দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ দিল্লিতে হিংসার ঘটনা নিয়ে গতকালই কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির জরুরি বৈঠক ডেকে প্রস্তাব পাশ করান সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। বৃহস্পতিবার দলের প্রতিনিধি দল নিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।

রাইসিনা পাহাড়ে স্মারকলিপি পেশ করে বেরিয়ে এসে সনিয়া বলেন, দুটো কথা স্পষ্ট করে রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছি। দেশের মানুষের নিরাপত্তা যেন সুনিশ্চিত থাকে। কারও যেন জীবনহানি না হয়। আর দুই, দিল্লিতে হিংসার ঘটনা রুখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ পুরোপুরি ব্যর্থ। তাঁকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পদ থেকে অবিলম্বে অপসারণ করা হোক। তাঁর কথায়, রাষ্ট্রপতিকে বলেছি, তিনি যেন সরকারকে বলেন রাজধর্ম পালন করতে।

কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলে এদিন সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম, রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী প্রমুখ।

পরে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীও বলেন, দিল্লিতে গত চারদিন ধরে যা চলছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গোটা দেশের জন্য লজ্জা। ৩৪ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে, দু’শ জনেরও বেশি মানুষ আহত। কেন্দ্রের সরকার যে পুরোপুরি ব্যর্থ, এ ঘটনাতেই তা পরিষ্কার।

দিল্লির হিংসার ঘটনা নিয়ে কংগ্রেসের এই রাজনৈতিক তৎপরতা তাৎপর্যপূর্ণ। আরও তাৎপর্যপূর্ণ সনিয়া গান্ধীর আগ্রাসী ভূমিকাও।

পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, দিল্লিতে হিংসার ঘটনা নিয়ে যেমন বিজেপি তথা কেন্দ্রের সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে, তেমনই অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ভূমিকাও সমালোচনা ঊর্ধ্বে নয়। সদ্য দিল্লিতে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিতেছে আম আদমি পার্টি। প্রশ্ন হল, দিল্লি পুলিশ কেজরিওয়াল সরকারের অধীনে না থাকলেও হিংসার ঘটনার আঁচ পেয়েও কেজরিওয়াল ও তাঁর বাহিনী কেন ঘরে বসে ছিল?
এ ধরনের ঘটনায় সব সময় পুলিশি ব্যবস্থা সফল হয় না, রাজনৈতিক দলগুলিরই উচিত তখন অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে এলাকায় এলাকায় ঘুরে পরিস্থিতি শান্ত করা মানুষকে বোঝানো। কিন্তু তা করেননি কেন কেজরিওয়াল? তা হলে কি দিল্লি পুলিশকে ব্যর্থ প্রমাণ করারই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল তাঁর?
অনেকের মতে, এহেন পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের মতো প্রাক্তন জাতীয় দলের ভূমিকা রয়েছে। কংগ্রেসের নেতারাও মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে সরকার বিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়া সময়ের দাবি। তবে রাহুল গান্ধীকে সামনে রেখে সেই আন্দোলন সম্ভব নয়। তুলনায় অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে দু’জনের মুখ- সনিয়া গান্ধী ও মনমোহন সিংহ। তাতে শুধু ঘরোয়া রাজনীতিতে বিজেপির উপর চাপ তৈরি সম্ভব তা নয়, আন্তর্জাতিক মহলেও বার্তা যাবে মোদী প্রশাসনের বিরুদ্ধে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here