দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে এবার চুঁচুড়া বিধানসভায় প্রার্থী করেছে গেরুয়া শিবির। সোমবার চুঁচুড়ার তৃণমূল প্রার্থী অসিত মজুমদারের সমর্থনে সভা করতে গিয়ে সেই লকেটকে চিটফান্ডের ‘গলার লকেট’ বলে আক্রমণ শানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে বিজেপি প্রার্থীকে নিশানা করতে গিয়ে দিদির মুখে উঠে এল, সিপিএমের স্লোগান।

এদিন মমতা বলেন, “এমপি ইলেকশনে দাড়িয়েছে। জিতেছে। এবার এমএলএ ইলেকশনে দাঁড়িয়েছে। তারপর গ্রাম পঞ্চায়েতে দাঁড়াবে, তারপর স্কুল বোর্ডে দাঁড়াবে, তারপর খেলার মাঠে দাঁড়াবে। আর কোথায় কোথায় দাঁড়াবে এদের একটু জিজ্ঞেস করুন।”


এরপরেই মমতা সারদা ও রোজভ্যালি নিয়ে লকেটকে নিশানা করেন। তৃণমূলনেত্রী বলেন, “আমি তো এদের কীর্তিকলাপ সব জানি। আমাদের দলকে সারদা-নারদা বলে। সারদা-নারদার সবচেয়ে কোলের বাচ্চা হচ্ছে এরা। বাবুল সুপ্রিয় একদিন বলেছিল, সারদা হচ্ছে রোজভ্যালির প্রথম রোজ! আর লকেটকে আমি নতুন করে কী বলব, ও সারদাদের গলার লকেট হয়ে ঘুরে বেড়ায়। সরি রোজভ্যালি! আমি সব জানি। এদের বিরুদ্ধে একটা কেস হয় না।”

এখানেই থামেননি দিদি। এক নাগাড়ে মমতা বলতে থাকেন, “এরা এমপি হবে, এরা এমএলএ হবে, এরা কাউন্সিলর হবে, এরা গ্রাম সভা হবে, এরা ভাত খাবে, এরা মাছ খাবে, এরা মাংস খাবে, এরা দুধভাত খাবে, এরা দই খাবে, এরা বিরিয়ানি খাবে, এরা রুটি খাবে, এরা তরকা খাবে, এরা সব খাবে আর অন্য মানুষ কেউ কিছু খাবে না।” এরপরেই দিদির মুখে উঠে আসে সিপিএমের স্লোগান। তিনি বলেন, “তাই আমি বলি, কেউ খাবে, কেউ খাবে না, তা হবে না, তা হবে না।”


মমতা এও বলেন, “রত্না দে নাগ এত ভাল প্রার্থী ছিল। হেরে গেল। চকমকি দেখিয়ে, ঝকমকি দেখিয়ে, আরও কী কী দেখিয়ে জিতে গেল।” প্রসঙ্গত লোকসভা ভোটে হুগলি কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন রত্না দে নাগ। এবার দিদি তাঁকে পাণ্ডুয়া বিধানসভায় প্রার্থী করেছেন।


মমতার এই খোঁচার জবাবে লকেট বলেন, “উনি মুখ্যমন্ত্রী পদে থেকেও মিথ্যে কথা বলেন। চ্যালেঞ্জ করছি, ক্ষমতা থাকলে দুর্নীতি প্রমাণ করে দেখান”। অন্যদিকে বিজেপি মুখপাত্র বলেছেন, মমতা ভণ্ড। রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ মানস ভুইঞাঁকে বিধানসভায় প্রার্থী করেছেন, আবার দুধ ভাতের কথা বলছেন। তৃণমূলের ‘কোলের বাচ্চারা’ মেয়রও হবে, মন্ত্রীও হবেন, পাড়ার ক্লাবের দাদা হবেন, আবার ময়দানের ক্লাবেও ছরি ঘোরাবেন, তাতে কিছু হয় না।

এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টার্গেট করে লকেট আরও বলেন, ‘যিনি প্রার্থী, তাঁর হয়ে ক্ষমা চাইছেন। অসিত মজুমদার, ডাক নাম তপন। উনি মেনে নিয়েছেন দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতির পর ফের টিকিট দিলেন কেন। তার মানে আবার দুর্নীতি হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় যাওয়ার জন্য বিজেপিকর্মীদের ৫০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে। ৫০০ টাকা দিয়ে ভোট কেনা যাবে না।’

প্রসঙ্গত মমতা এদিন যে কথা বলেছেন, সেই স্লোগান সিপিএম হাজির করেছিল করোনা পর্বে শ্রমজীবী ক্যান্টিনগুলিতে। যাদবপুরের ক্যান্টিন যা গত ৩ এপ্রিল এক বছর পূর্ণ করল, তাদেরও মূল স্লোগান এটাই। এপ্রসঙ্গে সিপিএম নেতা তথা যাদবপুর শ্রমজীবী ক্যান্টিনের অন্যতম সংগঠক সুদীপ সেনগুপ্ত বলেন, “এ আর নতুন কথা কী! উনি এরা আগেও আমাদের গান, কবিতা, স্লোগান চুরি করেছেন। হিটলার, মুসোলিনিও বামপন্থী সাজার জন্য বামেদের স্লোগান চুরি করতেন। মমতাও তাই। ওদেরও যেমন মুখোশ খসে পড়েছিল। এঁরও পড়বে।”


এর আগে মমতা উন্নততর তৃণমূলের ডাক দিয়েছিলেন। সেইসময়ে অনেকে বলেছিলেন, দু’দশক আগে এই স্লোগান দিয়েছিল সিপিএম। বলা হয়েছিল, বামফ্রন্টের বিকল্প উন্নততর বামফ্রন্ট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here