रुबुद्धिविनाशाय दीपज्योतिर्नमोऽस्तुते॥

প্রদীপের আলোকে প্রণাম জানিয়ে শুভকামনা করলেন প্রধানমন্ত্রী। চাইলেন কল্যাণ।


গত বৃহস্পতিবার সকাল ন’টায় এক ভিডিও-বার্তা পোস্ট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশবাসীকে অনুরোধ করেন নির্দেশ দেন, ৫ এপ্রিল, রবিবার, রাত ন’টায় ৯ মিনিট সময়ের জন্য বাড়ির সমস্ত বৈদ্যুতিক লাইট বন্ধ করে প্রত্যেকে নিজের নিজের ঘরের দুয়ারে বা বারান্দায় একটি করে মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালান। করোনা সঙ্কটের অন্ধকার দূর করার জন্য এই সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেন তিনি। মোদী বলেন, “১৩০ কোটি দেশবাসীর মহাশক্তি জাগরণ করতে হবে।

মহাসঙ্কল্পকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। তাই ৫ এপ্রিল রবিবার রাত ৯টায় আমি আপনাদের সকলের ৯ মিনিট চাইছি। ওই সময়ে আপনারা ঘরের সমস্ত লাইট বন্ধ করে ঘরের দরজা বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে ৯ মিনিট ধরে মোমবাতি, প্রদীপ, টর্চ বা মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালান।”


তাঁর দাবি ছিল, এর ফলে এক অনন্য মহাশক্তির প্রকাশ হবে দেশে। প্রতিটি দেশবাসী একইসঙ্গে লড়াই করার সঙ্কল্প করবেন ওই উজ্জ্বলতায়। তাঁরা মনে করে নেবেন, “হাম আকেলে নেহি হ্যায়, কোইভি আকেলা নেহি হ্যায়।” সেই মতোই আজ যেন পালিত হল অকাল দীপাবলি।
আজ প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে এই কার্যক্রমে অংশ নেয় গোটা দেশই। পালন করেন মোদী মন্ত্রিসভার সদস্যরাও। সেই ছবি পোস্ট করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও।

কথা ছিল আগেই। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, টুইট করে মনেও করিয়ে দিয়েছিলেন। রাত ন’টায় ন’মিনিটের জন্য ঘরের বৈদ্যুতিন আলো নিভিয়ে প্রদীপ-মোমবাতি জ্বালাতে বলেছিলেন তিনি। করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে দেশের যে লড়াই, সেই লড়াইয়ে একতার প্রতীক হিসেবেই এই আলো।

হলও তাই। রবিবার রাত ন’টা বাজতেই বিভিন্ন এলাকায় নেমে এল অন্ধকার, জ্বলে উঠল প্রদীপের আলো। কারও জানলায়, কারও ব্যালকনিতে দেখা গেল অকাল দীপাবলির মেজাজ। দেশবাসী ঐক্যের প্রতীক হিসেবে আলো জ্বালিয়ে উদযাপন করলেন লড়াই।

গত মাসের ২২ তারিখে মোদী জনতা কার্ফু ঘোষণা করেছিলেন। ওই দিনও দেশবাসীকে বলেছিলেন, জরুরি কর্মীদের সম্মান জানাতে ঘরের বারান্দায় বা দরজায় এসে ঘণ্টা, থালা, চামচ দিয়ে শব্দ করতে। সেও ছিল লড়াইয়েরই প্রতীক, সংহতির প্রতীক।

সেদিনও দেশবাসী দেখেছিল, পাঁচটা বাজতেই বেজে উঠেছিল কাঁসর-ঘণ্টা। কিন্তু তার মধ্যেই নানা প্রান্ত থেকে খবর এসেছিল বিশৃঙ্খলার। অনেকেই ঘর থেকে দলবেঁধে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলেন। বিশৃঙ্খলা এদিনও ঘটল। অতি উৎসাহী একদল মানুষ শুধু বাতি জ্বালিয়ে ক্ষান্ত হননি, রীতিমতো বাজি ফাটিয়েছেন। উড়িয়েছেন ফানুসও।

তবে বিশৃঙ্খলা বাদ দিয়ে, সারা দেশের অনেকটা অংশই লড়াইয়ের প্রতীক হিসেবে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে আজ। ছড়িয়ে পড়েছে অকাল দীপাবলির আমেজ।

দু’দিন আগেই জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “১৩০ কোটি দেশবাসীর মহাশক্তি জাগরণ করতে হবে। মহাসঙ্কল্পকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। তাই ৫ এপ্রিল রবিবার রাত ন’টায় আমি আপনাদের সকলের ন’মিনিট চাইছি। ওই সময়ে আপনারা ঘরের সমস্ত লাইট বন্ধ করে ঘরের দরজা বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে ৯ মিনিট ধরে মোমবাতি, প্রদীপ, টর্চ বা মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালান।”


তিনি জানিয়েছিলেন, এর ফলে এক অনন্য মহাশক্তির প্রকাশ হবে দেশে। প্রতিটি দেশবাসী একইসঙ্গে লড়াই করার সঙ্কল্প করবেন ওই উজ্জ্বলতায়। তাঁরা মনে করে নেবেন, “হাম আকেলে নেহি হ্যায়, কোই ভি আকেলা নেহি হ্যায়।” প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, ১৩০ কোটি দেশবাসী করোনা দূর করার একই সঙ্কল্প নিয়ে লড়ছেন।


প্রধানমন্ত্রী এর পরেই বলেন, আরও একটি প্রার্থনা আছে তাঁর দেশবাসীর কাছে। তাঁর অনুরোধ, এই আলো জ্বালানোর আয়োজনের সময়ে কেউ যেন কোথাও একসঙ্গে না হন। রাস্তায়, গলিতে, মহল্লায় জোট না বাঁধেন।প্রত্যেকে যেন নিজের দরজায় বা বারান্দায় করেন এই আলো জ্বালানোর কাজ। সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংকে কোনও ভাবেই ভাঙা যাবে না, কারণ করোনার চেন ব্রেক করার জন্য এটাই একমাত্র উপায়।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, “৫ এপ্রিল রবিবার রাত ৯টায় কিছু সময় একলা বসে আলো জ্বালিয়ে ১৩০ কোটি দেশবাসীর মুখ কল্পনা করুন, শক্তির কথা ভাবুন। আমরা এই সঙ্কটের বিরুদ্ধে লড়ার উদ্যম পাব। আমাদের ভিতরের মনোবলের চেয়ে বড় শক্তি আর কিছু নেই।

সেই সম্মিলিত শক্তিকে হারাতে পারে, এমন কোনও শক্তি নেই পৃথিবীতে। আসুন, সবাই একসঙ্গে ভারতকে জিতিয়ে দিই। করোনাকে হারিয়ে দিই।”
অনেকেই যে এ কথা শুনেছেন, তা আজ রাত ন’টা বাজতেই স্পষ্ট হয়ে গেল।

ছবিগুলিতুলেছেন- দিব্যেন্দু পোদ্দার,দীপ বিশ্বাস,কুন্তল চক্রবর্তী, রতন সিনহা,

পার্থ সারথি নন্দী ৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here